আজ (মঙ্গলবার) আখেরী মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে মুসলিম বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম জমায়েত ৫৪তম বিশ্ব এজতেমার দ্বিতীয় পর্ব। সকাল ১০টার দিকে তাবলীগ জামাতের মাওলানা সা’দ অনুসারীদের শীর্ষস্থানীয় মুরুব্বীদের পরামর্শের ভিত্তিতে দিল্লীর মাওলানা শামীম সাহেব বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ এ আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করবেন।। মোনাজাতে বাংলাদেশসহ সারা দুনিয়ার মানুষের সুখ, শান্তি ও কল্যাণ কামনা করে দোয়া করা হবে। আখেরী মোনাজাতে কয়েক লাখ ধর্মপ্রাণ মুসল্লি¬ অংশ নিবেন বলে আয়োজকদের ধারণা।

এদিকে মাওলানা সা’দ পন্থী মুরুব্বীরা সোমবার টঙ্গীর এজতেমা ময়দানে এক প্রেস বিফিংএ দাবী করেছেন, আদর্শ ভিন্ন থাকলে এক সঙ্গে বিশ^ এজতেমা করা সম্ভব নয়। অপরদিকে ধর্মপ্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আগামিতে ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধভাবে টঙ্গীতে বিশ^ এজতেমা কামনা করেন।

টঙ্গীর এজতেমা ময়দানের বিদেশী কামরায় অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে মাওলানা সা’দ অনুসারী বাংলাদেশে তাবলীগের জিম্মাদার মাওলানা আশরাফ আলী জানিয়েছেন, এবারের এজতেমা আদর্শগত ভিন্নতার কারণে ভিন্নভাবে এজতেমা অনুষ্ঠিত হয়েছে। যার কারণে এ এজতেমায় শ্রোতাও ভিন্ন, বক্তাও ভিন্ন, দোয়াও ভিন্ন আর আদর্শও ভিন্ন। ফলে এটাকে সব দিক থেকে এক এজতেমা বলার উপায় নেই। কিন্তু আবার একদিক থেকে একও বলা যায়। কারণ আলাদা হলেও দুটি এজতেমা একই প্যান্ডেলে হচ্ছে। এবারের এজতেমা আয়োজনে স্বরাস্ট্র ও ধর্মমন্ত্রীর আন্তরিক প্রচেষ্টা ছিল।

তিনি জানান, মাওলানা সা’দ সাহেবের প্রতিনিধি হিসেবে ৩২ জনের একটি জামাত নিজামুদ্দিন দিল্লি থেকে টঙ্গীর বিশ্ব এজতেমায় এসেছেন। তাদের যিনি জিম্মাদার হয়ে এসেছেন মাওলানা শামীম সাহেব তিনিই আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করবেন।

মাওলানা আশরাফ আলী জানান, দাওয়াতে তাবলীগের মেহনত এক সুপরিচিত মেহনত। এটি সুপরিচিত হতে দীর্ঘ দিনের ত্যাগ তিতিক্ষা, পরিশ্রম, কোরবানি রয়েছে। এর উৎস হচ্ছে দিল্লীর নিজামুদ্দিন থেকে। মাওলানা ইলিয়াস (রাঃ) থেকে এ কাজের শুরু। আজ মাওলানা সা’দ হচ্ছেন এর জিম্মাদার। প্রায় ৬০ বছর ধরে ওনাদের মাধ্যমে এজতেমা পরিচালিত হচ্ছে।

এসময় সংবাদ সম্মেলনে মাওলানা রেজা আরিফ, মাওলানা আব্দুল্লাহ শাকিল ও সাজিদুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।

তিনি জানান, দেশ বিদেশের সর্বোচ্চ পর্যায়ের মুরুব্বিরা এজতেমার দুটি পক্ষকে একত্র করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। আর যদি এটি সম্ভব না হয় তবে যার যার অবস্থান থেকে ইজতেমা করবে। এতে কোন পক্ষ যেন কোন পক্ষকে বাধা না দেন।

মাওলনা আশরাফ আলী জানান, যতক্ষণ পর্যন্ত আদর্শগত পার্থক্য থাকবে ততক্ষণ পর্যন্ত এক সঙ্গে এজতমা করা সম্ভব নয়। আদর্শ ভিন্ন রেখে একসঙ্গে এজতেমা করতে যাওয়া মানেই সংঘাতকে ডেকে আনা। তারা যদি ভুল বুঝতে পারে যে তাদের এ ধরণের সংঘাতে যাওয়া ক্ষতি হচ্ছে, মুসলমানের ক্ষতি হচ্ছে তাহলে আগে যেমন মাওলানা সা’দ সাহেবের নিজাম উদ্দিনের পরিচালনায় একসঙ্গে এজতেমা হতো এরপরেও সে ভাবে হবে।

আগামি বছর এজতেমা কখন হবে তার তারিখ নির্ধারণ করবেন এজতেমার তাদের পক্ষের আমির মাওলানা সা’দ। মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে আখেরি মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন এজতেমার শীর্ষ মুরুব্বি মাওলনা আশরাফ আলী।

আগামীতে ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধভাবে টঙ্গীতে বিশ^ এজতেমা কামনা করি
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ বলেছেন, আগামীতে যাতে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে পরষ্পরে ভেদাভেদ ভুলে যেয়ে টঙ্গীর এজতেমা ময়দানে পূর্বের মত যেভাবে অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে এজতেমাটা করতাম সেভাবে করতে পারি আমরা সেই কামনা করি।

মন্ত্রী আরো বলেন, এজন্য আমরা সরকারের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধার সঙ্গে অঙ্গীকারবদ্ধ হতে চাই বা হচ্ছি। এবার এজতেমায় আমরা যা করতে পারিনি, আগামীতে আল্লাহ যাতে সেটুকুসহ আমাদের আরো সফলতা দান করেন।

সা’দ পন্থীদের আয়োজনে বিশ^ এজতেমার দ্বিতীয় দিন সোমবার দুপুরে পুলিশ কন্ট্রোলরুমে এক ব্রিফিংকালে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ওইসব কথা বলেন। এসময় গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার ওয়াই এম বেলালুর রহমান, উপ-কমিশনার (ট্রাফিক) কেএম আরিফুর রহমান প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন। পরে তিনি মুরুব্বী ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের কাছে বিশ^ইজতেমার নানা বিষয় সম্পর্কে খোঁজখবর নেন।

এদিকে রবিবার সকালে বৃষ্টির কারণে টঙ্গীর বিশ্ব এজতেমায় আসা মুসল্লীরা ভোগান্তি পোহালেও সোমবার আবহাওয়া ভাল থাকায় তাদের সে সমস্যায় পড়তে হয়নি। রবিবারের বৈরী আবহাওয়াকে ধর্মপ্রাণ মুসল্লীরা ‘আল্লাহর রহমত’ বলে মনে করছেন। সোমবার তুরাগ তীরে সোনাবান বিবির শিল্প শহর টঙ্গীর এজতেমা মাঠে মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে চলে পবিত্র কোরআন-হাদিসের আলোকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বয়ান। মুসল্লীরা দিনভর ঈমান, আখলাক ও দ্বীনের এসব বয়ান শুনেন। আজ (মঙ্গলবার) সকাল ১০টার দিকে আখেরী মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে বলে এজতেমা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। এ আখেরী মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এবারের ৫৪তম বিশ্ব এজতেমা। এর আগে হেদায়েতি বয়ান করা হবে।

দ্বিতীয় দিনের বয়ান ॥
বিশ^ এজতেমার আয়োজক কমিটির সদস্য আব্দুল্লাহ শাকিল জানান, দু’দিন ধরে সার্বক্ষণিক ইবাদত-বন্দেগিতে নিয়োজিত রয়েছেন মুসল্লিরা। প্রতিদিন ফজর থেকে এশা পর্যন্ত ঈমান, আমল, আখলাক ও দ্বীনের পথে মেহনতের ওপর আমবয়ান অনুষ্ঠিত হয়। সোমবার বাদ ফজর বয়ান করেন দিল্লির নিজামুদ্দিনের মাওলানা মুরছলিন। বাদ জোহর দিল্লির মাওলানা শেহজাদ, বাদ আসর মাওলানা শওকত বয়ান করেন। শেষদিনে আখেরি মোনাজাতের পূর্বে হেদায়েতি বয়ান করবেন দিল্লির মাওলানা মোহাম্মদ শামীম। হেদায়তী বয়ানের পর আখেরি মোনাজাতও পরিচালনা করবেন দিল্লীর মাওলানা শামীম।

তিনি আরো বলেন, এজতেমা ময়দানে ভিন্ন ভিন্ন স্থানে অবস্থান নিয়ে সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় কলেজ/বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের উদ্দেশ্যে বয়ান করেন বাংলাদেশের হাফেজ ইকবাল ও এলাহাবাদের শাহেদ। এছাড়া খাওয়াছদের (ভিআইপি) জন্য বয়ান করেন নিজামুদ্দিন মারকাজের মুফতি সাজিদ। বধিরদের উদ্দেশ্যে বয়ান করেন নিজামুদ্দিন মুরব্বি মাওলানা ওমর মেওয়াতি। আরবি খিত্তায় বয়ান করেন বাংলাদেশের মাওলানা আব্দুল্লাহ মুনসুর এবং ইংরেজি খিত্তায় বয়ান করেন নিজামুদ্দিন মুরব্বি অধ্যাপক লিয়াকত।

আখেরী মোনাজাত মঙ্গলবার সকাল ১০টায়
মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে আখেরি মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে। দিল্লীর মাওলানা মোহাম্মদ শামীম আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করবেন। এরআগে হেদায়তী বয়নটি করবেন তিনি। রেওয়াজ অনুযায়ী হেদায়তি বয়নটি শেষ হলেই শুরু হয় আখেরি মোনাজাত। মঙ্গলবার সকালে এ মোনাজাতের মধ্য দিয়েই এবারের বিশ^এজতেমা শেষ হবে।

এব্যাপারে গাজীপুরের জেলা প্রশাসক ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর জানান, দূর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া ও এজতেমার মাঠ গোছানোর সময়ের স্বল্পতার কারণে দ্বিতীয় পর্যায়ের এজতেমার সময় একদিন বাড়ানোর আবেদন জানান এ পর্বের এজতেমার মুরুব্বীগণ। এরপ্রেক্ষিতে ধর্ম মন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও এজতেমার মুরুব্বীদের সঙ্গে আলোচনা করে আখেরী মোনাজাতের সময় একদিন পেছানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ফলে এ পর্যায়ের আখেরী মোনাজাত পূর্ব নির্ধারিত সোমবারের পরিবর্তে একদিন পিছিয়ে মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে অনুষ্ঠিত হবে। আখেরী মোনাজাতের সময় পিছিয়ে যাওয়ায় এজতেমাকে ঘিরে নিরাপত্তাসহ সকল ব্যবস্থা একদিন বাড়ানো হয়েছে। এজন্য ব্যাপক প্রস্তুতিও নেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।

এক মুসল্লির মৃত্যু ॥
বিশ^ এজতেমার মাসলেহাল জামাতের সদস্য মো. সাইদুর রহমান জানান, টঙ্গীর তুরাগ তীরে শুরু হওয়া সাদ পন্থীদের বিশ^ এজতেমায় রবিবার মধ্যরাতে এক মুসুল্লীর মৃত্যু হয়েছে। তার নাম ইসমাইল হোসেনের (৭০)। তার বাড়ি বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলার তালুরা এলাকায়। বাদ ফজর এজতেমা ময়দানে তার জানাযা নামাজ অনুষ্ঠিত হয় এবং তার লাশ গ্রামের বাড়ি পাঠানো হয়।

এজতেমায় বিদেশী মুসল্লির সংখ্যা হ্রাস
এবারের বিশ^ এজতেমার বিদেশী মেহমানদের যোগাযোগ কর্মকর্তা মো. রেজা আরিফ জানান, বিশ^ এজতেমার আমির সাদ কান্ধলভী টঙ্গীর এজতেমায় যোগ না দেয়ায় বিদেশী মুসুল্লীর সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। এছাড়াও স্বল্প সময়ে ভিসার ব্যবস্থা করতে না পারার কারণেও বিদেশী অনেক মুসুল্লী এজতেমায় যোগ দিতে পারেননি। তারপরও এজতেমার দ্বিতীয় পর্বের দ্বিতীয় দিন পর্যন্ত জর্ডান, লিবিয়া, আফ্রিকা, লেবানন, আফগানিস্তান, ফিলিস্তিন, যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্ক, ইরাক, সৌদি আরব, ভারত, পাকিস্তান, ইংল্যান্ডসহ বিশ্বের প্রায় ৩০টি দেশ থেকে ৩৩৪জন মুসল্লি এজতেমার এ পর্বে যোগ দেন। আগের পর্বেও বিদেশী মুসল্লীদের সংখ্যা ৫শতাধিক ছাড়াতে পারেনি। অথচ দুইবছর আগে যখন বিশ^ এজতেমার আমির সাদ কান্ধলবী টঙ্গীর ইজতেমায় যোগ দিতে তখন বিদেশী মুসুল্লীদের সংখ্যা ছিল ১৫/১৬হাজার।

এজতেমার মালামাল পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের হেফাজতে থাকবে ॥
গাজীপুরের জেলা প্রশাসক ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর জানান, এজতেমা শেষে এর মালামাল গুলো পুলিশ ও প্রশাসনের হেফাজতে থাকবে। পরে দুই পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে এজতেমার মালামাল সমূহ এজতেমা কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দেয়া হবে।

পুলিশের ব্রিফিং
গাজীপুরের টঙ্গীতে সা’দ অনুসারী মুসুল্লীদের বিশ্ব এজতেমার আখেরি মোনাজাত মঙ্গলবার সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত হবে। আখেরি মোনাজাতে শরিক হতে এজতেমাস্থলে মুসল্লীদের যাতায়তের জন্য যানবাহন চলাচলে বিশেষ ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

সোমবার দুপুরে বিশ্ব এজতেমা ময়দানসংলগ্ন শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার স্টেডিয়ামে স্থাপিত পুলিশ কন্ট্রোল রুমের সামনে এক বিফ্রিংয়ে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার ওয়াই এম বেলালুর রহমান বলেন, ‘ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে এজতেমার কার্যক্রম চলছে। প্রত্যেকটি মানুষের ভেতর নিরাপত্তা বোধ জাগ্রত আছে। সা’দ পন্থীদের এজতেমা শুরুর দিন সকালে বৃষ্টি হয়েছিল। প্রতিক’ল আবহাওয়ার কারণে সরকার এজতেমা এক দিন পিছিয়েছে। মঙ্গলবার সকালে তাদের আখেরি মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে। এ মোনাজাতের জন্য নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থা আগের আখেরি মোনাজাতের মতোই নেওয়া হয়েছে।’ সোমবার দিবাগত মধ্যরাত হতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের জয়দেবপুর চান্দনা চৌরাস্তার ভোগড়া বাইপাস মোড়, টঙ্গী ব্রিজ, আশুলিয়া সড়কের কামারপাড়া ব্রিজ ও টঙ্গী-নরসিংদী সড়কের মীরেরবাজার এলাকায় ব্যারিকেড দিয়ে সব ধরনের যানবাহন টঙ্গীতে প্রবেশ বন্ধ থাকবে। এজতেমা শেষে মুসুল্লীদের যাওয়ার সময়ও একই ব্যবস্থাপনা অব্যাহত থাকবে।

উল্লেখ্য, সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে নজীর বিহীন নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে গত শুক্রবার হতে টঙ্গীতে টানা চারদিন ব্যাপী তাবলীগ জামাতের ৫৪তম বিশ্ব এজতেমা শান্তিপূর্ণভাবে শুরু হয়। ওই চারদিনের মধ্যে মাওলানা জোবায়ের ও মাওলানা সাদ অনুসারীদের পৃথক ব্যবস্থাপনায় দু’দিন করে আয়োজিত এবারের বিশ্বএজতেমা অনুষ্ঠাণের কথা ছিল। দু’পক্ষের ব্যবস্থাপনায় এবারের এজতেমায় দু’টি আখেরী মোনাজাত অনুষ্ঠিত হচ্ছে। মাওলানা জোবায়ের অনুসারীদের প্রথম পর্যায়ের এজতেমা নির্ধারিত সময় শনিবার শেষ হয়। রবিবার মাওলানা সাদ অনুসারীদের দ্বিতীয় পর্যায়ের এজতেমা হয়। কিন্তু এজতেমা কার্যক্রম শুরু হওয়ার কিছু সময়ের মধ্যেই ঝড়ো বাতাস ও বৃষ্টি শুরু হলে বিঘœ ঘটে। ফলে বৈরী আবহাওয়া ও প্রথম পর্যায়ের পর স্বল্প সময়ে দ্বিতীয় পর্যায় শুরুর প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে না পারায় এ পর্যায়ে একদিন সময় বাড়ানোর আবেদন জানান মাওলানা সা’দ অনুসারী মুরুব্বীরা। এরপ্রেক্ষিতে ধর্ম ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে দ্বিতীয় পর্যায়ের আখেরী মোনাজাত পূর্ব নির্ধারিত সোমবারের পরিবর্তে একদিন পিছিয়ে মঙ্গলবার সকাল ১০টায় অনুষ্ঠাণের জন্য নির্ধারণ করা হয়। পূনঃনির্ধারিত সময় অনুযায়ী আজ (মঙ্গলবার) এবারের দ্বিতীয় পর্যায়ের আখেরী মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে। এ আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে এবারের ৫৪ বিশ্ব ইজতেমার সকল কার্যক্রম শেষ হবে বলে জানিয়েছেন গাজীপুরের জেলা প্রশাসক ড দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর।

এজতেমার মুরুব্বীদের দেয়া তথ্যমতে, ১৯৪৬সালে প্রথম কাকরাইল মসজিদে এজতেমার আয়োজন শুরু করা হয়। তারপর ১৯৪৮সালে চট্টগ্রামের হাজী ক্যাম্পে ও ১৯৫৮সালে নারায়নগঞ্জের সিদ্ধরগঞ্জে এজতেমা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর লোকসংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় ১৯৬৬সালে গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে বর্তমানস্থলে স্থানান্তর করা হয়েছে। পরে সরকারিভাবে তুরাগ তীরের ১৬০একর জমি স্থায়ীভাবে এজতেমার জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়।