শিশু প্রহরে শিশু-কিশোর আর অভিভাবকদের আনাগোনায় প্রাণচঞ্চল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের শিশু চত্বর। শনিবার শুরু থেকেই শিশুদের বিনোদনের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠে সিসিমপুর। হালুম, ইকরি, শিকু ও টুকটুকির নাটিকায় উৎফুল্ল শিশুরা। কেউ হাত মেলাচ্ছে, কেউ ওদের সঙ্গে ছবি তুলছে।

ছোট ছোট শিশুরা বাবা-মায়ের সঙ্গে বই কিনছে, কিনছে কার্টুনও। ‘চলেছে গাড়ি সিসিমপুরে’ গানে শিশু চত্বরের স্টেজে আপন মনে নাচতে দেখা যায় শিশুদের।

শিশু চত্বরে বিনোদনের পাশাপাশি ছিল হরেক রকমের বই। চত্বরে চিলড্রেন্স পাবলিকেশন, শিশুরাজ্য, শৈশব প্রকাশ, সিসিমপুর, ঘুড়ি প্রকাশন, মাহি প্রকাশনী, ছোটদের মেলা, শিলা প্রকাশনী, বাবুই, ঘাস ফড়িংসহ প্রায় ৩০ টির মতো স্টল রয়েছে; যেখানে শিশুদের বই পাওয়া যাচ্ছে।এগুলোর মধ্যে সিসিমপুর, শৈশব, প্রগতি পাবলিকেশনে বেশি ভিড় দেখা যায়। মেলায় শিশুদের জন্য এবার ১৩টি নতুন বই এনেছে সিসিমপুর। এর মধ্যে ‘কিনবো যা দরকারের’, ‘খোকা মিয়া’ ও ‘গাছপালা’ উল্লেখযোগ্য।

এবার শিশুদের বসে বই পড়ার জন্য চত্বরে আলাদা জায়গা করা হয়েছে। এবারে প্রথম বইমেলায় এসেছে আনোয়ারা বেগম স্কুলের ১ম শ্রেণির শিক্ষার্থী মুনিয়া। মেলা থেকে শিলা প্রকাশনীর ভয়ংকর ভূত, বাবুই প্রকাশনীর কালাই দ্যা গ্রেট, বই কিনেছে সে।মেলা কেমন লাগছে? জানতে চাইলে সে বলে, ‘খুব ভালো লাগছে। অনেক মজার মজার বই পাওয়া যায় এখানে। আমি কয়েকদিন পর আবারও মেলায় আসব।

ব্রিটিশ কলাম্বিয়া স্কুলের নার্সারির শিক্ষার্থী ইসরাত জাহান মুক্তা বলেন, ‘বইমেলায় এসে বর্ণমালার গল্প আর ভূতুরে ট্রেন দুটি বই কিনেছি। ভূতের বই পড়তে আমার খুব ভালো লাগে। আরও কয়েকয়টা বই কিনব।সকাল ১১টা থেকে শুরু হওয়া শিশুদের এ মিলনমেলা চলবে বেলা ১টা পর্যন্ত। শুধু আজ নয়, শিশু প্রহর চলবে মেলা চলাকালীন প্রতি শুক্র ও শনিবার একই সময়ে।১ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া বইমেলা চলবে মাসব্যাপী। শুক্রবার বিকেলে মেলা উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এদিকে, মাসব্যাপী অমর একুশে বইমেলার শুরু হয়েছে গতকাল শুক্রবার। মেলার প্রথম দিনেই দর্শনার্থীদের ভিড় ছিল লক্ষণীয়। তবে লেখক-পাঠকদের উপস্থিতিতে প্রাণবন্ত মেলার শ্রী নষ্ট করেছে ধুলা।

মেলাপ্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা গেছে, মেলায় আগত দর্শনার্থীরা মুখে মাস্ক ও রুমাল বেঁধেও ধুলা থেকে রক্ষা পাচ্ছেন না। মানুষের অতিরিক্ত ভিড়ে মেলাপ্রাঙ্গণে ছিটানো বালু উড়ছে বাতাসে। আগ থেকে পানি না ছিটানোয় এমন হয়েছে বলে মনে করছেন দর্শরার্থী ও প্রকাশনাগুলো।রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী মতিউর রহমান বলেন, মেলার অতিরিক্ত ধুলাবালিতে নিশ্বাস নেয়ায় দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। আয়োজকরা একটু পানি ছিটিয়ে রাখলে এমন হতো না।আজিজুন্নাহার নামে একজন বলেন, মেলায় প্রচুর ধুলা। এমন জানলে আসতাম না। এমন ধুলায় সর্দি-কাশি হতে বাধ্য। আয়োজকরা পরিমাণমতো পানি ছিটালে এ চিত্র থাকবে না। আশাকরি তারা বিষয়টি বিবেচনায় নেবেন।জানতে চাইলে বইমেলার সদস্য সচিব ড. জালাল আহমেদ বলেন, শনিবার (আজ) থেকে সকাল-বিকাল পানি ছিটাবো। আশাকরি দর্শনার্থীদের এমন বিড়ম্বনায় পড়তে হবে না।