ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া উপজেলার মধ্য আন্ধারিয়া পাড়া গ্রামে বাড়ী থেকে ডেকে নিয়ে সেলিম মিয়া (৩৫) নামের যুবককে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় পুলিশ এস আই মোহাম্মদ আলীসহ তার মা ফিরোজে বেগমকে গ্রেফতার করেছে। ময়না তদন্ত শেষে সোমবার সকালে নিহতের লাশ নিজ বাড়ীতে দাফনের পর কয়েকশ বিক্ষুদ্ধ জনতা সেলিম হত্যার বিচার চেয়ে উপজেলা সদরে বিক্ষোভ মিছিল করেছে।

নিহতের স্ত্রী শেফালী খাতুন বাদী হয়ে রবিবার রাতে মোহাম্মদ আলী দারোগা, তার ছেলে রিয়াদ, মা ফিরোজা বেগমসহ ৫ জনের নাম উল্লেখসহ ৪/৫ জন অজ্ঞাতনামা আসামী করে মামলা দায়ের করেছে। মামলা দায়ের করার পর জামালপুর থানায় কর্মরত পুলিশের এস মোহাম্মদ আলীকে রাতেই পুলিশ গ্রেফতার করে। মোহাম¥দ আলীর মা ফিরোজা বেগমকে রবিবার সকালে পুলিশ গ্রেফতার করে। বাকী আসামীরা পলাতক রয়েছে।

রিহতের মা রমিছা খাতুন জানান, আমার ৪ ছেলের মধ্যে নিহত সেলিম ছিল দ্বিতীয়। পরের বাড়ীতে কাজ করে সংসার চালাত। নিহত সেলিমের ঘরে এক ছেলে এক মেয়ে রয়েছে। তিনি বলেন, নিহত সেলিমের সাথে ৩০ বছর পূর্বে গ্রেফতার দারোগা মোহাম্মদ আলীর পিতা আলাউদ্দিন ফকিরের সাথে বিরোধ ছিল। সে বিরোধটি মিমাংসাও হয়েছে। আমরা সে বিরোধের কথা ভুলে গেলেও তারা সে বিরোধের কথা ভুলে নাই। এ কারনের আমার ছেলেকে বাড়ী থেকে ডেকে নিয়ে গরুর খামারে ডেকে নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে মোহাম্মদ আলী দারোগা তার ছেলে রিয়াদসহ ৪/৫ জন।

নিহতের স্ত্রী শেফালী থাতুন খাতুন জানান, শনিবার রাত সাড়ে ১০ টার দিকে মোহাম্মদ আলী দারোগা ও তার ছেলে রিয়াদ তার স্বামী সেলিম মিয়াকে বাড়ী থেকে মোটর সাইকেলে করে নিয়ে যায়। তার স্বামীকে মোহাম্মদ আলী দারোগার গরুর খামারে কুপিয়ে আহত করে। পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রবিবার সকাল ৮ দিকে তার স্বামীর মৃত্যু হয়। তিনি আরও জানান, তার স্বামীর পরের বাড়ীতে শ্রমিক হিসাবে কাজ করে সংসার চালাত। মোহাম্মদ আলী দারোগার পিতার সাথে ৩০ বছর আগে একটি বিরোধ ছিল। সে বিরোধ সে সময় মিমাংসাও হয়েছে। এছাড়া তাদের সাথে আমাদের কোন বিরোধ বিরোধ নাই। আমার স্বামীকে বাড়ী থেকে ডেকে নিয়ে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মোহাম্মদ আলী দারোগাসহ জড়িতদের ফাঁসি চাই।

ফুলবাড়ীয়া থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ কবিরুল ইসলাম জানান, নিহতের স্ত্রী শেফালী খাতুন পুুলিশের এস আইসহ ৫ জনের নামে ও ৪/৫ জনকে অজ্ঞাত আসামী করে রবিবার রাতে থানায় মামলা করার পর পুলিশের এস আই মোহাম্মদ আলী দারোগাকে রাতেই গ্রেফতার করা হয়েছে। এর আগে পুলিশ রবিবার মোহাম্মদ আলীর দারোগার মা ফিরোজা বেগমকে গ্রেফতার করে। বাকী আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশী অভিযান চলছে।

উল্লেখ্য, গত শনিবার রাতে উপজেলার মধ্য আন্ধারিয়া পাড়া গ্রামের জামাল উদ্দিন নন্দীর পুত্র সেলিম মিয়া (৩৫) কে বাড়ী থেকে ডেকে নিয়ে পাশ্ববর্তী মোহাম্মদ আলী দারোগার গরুর খামারে নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে মোহাম্মদ আলী দারোগার পুত্র রিয়াদসহ ৪/৫ জন।