মানুষের ভোগান্তি কমাতে এখন থেকে ১৬টির পরিবর্তে মাত্র চার স্তরেই ভবনের নকশা অনুমোদন দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।

বুধবার দুপুরে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (চউক) কর্মকর্তাদের সঙ্গে সভা শেষে মন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, রাজউক ও চউকসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান থেকে ভবনের নকশা অনুমোদনের যে প্রক্রিয়া, তাতে ১৬টি স্তর অতিক্রম করতে হত। এসব স্তর অতিক্রম করতে গিয়ে সীমাহীন ভোগান্তির অভিযোগ রয়েছে।

আমরা গভীরভাবে পর্যালোচনা করেছি দেখেছি এই ১৬ স্তরের কোনো আবশ্যকতা নেই, শুধুমাত্র সেবাপ্রার্থীদের ভোগান্তি বাড়ানো আর নামকাওয়াস্তে একটি প্দ্ধতির মধ্যে ঢুকিয়ে দেওয়া।তিনি বলেন, ১৬টি স্তরকে কমিয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি চারটি স্তরের প্রয়োজন হবে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে।মন্ত্রী বলেন, নকশা পাসে চারটি অনুমতি লাগবে। এগুলো হল- ভূমি ব্যবহারের ক্ষেত্রে ছাড়পত্র নিতে হবে। ভবনের উচ্চতা বিষয়ে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপপক্ষের যে অনাপত্তিপত্র সেটাকে আমরা সহজ করে দিয়েছি। এটা থাকবে। কিন্তু যে এলাকা বিমান চলাচলের পথ না সে এলাকা নির্ণয় করে এত সহজ করে দেব যাতে রাজউক, চউক ম্যাপ দেখেই প্ল্যান পাস করে দিতে পারবে।বিশেষ বিশেষ স্পর্শকাতর ভবনের পাশে ভবন নির্মাণ করতেও অনুমতি লাগবে, আর ভবন ১০ তলার ঊর্ধ্বে হলে ফায়ার সার্ভিসের অনাপত্তিপত্র লাগবে।

বাদ দেওয়া স্তরগুলো অপ্রয়োজনীয় ছিল বলে মনে করেন মন্ত্রী।উদাহরণ দিয়ে তিনি মন্ত্রী বলেন, “একটা প্ল্যান পাসের ক্ষেত্রে গতানুগতিক ভাবে লেখা ছিল সিটি করপোরেশনের অনুমোদন লাগবে। সিটি করপোরেশন এখানে রিলেটেড না। তার অনুমোদনের কোনো আবশ্যকতা নাই।

আমরা দেখব কতটুকু রাস্তার পাশে ভবনটা হচ্ছে। সেখানে একটি গাড়ি আসার মত অবস্থা আছে কিনা। এটা আমার যেসকল অথরিটি আছে তারা দেখবে।পাশে যদি পর্যাপ্ত জায়গা না থাকে, রাস্তা না থাকে তাহলে আমরা তো তাকে প্ল্যান দিচ্ছি না।

একইভাবে গ্যাস, বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানি, পুলিশ, ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ, ওয়াসা, পানি উন্নয়ন বোর্ড, বিআইডব্লিউটিএরও অনুমোদনের প্রয়োজন নেই বলে জানান তিনি।বিআইডব্লিউটিএ হল- বাংলাদেশ ইনল্যান্ড ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট অথরিটি। আমি তো নদীর ভেতরে বিল্ডিং উঠাব না। তার অনাপত্তিপত্র কেন লাগবে? বলেন পূর্তমন্ত্রী।তিনি আরও বলেন, আগে প্ল্যান পাস করতে ১৫০ দিন লাগত, এখন কমিয়ে ৫৩ দিন করা হয়েছে। এতে খরচ কমে যাচ্ছে।নকশা অনুমোদনে অটোমেশন পদ্ধতি কার্যকর করার কথাও বলেন মন্ত্রী।অটোমেশন পদ্ধতি চালু করার পর স্বশরীরে রাজউক বা চউকে আসার দরকার হবে না। তিনি (সেবাপ্রার্থী) অনলাইনে রেসপন্স পাবেন। আমাদের দপ্তর থেকে ক্ষুদেবার্তা চলে যাবে যে, আপনার প্ল্যান অনুমোদিত হয়েছে নাকি হয়নি।

ইমারত নির্মাণের সময় দুর্ঘটনায় শ্রমিকদের প্রাণহানি এড়াতে বীমা সেবা বাধ্যতামূলক করার কথাও বলেন রেজাউল করিম।ওয়ানস্টপ সার্ভিসের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ৩০ এপ্রিলের মধ্যে সব জোনে শতভাগ অনলাইন কার্যকর হবে।