উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দ্বিতীয় ধাপে পাবনার ৮ টি উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামিকাল সোমবার। ইতোমধ্যে নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। প্রার্থীদের প্রচার প্রচারণা শেষ। ভোট গ্রহণে সকল উপকরণ স্বস্ব উপজেলা নির্বাচন অফিস থেকে বিতরণ করা হয়েছে। এদিকে এ জেলার ৯ টি উপজেলা হলেও সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান ও দুই ভাইস চেয়ারম্যান বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ায় এ উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। এছাড়াও জেলার সুজানগরে চেয়ারম্যান পদে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ায় এ উপজেলায় শুধু দুইটি ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, পাবনা সদর, সুজানগর, সাঁথিয়া, বেড়া, ঈশ্বরদী, আটঘরিয়া, চাটমোহর, ফরিদপুর, ভাঙ্গুড়া এ ৯টি উপজেলার মধ্যে ৭ টি উপজেলায় চেয়ারম্যানপদে ২৬ জন প্রার্থী রয়েছেন ভোটযুদ্ধে। এ ছাড়া ৮টি উপজেলায় পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান ৪৯ জন এবং ৩০ জন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ভোট করছেন। এবারের নির্বাচনে পাবনার ৮টি উপজেলার মধ্যে আটঘরিয়া উপজেলায় ১১ জন পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান এবং ঈশ্বরদী উপজেলায় ৭ জন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে লড়াই করছেন। ইতোমধ্যে, আওয়ামীলীগ দলীয় প্রার্থীদের মধ্যে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন; পাবনা সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোশারোফ হোসেন ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে গোলাম আজম শাওয়াল বিশ্বাস ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে শামসুন নাহার রেখা। এছাড়া সুজানগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন শাহীনুজ্জামান শাহীন।

জানা যায়, দলীয় প্রার্থীর পাল্লায় ভারী ভাঙ্গুড়া উপজেলায় আওয়ামীলীগ, ওলামালীগ, জাতীয়পার্টি, এনএনপি ও দল সহ সতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরাই চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে লড়াই করছেন অনুষ্ঠিতব্য পাবনা জেলার নির্বাচনী উপজেলাগুলোতে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার নৌকা প্রার্থীর অভিযোগ যে, স্থানীয় সংসদ সদস্য দলের বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন। অন্যদিকে স্থানীয় এমপির প্রভাবে নৌকা দলীয় প্রার্থীকে সহযোগিতা করছেন না তৃণমুলের দলীয় নেতা কর্মিরা। রয়েছে পক্ষপাতের অভিযোগ দলীয় বিদ্রোহী প্রার্থীর জন্য। সাধারণ ভোটাররা চাইছেন ভোটকেন্দ্রে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ। অন্যদিকে যোগ্য প্রার্থীকে নির্বাচিত করতে প্রশাসনের নিরপেক্ষতা আশা করছেন জন সাধারণ।
সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আব্দুল লতিফ শেখ জানান, ৮ টি উপজেলাকে দুটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। ঈশ্বরদী, আটঘরিয়া, চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া উপজেলায় তিনিই রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্বে রয়েছেন। অন্যদিকে ফরিদপুর, বেড়া, সাঁথিয়া ও সুজানগর উপজেলায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শাফিউল ইসলাম রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করছেন।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস বলেন, নির্বাচনকে ঘিরে আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী যে কোন ধরণের নাশকতা, আইন শৃংখলা পরিপন্থি কর্মকান্ড প্রতিহত করতে প্রস্তুত। তিনি বলেন, শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন করতে ৩৮ জন ম্যাজিষ্ট্রেট নিয়োগ করা হয়েছে। আইন শৃংখলা রক্ষায় ১৭ প্লাটুন অর্থাৎ ৩৯৫ জন বিজিবি সদস্য, পুলিশের ১ হাজার ৭৩২ সদস্য ও আনসার ভিডিপির ৬ হাজার ২৭২ জন সম্পৃক্ত থাকবেন। এছাড়াও গোটা জেলায় র‌্যাবের টহল জোরদার করা হয়েছে। চলছে বিভিন্নস্থানে তল্লাশী অভিযান।
নির্বাচন অফিস সুত্র অনুযায়ী পাবনার ৯টি উপজেলায় ৬৬৭টি কেন্দ্রে মোট ভোটার ১৮ লাখ ৭৯ হাজার ৭৬৫ জন। তার মধ্যে ৮টি উপজেলার ৫২৩ টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণে অংশ নেবেন ১৪ লাখ ৪৩ হাজার ৮৬৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৭ লাখ ২৯ হাজার ৪২৭ এবং মহিলা ভোটার ৭ লাখ ১৪ হাজার ৪৩৬ জন।