দেশে শান্তি ফিরিয়েছি। উন্নয়নের জোয়ার লেগেছে। পরিকল্পিত কাজ করে জনগণের আস্থা এবং বিশ্বাস অর্জন করেছি। সেই আস্থা আর বিশ্বাস থেকেই আওয়ামী লীগ এবারও সরকার গঠন করেছে বলে জানিয়েছেন দলটির সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেছেন, জনগণ উন্নয়ন চায়। শান্তি চায়। সুন্দরভাবে বাঁচতে চায়। আমরা দেশে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছি। তাতে আওয়ামী লীগ জনগণের আস্থা আর বিশ্বাস অর্জন করেছে। এজন্যই আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ জয়।

শুক্রবার (০৫ এপ্রিল) বিকেলে গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন।

এসময় তিনি বলেন, আমরা ক্ষমতায় আসার আগে দেশে ছিল অর্থনৈতিক মন্দা। দুর্ভিক্ষের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছিল বিএনপি। এদের অপকর্মে দেশেটি নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়েছিল। শান্তিতে চলাফেরা করতে পারতো না মানুষ। চুরি-ডাকাতি বা সন্ত্রাসবাদ এমনকি মাদকের বিস্তার ছিল দেশে। আয়ের তুলনায় ব্যয় ছিল বেশি মানুষের। যে কারণে দেশের মানুষ তাদের ক্ষমতাচ্যূত করেছে। তাদের হাতে ক্ষমতা দেওয়া হলে, দেশ লুট করে খাবে- এটা বুঝতে পেরেছে জনগণ।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ আমাদের পরিচালনায় দেশে শান্তি ফেরেছে। মানুষ নিশ্চিন্তে চলাফেরা করতে পারেন। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে দ্রুতগতিতে। ক্রমবর্ধমান উন্নয়নশীল দেশের শীর্ষ পাঁচে থেকে আমরা কথা বলছি। আমাদের মাথাপিছু আয় বেড়েছে এখন। প্রবৃদ্ধিতে অনেক দেশ ছাড়িয়ে গেছি। আগামীতে ৮ এর বেশি প্রবৃদ্ধি হবে আমাদের। সেভাবেই আমরা পরিচালনা করছি।

আওয়ামী লীগ প্রধান বলেন, বিএনপির আমলে আমাদের নেতাকর্মীদের হত্যা করা হয়েছে। নির্যাতনে বাড়িঘরে থাকতে পারেননি নেতাকর্মীরা। এমনকি বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। আমাদের নগদ টাকাসহ অনেক সম্পদ লুট করে নিয়ে গিয়েছিল বিএনপি। মিথ্যায় মামলায় আমাদের জর্জরিত করতে চেয়েছিল। আমাদের দলীয় কার্যক্রমের কোনো সুযোগই ছিল না। কিন্তু আমরা বিএনপির নামে কোনো মিথ্যা মামলা দিচ্ছি না। খালেদা জিয়ার মামলা আমরা করিনি। এতিমের টাকা খেয়ে পার পেয়ে যেতে পারেননি, তাদেরই লোকের দেওয়া মামলায় তিনি জেলে।

তিনি আরও বলেন, বিএনপি নির্বাচন করতে আসেনি। তারা বাণিজ্যক্ষেত্র বানিয়েছিল। টাকা খেয়ে প্রার্থী মনোনয়ন দিয়েছে। এছাড়া নির্বাচনে প্রচার-প্রচারণায় আগ্রহ ছিল না তাদের। নির্বাচন উপলক্ষে বাণ্যিজ্য করাই মূল উদ্দেশ্য ছিল বিএনপির। যা জনগণ মেনে নিতে পারেনি।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, নির্বাচনের আগেই বিভিন্ন জরিপ বলেছিল, আওয়ামী লীগ আবারও ক্ষমতায় আসছে। আমাদেরও বিশ্বাস ছিল জনগণ আমাদের বারবার চায়। সে বিশ্বাস আমরা বাস্তবে দেখেছি। নির্বাচন নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই। ২০০৮-এর নির্বাচনেও কোনো প্রশ্ন ছিল না। এছাড়া জনগণের সেবা করতেই আমরা নির্বাচন করি।

বাণ্যিজের কারণেই বিএনপি জিততে পারেনি উল্লেখ করে শেখ হাসিনা আরও বলেন, লন্ডন থেকে ওহি আসে, আর সে হিসেবে বিএনপি নেতারা প্রার্থী মনোনয়ন দিয়েছেন বিপুল টাকার বিনিময়ে। এভাবে ক্ষমতায় আসা যায় না। চোর হওয়া যায়।

অগ্নিকান্ডের স্থানে মানুষের সেলফি তোলার সমালোচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, কোথাও আগুন লাগলে কিছু মানুষ অযথাই ভিড় করে। ফায়ার সার্ভিস যখন অগ্নিনির্বাপণে যায়, তখনও কিছু লোক সেখানে ভিড় করে, তাদের মারতে যায়, এমনকি বনানীর আগুনের ঘটনায় ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি পর্যন্ত ভেঙে দিয়েছে। একেকটা গাড়ির দাম আট থেকে দশ কোটি টাকা। তারা উদ্ধারকারীদের ওপর হামলা না চালিয়ে যদি এক বালতি করে পানিও নিয়ে যেতো, তাহলেও কাজ হতো।

তবে সম্প্রতি কয়েকটি আগুনের ঘটনায় সাধারণ মানুষের মধ্যেও কিছু লোক দায়িত্ববোধ থেকে কাজ করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রশিক্ষিত ভলান্টিয়ারের পাশাপাশি অনেক সাধারণ মানুষও নিজের দায়িত্বের জায়গা থেকে উদ্ধারকাজে অংশ নিয়েছেন। তবে কিছু মানুষ অযথা ভিড় করে দাঁড়িয়ে থাকে, তারা দাঁড়িয়ে না থেকে জায়গাটা খালি রাখলেও উদ্ধারকারীদের জন্য কাজ সহজ হয়।

অগ্নিকান্ডের স্থানে ছবি তোলার কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, অনেকে সেখানে যায়, সেলফি তোলে। আগুন নেভানোর কাজ না করে সেলফি তুলতে যে কী আনন্দ তা আমি বুঝি না!