মানবাধিকার কমিশনের ভূমিকায় ক্ষোভ জানিয়েছেন হাইকোর্ট। বলেছেন, মানবাধিকার লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে আইনে অর্পিত দায়িত্ব পালন করছে না রাষ্ট্রীয় এই সংস্থাটি। আমরা আরো মর্মাহত যে মানবাধিকার কমিশনের আদেশ একের পর এক উপেক্ষা করা হলেও উচ্চ আদালতে প্রতিকারের জন্য কমিশন একবারও আসেনি।

মিরপুরের গৃহকর্মী খাদিজাকে নির্যাতনের ঘটনায় দায়ের করা একটি রিটের শুনানিতে বুধবার (৬ মার্চ) বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।

আদালত বলেছেন, যেখানে মানবাধিকার লংঘন হচ্ছে, সেখানে মানবাধিকার কমিশন শুধু একের এক রিপোর্টই দিয়ে যায়, এটা মানবাধিকার কমিশনের কাজ নয়। কমিশনের আদেশ প্রতিপালন না করলে তাদের পক্ষ থেকে হাইকোর্টে আসতে পারে। কিন্তু তারা আজ পর্যন্ত হাইকোর্টে আসেনি। এটা আইনের মারাত্মক লঙ্ঘন। আমরা অত্যন্ত ব্যথিত যে, মানবাধিকার কমিশন তার দায়িত্ব পালন করছে না।

আদালত পর্যবেক্ষণ দিয়ে বলেছেন, খাদিজাকে অত্যাচার ও নির্যাতনের বিষয়ে যে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। ওই অভিযোগটি নিষ্পত্তির বিষয়ে মানবাধিকার কমিশন দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছে। তা আইন সম্মত নয়। চার সপ্তাহের রুল জারি হলেও রুল প্রস্তুত হওয়ার পরেও মানবাধিকার কমিশন এটি শুনানির জন্য আইনজীবী নিয়োগ করেনি। শুনানিরও উদ্যোগ নেয়নি। এটা দু:খজনক।

বুধবার মানবাধিকার সংগঠন চিলড্রেন চ্যারিটি অব বাংলাদেশের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার আব্দুল হালিম, তাকে সহযোগিতা করেন অ্যাডভোকেট জামিউল হক ফয়সাল। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোখলেছুর রহমান।

পরে ব্যারিস্টার আব্দুল হালিম জানান, গত ১০ জানুয়ারি মানবাধিকার লংঘনের ঘটনায় যথাযথ প্রতিকার দিতে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের ব্যর্থতা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না-তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ২০১৩ সালে রাজধানীর মিরপুরে গৃহকর্মী খাদিজাকে নির্যাতনের ঘটনায় কেন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি সে ব্যাপারে আগামী এক মাসের মধ্যে একটি প্রতিবেদন দাখিল করতে স্বরাষ্ট্র সচিবের প্রতি নির্দেশ দেন আদালত। ওই রুলের শুনানি শুরু করতে প্রস্তুতি না নেওয়ায় আদালত ক্ষোভ প্রকাশ করেন। পরে আগামী ১৮ এপ্রিল শুনানির জন্য দিন ঠিক করে দেন।