আখাউড়া-সিলেট সেকশনের মিটারগেজ রেললাইনকে ডুয়েলগেজ রেললাইনে রূপান্তরসহ সাতটি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। এগুলো বাস্তবায়নে মোট খরচ ধরা হয়েছে ১৮ হাজার ১৯১ কোটি টাকা। এর মধ্যে অবশ্য আখাউড়া-সিলেট রেললাইন প্রকল্পের ব্যয়ই ১৬ হাজার ১০৪ কোটি টাকা।

মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল)রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের জাতীয় অর্থনৈতিক কমিটির (এনইসি) সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত একনেক বৈঠকে এসব প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। একনেক সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা।বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন পরিকল্পনমন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনি জানান, অনুমোদিত প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে সরকারি তহবিল থেকে ৬ হাজার ৬২২ কোটি টাকা এবং বৈদেশিক সহায়তা থেকে ১১ হাজার ৫৬৮ কোটি টাকা খরচ করা হবে।

বৈঠকে পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন কোনো প্রকল্পের জন্য কৃষি জমি বা গরীব মানুষ ও বর্গাচাষীদের জমি নেওয়া যাবে না। একান্তই যদি জমি নিতে হয়, তাহলে জমির দাম তিনগুণ দেওয়ার পাশাপাশি প্রকল্প শুরু আগেই তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। এছাড়া প্রতিবছর নদীগুলো ড্রেজিং করারও নিদেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

পরিকল্পনামন্ত্রী আরও বলেন, সরকার রেলপথকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নিজেই নির্দেশনা দিয়েছেন পর্যায়ক্রমে দেশের সব রেলপথকে ব্রডগেজে রূপান্তরিত করতে হবে। অতীতে যারা রেলকে অবহেলা করেছিলেন, তারা অন্যায় করেছে।একনেক বৈঠকে ভারতীয় বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলেও জানান পরিকল্পনামন্ত্রী।

একনেকে অনুমোদিত আখাউড়া-সিলেট সেকশনের মিটারগেজ রেললাইনকে ডুয়েলগেজ রেললাইনে রূপান্তর প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ১৬ হাজার ১০৪ কোটি টাকা; পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ কমপ্লেক্স নির্মাণ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ২৪৪ কোটি টাকা; মাগুরা- শ্রীপুর জেলা মহাসড়ক বাঁক সরলীকরণসহ সম্প্রসারণ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ২১৫ কোটি টাকা; খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের নতুন কার্যালয় ভবন ও অডিটরিয়াম নির্মাণ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ১৩৯ কোটি ৪৬ লাখ টাকা; মিরসরাইয়ে ভারতীয় অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৯১৯ কোটি ৮৫ লাখ টাকা; বিসিএসআইআর ঢাকা ও চট্টগ্রাম কেন্দ্রে নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর শুঁটকি মাছ প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং ইনডোর ফার্মিং গবেষণা সংক্রান্ত সুবিধা স্থাপন প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৮৯ কোটি টাকা; কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী উপজেলার ঘুঘুমারী থেকে ফুলুয়ার চরঘাট ও রাজিবপুর উপজেলা সদর (মেম্বার পাড়া) থেকে মোহনগঞ্জ বাজার পর্যন্ত এলাকা ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙন থেকে বাঁচাতে বাম তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৪৭৯ কোটি ২৩ লাখ টাকা।

ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনামন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা সচিব নুরুল আমিন, সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য (সিনিয়র সচিব) ড. শামসুল আলম, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব সৌরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, আইএমইডি সচিব আবুল মনসুর মো. ফায়জুল্লাহসহ পরিকল্পনা কমিশনের সদস্যরা।