ফেনীর সোনাগাজীতে মাদরাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টার ঘটনায় মামলায় বুধবার (১০ এপ্রিল) আটককৃত প্রদান আসামী মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এ এস এম সিরাজ উদ দৌলার সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।

এইছাড়া এই মামলায় এজহারভূক্ত আসামী আবছার উদ্দিন এবং আটককৃত মাদ্রাসার ছাত্র আরিফুল ইসলামের পাঁচদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত। এ ঘটনায় বুধবার (১০ এপ্রিল) সোনাগাজী মডেল থানার ওসি মো. মোয়াজ্জেম হোসেনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ফেনীর পুলিশ সুপার এস.এম জাহাঙ্গীর আলম সরকার। এছাড়া মামলাটি তদন্তের জন্য পুলিশ ইনভেষ্টিগেশন ব্যুরো (পিবিআই) কে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ফেনীস্থ পিবিআইয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী মনিরুজ্জামান।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও সোনাগাজী মডেল থানার ওসি (তদন্ত) কামাল হোসেন জানান, বুধবার দুপুরে আটককৃত মধ্যে তিন জনকে ফেনী জেলা জজ আদালতে প্রেরণ করে প্রত্যেকের সাত দিনের রিমান্ডের জন্য আবেদন করেন। সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট শরাফত উদ্দিন আহম্মেদ এর আদালত অধ্যক্ষ এ এস এম সিরাজ উদ দৌলার সাত দিনের রিমান্ড মন্জুর করেন। এজহারভূক্ত আসামী আবছার উদ্দিন ও মাদ্রাসার ছাত্র আরিফুল ইসলামের পাঁচদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।

পুলিশ গতকাল মঙ্গলবার আটককৃতদের মধ্যে চারজনকে জেলা জজ আদালতে প্রেরন করে প্রত্যেকের সাত দিনের রিমান্ডের জন্য আবেদন করেন। সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট শরাফত উদ্দিন আহম্মেদ এর আদালত চারজনকে পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। মঙ্গলবার আদালতের মাধ্যমে পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুরকৃত চারজন হলেন- শহিদুল ইসলাম, নুর হোসেন, কেফায়েত উল্যাহ ও মো. আলা উদ্দিন।

এদিকে এই মামলায় এই পর্যন্ত এজাহারভুক্ত আসামী আসামি সোনাগাজী ইলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এ এস এম সিরাজ উদ দৌলা, ইংরেজী প্রভাষক আবছার উদ্দিন, যোবায়ের আহম্মদকে গ্র্রেফতার করা হয়েছে।মামলায় পাঁচ আসামী পলাতক রয়েছেন। তারা হলেন- পৌর কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম মাকসুদ, ছাত্র শাহদাত হোসেন শামীম, সাবেক ছাত্র নুর উদ্দিন, জাবেদ হোসেন ও হাফেজ আব্দুল কাদের।

অপরদিকে এই মামলায় যাদের এজাহারভুক্ত আসামি জোবায়ের হোসেনকে বুধবার গ্রেফতার করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গ্রেফতার করা হয় নুসরাত জাহান রাফির সহপাঠী অধ্যক্ষ এস.এম সিরাজ উদ-দৌলার শ্যালিকার মেয়ে উম্মে সুলতানা পপি নামের আরো একজনকে।

মঙ্গলবার (০৯ এপ্রিল) নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান পূর্বের দেয়া এজাহার পরিবর্তন করে সোনাগাজী ইলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে প্রধান আসামী করে আট জনের নাম উল্লেখ করা হয়।এছাড়া অজ্ঞাত বোরকা পরিহিত আরো চার নারীসহ অজ্ঞাত আরো অনেককে আসামী করা হয়েছে।

এর আগে ৬ এপ্রিল শনিবার সকালে আলিম পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসায় যায় নুসরাত জাহান রাফি। মাদরাসার এক ছাত্রী তার বান্ধবি নিশাতকে ছাদের উপর কে মারধর করেছে এমন সংবাদ দিলে সে ওই ভবনের ছাদে যায়। সেখানে মুখোশপরা ৪/৫জন ছাত্রী তাকে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে মামলা ও অভিযোগ তুলে নিতে চাপ দেয়। সে অস্বীকৃতি জানালে তারা গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়।

২৭ মার্চ ওই ছাত্রীকে নিজ কক্ষে নিয়ে শ¬ীলতাহানির অভিযোগে মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে আটক করে পুলিশ। সে ঘটনার পর থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন। এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।