বাংলাদেশ থেকে ফেসবুক ও ইউটিউবে দেয়া সকল বিজ্ঞাপন থেকে ১৫ শতাংশ ভ্যাট নেয়ার নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সোমবার (৪ মার্চ) বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে এই নির্দেশনা দেয়া হয়।

চিঠিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে থেকে ফেসবুক ও ইউটিউবের মতো ইন্টারনেট যোগাযোগ মাধ্যমে বিজ্ঞাপন বাবদ যে অর্থ পরিশোধ করা হয় সেখান থেকে ১৫ শতাংশ ভ্যাট কেটে রেখে সরকারি কোষাগারে জমা দিতে ব্যাংকগুলোকে বলা হয়েছে।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোঃ সিরাজুল ইসলাম বলেন, এর আগে বাংলাদেশ থেকে যে সব প্রতিষ্ঠান বাইরে বিজ্ঞাপন দিত অথবা ইন্টারনেটেরে মাধ্যমে ফেসবুক, ইউটিউবে দেয়া বিজ্ঞাপন থেকে কোনো প্রকার ভ্যাট নেয়া হত না। সম্প্রতি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে বাংলাদেশ ব্যাংককে ভ্যাট আদায় করার নির্দেশনা সংক্রান্ত একটি চিঠি দেয়। ওই চিঠির আলোকে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সকল ব্যাংকগুলোকে ১৫ শতাংশ ভ্যাট কাটার বিষয়ে নির্দেশনা দেয়া হযেছে।

তিনি বলেন, ব্যাংকের মাধ্যমেই ফেসবুক ও ইউটিউবের মতো ইন্টারনেট যোগাযোগ মাধ্যমে বিজ্ঞাপনদাতারা অর্থ পরিশোধ করে থাকেন। তাই, আমরা এনবিআরের নির্দেশনাটি হুবহু ব্যাংকগুলোকে পাঠিয়ে দিয়ছি। এতে বলা হয়েছে, এখন দেশের বাইরে থেকে যারা ইন্টারনেটের মাধ্যমে সেবা নেবেন তাদের কাছ থেকে ১৫ শতাংশ ভ্যাট কেটে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দিতে।

সূত্র জানায়, বাংলাদেশের বাইরে ভার্চুয়াল জগতে বিজ্ঞাপন থেকে এতোদিন সরকার কোনো শুল্ক আদায় করতে পারতো না। সম্প্রতি হাইকোর্ট এ বিষয়ে একটি আদেশ দেয়। আদেশে বলা হয়, গুগল, ফেইসবুক ইউটিউবের মতো ওয়েবসাইটে বাংলাদেশ থেকে দেয়া সকল বিজ্ঞাপন থেকে রাজস্ব আদায়ের নির্দেশনা দেয়া হয়। এই নির্দেশনার প্রেক্ষিতে গত ২২ জানুয়ারি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বাংলাদেশ ব্যাংক কে চিঠি দেয়া হয়। ওই চিঠির আলোকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সোমবার সব তফসিলি ব্যাংকগুলোকে ভ্যাট কেটে রাখার নির্দেশনা দেয়।

উল্লেখ্য, ইন্টারনেটের মাধ্যমে দেয়া বিজ্ঞাপনের বিল বিজ্ঞাপনদাতারা ব্যাংকের মাধ্যমেই পরিশোধ করে থাকে। ফলে এখন থেকে বিলগুলো থেকে ১৫ শতাংশ ভ্যাট কেটে রেখে সরকারী কোষাগারে জমা দিবে ব্যাংকগুলো।

সূত্র জানায়, গত ২২ জানুয়ারি এনবিআর থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনরের কাছে দেয়া চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশের ভৌগলিক সীমার বাহির হতে সেবা সরবরাহের ক্ষেত্রে সেবা গ্রহনকারীণ নিকট থেকে মূসক আদায় নিশ্চিতকরণ এতে আরো বলা হয়, মূল্য সংযোজন কর আইন ১৯৯১ এর ধারা ৩ এর উপধারা (৩)এর (ঘ) অনুযাযী বাংলাদেশের ভৌগলিক সীমার বাইরে থেকে সেবা (যেমন- রয়্যালটি, বিভিন্ন ইন্টারনেট সার্ভিস, ফেইসবুক, ইউটিউব ও এ সকল মাধ্যমে বিজ্ঞাপন প্রচার ইত্যাদি) সরবরাহের ক্ষেত্রে সেবা গ্রহণকারীর কাছ থেকে ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট (মুসক) আদায়যোগ্য। এসব সেবার বিপরীতে পণ্যমূল্য বাংলাদেশ ব্যাংক ও অন্যান্য ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশে পাঠানো হয়। কিন্তু কোন ব্যাংক এ খাত থেকে মুসক আদায় করছে না। এই অবস্থায় মাস্টার কার্ড, ভিসা কার্ড, টিটি অথবা অন্য যে কোনো মাধ্যমে বিল পরিশোধ করা হোক না কেনো, সেখান থেকে ১৫ শতাংশ ভ্যাট কেটে রেখে সরকারি ট্রেজারিতে জমা দেয়া জরুরী। চিঠিতে আরো বলা হয়, সকল ব্যাংককে এ খাত থেকে রাজস্ব আদায় নিশ্চিত করতে প্রযোজনীয় নির্দেশনা প্রদানের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনরকে অনুরোধ করা হয়।