গাজীপুরের ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানে কোটিপতির একমাত্র সন্তান প্রকৌশলী আব্দুল কাইয়ুমকে হত্যা করে লাশের মুখ এসিড দিয়ে ঝলসে দেওয়ার মামলার প্রধান আসামীকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১। কালিয়াকৈর থানার চন্দ্রা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতের নাম মোঃ আঞ্জুমান ওরফে আঞ্জু (২৫)। সে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানার মীর দেওহাটা গ্রামের মোঃ সবুর মিয়ার ছেলে। মঙ্গলবার র‌্যাব-১’র স্পেশালাইজ কোম্পানী পোড়াবাড়ী ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার লেঃ কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল-মামুন এ তথ্য জানিয়েছেন।
র‌্যাব-১’র কোম্পানী কমান্ডার লেঃ কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল-মামুন জানান, গত ৯ মার্চ সন্ধ্যায় গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের সদর থানাধীন ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান এলাকায় প্রকৌশলী আঃ আব্দুল কাইয়ুমকে (৩২) পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করে। পরে নিহতের পরিচয় নষ্ট করার জন্য এসিড দিয়ে লাশের মুখ ঝলসে দেওয়া হয়। এ ঘটনার ৫দিন পর ১৩ মার্চ সদর থানার পুলিশ অর্ধ-গলিত অবস্থায় তার লাশ উদ্ধার করে। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনায় ১৬ মার্চ থানায় মামলা দায়ের করা হয়। র‌্যাব-১ এ মামলার আসামি গ্রেফতার ও ঘটনার ছায়া তদন্ত শুরু করে। সোমবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব-১’র কোম্পানী কমান্ডার লেঃ কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল-মামুনের নেতৃত্বে র‌্যাব সদস্যরা কালিয়াকৈরের চন্দ্রা এলাকায় অভিযান চালিয়ে এ মামলার প্রধান আসামী আঞ্জুকে গ্রেফতার করে।
র‌্যাবের ওই কর্মকর্তা আরো জানান, ছোট বেলা থেকে কিশোর কাল্পনিক চরিত্র মাসুদ রানা পড়ে ঢাকার বসুন্ধরার নিবাসী কোটিপতি জালাল উদ্দিনের একমাত্র পুত্র ভিকটিম প্রকৌশলী আঃ কাইয়ুমের মনেও স্বপ্ন জাগে বড় হয়ে মাসুদ রানা হবে। এর ফলশ্রুতিতে তার আতœীয় স্বজন তাকে মাসুদ রানা নামেই ডাকতো। এই মাসুদ রানা হওয়ার স্বপ্নের কথা জানতে পেরে তার টাঙ্গাইলের খালার বাড়ীর প্রতিবেশী আঞ্জুমান ওরফে আঞ্জু। প্রখর বুদ্ধি সম্পন্ন আঞ্জু ভিকটিমের টাকা আত্মসাৎ করে কোটিপতি হওয়ার আশায় কাইয়ুমের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তুলে। পরে গোয়েন্দা কর্মকর্তা হিসেবে কাইয়ুমকে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ২০ লাখ টাকার চুক্তি করে আঞ্জু। এক পর্যায়ে ৯ লাখ টাকা নিয়ে মালয়েশিয়ায় পাড়ি দেয় আঞ্জু। এ টাকা যেন পরিশোধ না করতে হয় সেজন্য বিদেশ থেকে ফিরে আঞ্জু কৌশলে পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে কাইয়ুমকে গাজীপুরের ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানে নিয়ে গাছের সঙ্গে দাঁড় করিয়ে পেছন থেকে গলা টিপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। নিহতের পরিচয় যাতে সনাক্ত করা না যায় সেজন্য এসিড দিয়ে লাশের মুখ ঝলসে দিয়ে পালিয়ে যায় সে। কাইয়ুমকে হত্যার পর মালয়েশিয়া চলে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল আঞ্জু’র।