মেয়ের বিয়ের যৌতুকের ঋণ শোধ করতে না পেরে মুক্তিপণের দাবীতে অপহরণের ঘটনা সাজিয়ে এক কুটির শিল্প ব্যবসায়ী নিজেই ফেঁসে গেছে। প্রায় ১২দিন পর আত্মগোপনে থাকা ওই কুটির শিল্প ব্যবসায়ীকে গাজীপুর থেকে আটক করেছে র‌্যাব-১ এর সদস্যরা। তার নাম শ্রী দুলাল চন্দ্র দাস (৪০)। সে টাঙ্গাইলের ভূয়াপুর থানা সদর এলাকার মৃত শ্রী নরেশ চন্দ্র দাসের ছেলে।

র‌্যাব-১’র স্পেশালাইজ কোম্পানী পোড়াবাড়ী ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার লেঃ কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল-মামুন জানান, গত ২৩ মার্চ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে টাঙ্গইলের ভূয়াপুর গ্রাম থেকে দুলাল চন্দ্র দাস নিখোঁজ হয়। স্বজনরা বিভিন্নস্থানে খোঁজাখুঁজি করেও তার কোন সন্ধান না পেয়ে টাঙ্গাইলের ভুয়াপুর থানায় এবং গাজীপুরের কালিয়াকৈর থানায় পৃথক সাধারণ ডায়েরী দায়ের করেন। খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে তার পরিবার জানতে পারে দুলাল চন্দ্র দাসকে ৩ লাখ টাকা মুক্তিপণের দাবীতে অপহরণ করে দুর্বৃত্তরা গাজীপুরে কালিয়াকৈরের চন্দ্রা এলাকার একটি গোপন কক্ষে আটকে রেখেছে। মুক্তিপণের টাকা পরিশোধ করা না হলে তার কিডনী বিক্রি করে দিবে অপহরণকারীরা। এব্যাপারে র‌্যাব-১’র স্পেশালাইজ কোম্পানী পোড়াবাড়ী ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডারের বরাবরে অপহৃতের পরিবার অভিযোগ দায়ের করেন। এরপ্রেক্ষিতে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে র‌্যাব সদস্যরা ভিকটিম দুলাল চন্দ্র দাসের অবস্থান নিশ্চিত হন। পরে র‌্যাব-১’র স্পেশালাইজ কোম্পানী পোড়াবাড়ী ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার লেঃ কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল-মামুনের নেতৃত্বে র‌্যাব সদস্যরা বুধবার রাতে গাজীপুরের কালিয়াকৈর থানাধীন চন্দ্রা এলাকার একটি বাড়ীতে অভিযান চালিয়ে ভিকটিমকে উদ্ধার করে।

র‌্যাবের ওই কর্মকর্তা আরো জানান, জিজ্ঞাসাবাদে ভিকটিম দুলাল জানায় মূলতঃ পরিবারের আর্থিক অভাবের তাড়নায় সে এই পথ অবলম্বন করেছে। গত ২০১৬ সালে দুলাল চন্দ্র দাস তার মেয়েকে বিয়ে দেন। বিভিন্ন এনজিও ও স্থানীয়দের কাছ থেকে সুদে ঋণ নিয়ে বিয়ের যৌতুক হিসাবে তিন লাখ টাকা প্রদান করতে হয়। উক্ত ঋণের টাকা পরিশোধ করতে না পেরে সে গত ১ এপ্রিল ভূয়াপুর হতে গাজীপুরের চন্দ্রা এলাকায় দুলাল তার বন্ধুর বাড়ীতে এসে নিজেই আত্মগোপন করে। পরে অপহরণের মিথ্যা নাটক সাজিয়ে সে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ব্যক্তির কন্ঠ নকল করে তার ছোট ভাইয়ের নিকট মোবাইল ফোনে জানায় যে তাকে অপহরণকারী দল একটি গোপন কক্ষে আটক করে রেখেছে। তাকে উদ্ধার করতে মুক্তিপণ বাবদ ৩ লাখ টাকা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পাঠাতে হবে। অন্যথায় অপহরণকারীরা তার কিডনি বিক্রি করে ফেলবে। তাকে উদ্ধারের জন্য ছোট ভাইয়ের কাছে আকুতি-মিনতি করে দুলাল।