রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়িতে সন্ত্রাসীদের ব্রাশফায়ারে নিহত সাতজনের মধ্যে ছয়জনের ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর। মঙ্গলবার দুপুরে খাগড়াছড়ি আধুনিক সদর হাসপাতালে এই ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। যে কোনও ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় খাগড়াছড়িতে বাড়তি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার মোহা. আহমার উজ্জামান।

খাগড়াছড়ি আধুনিক সদর হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক চিকিৎসক অনুতোষ চাকমা জানান, সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার মো. আমির হোসেন, আনসার ও ভিডিপি সদস্য আল আমিন, বিলকিস আক্তার, জাহানারা বেগম, মিহির কান্তি দত্ত ও গাড়ির হেলপার মন্টু চাকমার ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। অফিসিয়াল বিষয়াদি শেষ করার পর লাশগুলো পুলিশের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে পুলিশ লাশগুলো পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনের হাতে তুলে দিয়েছে।

খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক মো. শহীদুল ইসলাম, পুলিশ সুপার মো. আহমার উজ্জামান আধুনিক সদর হাসপাতালে যান এবং নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।

নিহত আনসারের প্লাটুন কমান্ডার মিহির কান্তি দত্তের ছেলে পিয়াল দত্ত ঘটনায় পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের দায়ী করে বলেন, সরকারি দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে সন্ত্রাসীদের বিরাগভাজন হয়েছেন তার বাবাসহ অন্যরা।তিনি জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিসহ যথাযথ ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়েছেন।

বাঘাইছড়ি থানার ওসি (তদন্ত) মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, লাশগুলো স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এই হত্যাকান্ডের ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। সন্ত্রাসীদের ধরতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সাঁড়াশি অভিযান চালাচ্ছে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।

এদিকে বাঘাইছড়ি হত্যাকান্ডের জেরে খাগড়াছড়িতেও থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার মোহা. আহমার উজ্জামান জানিয়েছেন, ঘটনাটি পাশের জেলায় হলেও খাগড়াছড়িতে বাড়তি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ সব জায়গায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন আছে।

খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মো. শহিদুল ইসলাম জানান, সব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে যে কোনও পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, সোমবার (১৮ মার্চ) সন্ধ্যায় রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দায়িত্ব পালন শেষে সাজেকের ৩টি কেন্দ্র থেকে নির্বাচনি সরঞ্জাম নিয়ে বাঘাইছড়িতে ফেরার পথে সন্ত্রাসী হামলায় ঘটনাস্থলে ৬ জন এবং হেলিকপ্টারে চট্টগ্রামে নিয়ে যাওয়ার পথে পোলিং অফিসার আবু তৈয়ব (৪০) মারা যায়। আবু তৈয়বের তার লাশ এখনো আনা হয়নি।

প্রতিবেদক/ফোকাস বাংলা/১৭৫১ ঘ.