দেশের ১৫টি জেলার ৬ শতাধিক সশস্ত্র চরমপন্থীরা পাবনায় আনুষ্ঠানিক ভাবে আতœসমর্পন করতে যাচ্ছে। আগামী ৯ এপ্রিল বিকেল ৩টায় পাবনা শহীদ এডভোকেট আমিন উদ্দিন ষ্টেডিয়ামে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন এমপি‘র কাছে চরমপন্থীদের বিভিন্ন গ্রুপ আড়ম্বড় পূর্ন অনুষ্ঠানে আতœসমর্পন করবে। এ সময় অনুষ্ঠানে আইজিপি ( ইন্সপেক্টর জেনারেল, বাংলাদেশ পুলিশ) এবং পাবনা জেলা প্রশাসন, স্থানীয় সংসদ সদস্যবৃন্দসহ আইন শৃংখলা বাহিনীর উর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন। অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করবেন শিল্পী মমতাজ বেগম এমপিসহ অন্যান্য শিল্পীবৃন্দ। ইতোমধ্যে আতœসমর্ণের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে বলে জানা গেছে।
এ উপলক্ষে রোববার দুপুরে পাবনা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলন করেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান, পাবনা-১ (সাঁথিয়া-বেড়ার আংশিক) আসনের সংসদ সদস্য সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকু। তিনি বলেন, আগামি ৯ এপ্রিল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পুলিশের আইজি’র উপস্থিতিতে পাবনার শহীদ আমিন উদ্দিন স্টেডিয়ামে আনুষ্ঠানিক ভাবে পাবনাসহ দেশের ১৫ জেলার ৬১৪ জন চরমপন্থি দলের নেতা ও সদস্যরা অস্ত্রসহ আত্মসমর্পণ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসবেন।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন সাংসদ শামসুল হক টুকু। এ সময় তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে এদেশে পূর্ববাংলা কমিউনিস্টপার্টি (লালপতাকা, জনযুদ্ধ, সর্বহারা, বিপ্লবী কমিউনিষ্ট পার্টি), কাদামাটি গ্রুপ, নকশালসহ বিভিন্ন নামে সশস্ত্র গ্রুপ বিপুল সংখ্যক জনগোষ্ঠির জানমালের ক্ষতি করে আইনশৃংখলা পরিপন্থি কর্মকান্ড চালিয়ে আসছে এ সব চরমপন্থি সন্ত্রাসীরা।

সাংসদ টুকু বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় সুন্দরবনে বনদস্যু, জলদস্যু, জঙ্গী দমন, মাদক সন্ত্রাসী নির্মূলসহ বিভিন্ন সমাজ বিরোধীদের দমনে সরকার বদ্ধপরিকর। এরই ধারাবাহিকতায় পাবনাতেও ১৫ জেলার চরমপন্থিরা আত্মসমর্পন করতে যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, যারা আত্মসমর্পন করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসবে, তাদের স্বস্ব যোগ্যতার ভিত্তিত্বে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থার বিষয়ে স্বদিচ্ছা রয়েছে সরকারের।

সাংবাদিকদের প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি আরও বলেন, যারা আত্মসমর্পন করছেন, যাদের বিরুদ্ধে আদালতে ও থানা গুলোতে মামলা রয়েছে। সেগুলোও আইনগত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে চলবে। পাশাপাশি যারা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসছেন, তারা যেন পরবর্তীতে পূর্বের অবস্থানে ফিরে যেতে না পারে ও তারা যেন কোন রাজনৈতিক গোষ্ঠির মদদে পথভ্রষ্ট না হয় সেদিক খেয়াল রাখবে সরকারি গোয়েন্দা সংস্থা। আত্মসমর্পণকারীদের বিরুদ্ধে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগের বিভিন্ন নেতাকর্মি হত্যা, অপহরণ, গুমের অভিযোগ ও মামলা রয়েছে। এছাড়াও তৃণমূল পর্যায়ে এই আত্মসমর্পণ নিয়ে অসন্তোষ এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, সরকার বৃহত্তর জনগোষ্ঠির স্বার্থে আইনশৃংখলা দমন ও জানমালের নিরাপত্তায় যে কোন ধরণের উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারেন। সেখানে দলমত দেখার কোন সুযোগ নেই। তিনি বলেন, ৯৯ সালে আওয়ামীলীগ ক্ষমতাকালীন পাবনাতে এ ধরণের চরমপন্থিদের আত্মসমর্পনের আয়োজন করা হয়েছিল। সেবারও তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে কর্মস্থানের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। মাঝে বিএনপি-জামাত জোট ক্ষমতায় এসে তাদের ভিন্ন পথে ও ভিন্ন মতে ব্যবহার করায় আইনশৃংখলার মারাত্বক অবনতি দেখা দেয়। আওয়ামীলীগ সরকারের পূর্বের অভিজ্ঞতার আলোকে দেশের শান্তিশৃংখলা বজায় রাখার তাগিদেই আবারও এ ধরণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।