বাংলাদেশের অন্যতম সিলেটের ডাউকি চ্যুতি এলাকায় ভূমিকম্পন তৈরি হলে সেখান থেকে দুই মিনিট পর ঢাকায় ভূমিকম্প অনুভূত হয়। এই দুই মিনিটের মধ্যে সতর্ক করা গেলে ঢাকা বা আশেপাশের মানুষ নিরাপদ স্থানে চলে যেতে পারবে।

সোমবার (০৮ এপ্রিল) মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সচিবালয়ে ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম একথা জানান।

তিনি বলেন, ভূমিকম্পের উপরে বলা হচ্ছে, এটা যদি আধুনিক প্রযুক্তিতে, ডাউকিতে ভূমিকম্প প্লেট যদি নাড়া দেয় তাহলে দুই মিনিট পর আমাদের এখানে (ঢাকা) আসবে। এই দুই মিনিট সময়ে যদি ওখান থেকে সিগন্যাল পাই আমরা পুরোটা খালি করতে পারবো। ঢাকা শহরের কোনো লোক ঘরে থাকার দরকার নাই, সব রাস্তায় চলে যাবে, মাঠে চলে যাবে, এটা সম্ভব। দুই মিনিট সময় দিতে হবে। কিন্তু সিগন্যালটা আসতে হবে। সিগন্যাল পাওয়ার জন্য এরকম প্রযুক্তি আছে।

ওখান থেকে আসতে (ভূকম্পন) দুই মিনিট সময় লাগবে। অর্থাৎ উৎস হচ্ছে ডাউকি, সিলেটের কাছে।

উদাহরণ দিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ধরেন, ওখানে ১২টায় শুরু হলো এখানে পৌঁছতে পৌঁছতে দুই মিনিট লাগবে। এটা জিওগ্রাফিক্যাল কারণে। এই দুই মিনিটের সময় যদি আমরা পাই তাহলে ঢাকা শহর বা যারা যারা আশেপাশে এখানে আছে এদের সতর্ক করা যাবে এবং সরে যেতে পারবে।

সচিবালয়ের ভবনগুলোতে অগ্নি নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন-উত্তর আলোচনাকালে মন্ত্রিপরিষদ সচিব এসব কথা বলেন।

সচিবালয়ের ভবনগুলোর জন্য অন্য কোনো ঝুঁকি আছে কিনা- প্রশ্নে মন্ত্রিপরিষদ সচিব শফিউল আলম বলেন, আমাদের এই ভবনটার (১ নম্বর) ব্যাপারে একটা সতর্কতা আছে যে, এখানে যদি আর্থ কোয়েক (ভূমিকম্প) হয়, এগুলোতে দুর্বল। এটার বেইজটাৃ, অনেক পুরনো ধরেন ৬০-৭০ বছর আগে তৈরি করা এ ভবনটি। এটা নিয়ে একটু ঝুঁকি আছে। এজন্য আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে এখানে অফিস করতে আনি না। আমরা ভিন্ন ভেন্যু ঠিক করেছি।

বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত থেকে জানা যায়, বাংলাদেশে আটটি ভূতাত্ত্বিক চ্যুতি এলাকা বা ফল্ট জোন সচল অবস্থায় রয়েছে। এরমধ্যে সিলেটের হাফলং চ্যুতির ডাউকি চ্যুতি অন্যতম। এসব চ্যুতির কারণে ভূমিকম্প হয়।

এদিকে,চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ মাসে মন্ত্রিসভায় নেওয়া সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের হার গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এক দশমিক ৫৮ শতাংশ পয়েন্ট কমেছে বলে মন্ত্রিসভাকে জানানো হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সোমবার তার কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এ বছরের প্রথম ত্রৈমাসিক অর্থাৎ জানুয়ারি থেকে মার্চ মাসের প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।

সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম জানান, গত জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত পাঁচটি মন্ত্রিসভা বৈঠকে ৩৬টি সিদ্ধান্ত হয়। এর মধ্যে বাস্তবায়ন হয়েছে ২৪টির, ১২টি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নাধীন। সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের হার ৬৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ।

গত বছরের একই সময়ে সাতটি মন্ত্রিসভা বৈঠক হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ওই সময়ে সিদ্ধান্ত হয় ৬৩টি, যার মধ্যে বাস্তবায়িত হয়েছে ৪৩টি। আর ২০টি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নাধীন ছিল। বাস্তবায়নের হার ছিল ৬৮ দশমিক ২৫ শতাংশ।

শফিউল জানান, গত জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত মন্ত্রিসভা বৈঠকে একটি চুক্তি বা সমঝোতা স্মারক (এমওইউ), দুইটি নীতি বা কর্মকৌশল অনুমোদিত হয়েছে। আর সংসদে পাস হয়েছে পাঁচটি আইন।

২০১৮ সালের একই সময়ে মন্ত্রিসভা বৈঠকে চারটি চুক্তি বা সমঝোতা স্মারক (এমওইউ), তিনটি নীতি বা কর্মকৌশল অনুমোদিত হয়েছিল। ওই সময়ে সংসদে ১৫টি আইন পাস হয়।