ব্লগার ও মুক্তমনা লেখক অভিজিৎ রায় হত্যার ঘটনার চার বছর পর ছয়জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র চূড়ান্ত করেছে কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট। আসামির তালিকায় আছে ‘উগ্রপন্থী ব্লগার’ শফিউর রহমান ফারাবী এবং সেনাবাহিনী থেকে চাকরিচ্যুত পলাতক মেজর জিয়া।

সোমবার সকালে কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, অভিযোগপত্রটি অনুমোদনের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদনের পরই তা আদালতে দাখিল করা হবে।

২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি রাত সোয়া ৯টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় অভিজিৎকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এ সময় অভিজিতের স্ত্রী বন্যাও গুরুতর আহত হন। এ ঘটনায় অভিজিতের বাবা অধ্যাপক অজয় রায় বাদী হয়ে ২০১৫ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি শাহবাগ থানায় মামলা দায়ের করেন।

মনিরুল ইসলাম বলেন, কাউন্টার টেররিজম ইউনিট তদন্ত পাওয়ার পর ১১ জনকে চিহ্নিত করে। এর বাইরে র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার ছিলেন শফিউর রহমান ফারাবী। তিনি অভিজিৎ রায়কে হত্যার প্ররোচনা দিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দিয়েছিলেন। এ কারণে এই মামলায় তাঁকে প্ররোচনাকারী হিসেবে দেখানো হয়েছে।

শফিউর ছাড়াও ১১ জন এই হত্যার ঘটনায় জড়িত। এর মধ্যে সবার নাম-ঠিকানা পাওয়া যায়নি। ছয়জনের নাম-ঠিকানা পাওয়া গেছে। এই ছয়জনের বিরুদ্ধে আমরা অভিযোগপত্র দিচ্ছি।

কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান আরো বলেন, এই হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার মোজাম্মেল হোসেন সায়মন, আরাফাত রহমান শামস এবং আবু সিদ্দিক শামস তিনজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তাঁরা তাঁদের নিজেদের দায়িত্ব এবং অন্য কারা কারা এ ঘটনায় জড়িত ছিলেন, কীভাবে ঘটনাটি সংঘটিত হয়েছে, কেন সংঘটিত হয়েছে, অর্থাৎ মোটিভ সবকিছুই তাঁরা তাঁদের জবানবন্দিতে বর্ণনা করেছেন।

জবানবন্দি, প্রাপ্ত তথ্যের বিশ্লেষণ পাশাপাশি বিশ্বস্ত গুপ্তচরের তথ্য মিলিয়ে আমরা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি যে, এই ঘটনাটির মূল মাস্টারমাইন্ড হচ্ছেন সেনাবাহিনী থেকে চাকরিচ্যুত, পলাতক মেজর জিয়া। তাঁর নেতৃত্বে মোট ১১ জন ঘটনাটি সংগঠিত করেছেন,’ যোগ করেন মনিরুল।

এদিকে গতকাল রোববারই ঢাকার মহানগর হাকিম সরাফুজ্জামান আনসারীর আদালত অভিজিৎ রায় হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ২৫ মার্চ দিন রেখেছেন।মার্কিন নাগরিক অভিজিতের হত্যাকান্ডের তদন্তে পুলিশকে সহায়তা করতে ঢাকায় আসে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা (এফবিআই)। এ হত্যাকান্ডে জড়িত সন্দেহে আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা সবাই আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সদস্য বলে দাবি করে পুলিশ।