এক গোছা তামাক। বিনিময়ে একটি আইসক্রীম। এরই লোভে শিশুরা তামাক দিয়ে আইসক্রীম ক্রয় করছে। চিকিৎসকের মতে লালমনিরহাট জেলায় কয়েক হাজার শিশু তামাকের নিকোটিনে অসুস্থ্য হয়ে পড়ছে । বাড়িতে, সড়কে, হাটে-মাঠে, ঘাটে, নদীর তীরে, আবাদী জমিতে, এমনকি বিদ্যালয় মাঠে অর্থাৎ সর্বত্রই তামাক। উত্তরের জেলা লালনিরহটে নিয়ন্ত্রনহীন ভাবে চলছে তামাকের চাষ। এখন বিষাক্ত তামাক শুকানোর মৌসুম। শুকানো হচ্ছে খোলামেলা পরিবেশে। তামাক শুকাতে চলছে গ্রামীন সড়কগুলো দখলের মহোৎসব। গ্রামীন পাকা-কাঁচা সড়ক গুলোতে তামাক পাতা শুকানোর ফলে দুষিত হচ্ছে এলাকার পরিবেশ।

জেলার আদিতমারী উপজেলার দূর্গাপুর ইউনিয়নের সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, মরহুম আনছার আলী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠ দখল করে তামাক শুকানো হচ্ছে। বিদ্যালয় মাঠ জুড়ে তামাক শুকানোর কারনে মাঠে ছোটাছুটি করতে পারছে না শিক্ষাথীরা। প্রধান শিক্ষক শাহিনুর রহমান জানান, তামাক শুকাতে বাঁধা দিলেও তামাক মালিকরা কোন কর্ণপাত করে না। বিদ্যালয় মাঠে তামাক শুকাতে বাঁধা দিলে তারা হুমকি-ধামকি দেয়। বিষয়টি উপর মহলে জানানো হয়েছে। বিদ্যালয়ের ছাত্র রাসেল মিয়া জানান, স্কুলে গিয়ে টিফিনে ছুটাছুটি করতে পারি না তামাক শুকানোর কারনে। স্কুল শুরুতে এ্যাস্যাম্বলী করাও যায় না তামাকের গন্ধে।
স্কুলের ছাত্রী রেশমা আক্তার জানান, স্কুলে আসলে তামাকের বিষাক্ত গন্ধে আমরা ক্লাস করতে পারি না। বমি বমি লাগে। মাথা ব্যাথা ও কোন কিছু ভালো লাগে না। অপর এক ছাত্র জানান, তামাকের কারনে আমরা ভালো ভাবে স্কুলে লেখাপড়া করতে পারি না। এদিকে শিশুদের তামাকের বিষাক্ত নিকোটিনের দিকে ঝোকাচ্ছে ফেরিওলারা। তারা এক গোছা তামাকের বিনিময়ে একটি আইসক্রীম দেয়ায় শিশুরা বাড়ি থেকে তামাক নিয়ে আসছে। অনেকে হয়ে পড়ছে অসুস্থ্য।

লালমনিরহাট আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকতা ডাঃ নবিউর রহমান জানালেন, তামাকের নিকোটিনের কারনে শিশুরা ঝুকিতে রয়েছে। নিকোটিনের কারনে শিশু ও বৃদ্ধদের নানান জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। শিশুদের মার্কস পড়ে চলাচল করার পরামর্শ দিয়েছে চিকিৎসক। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আরিফ জানান, খোলামেলা তামাক শুকালে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।