ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া উপজেলার সংরক্ষিত বনাঞ্চল সন্তোষপুর এখন অরক্ষিত। ৩ হাজার একর বনভূমি দিনের পর দিন গাছ কেটে সাবাড় করা হচ্ছে। কাঠ পুড়িয়ে বনেই হচ্ছে কয়লা। উঠছে নতুন নতুন ঘরবাড়ী। বন উজাড়ে পিছিয়ে নেই জনপ্রতিনিধিরাও।

সন্তোষপুর বনাঞ্চলের ৬২ নামে খ্যাত দাগে প্রায় ৩শ একর জমি রয়েছে। দাগটি ফুলবাড়ীয়া ও মধুপুর উপজেলায় হওয়ায় দুই উপজেলার উপকারভোগীদের মধ্যে অংশিদারিত্ব দেয়া হয়েছে। বনের অংশিদারিত্ব বিক্রির বিধান না থাকলেও অবাধে বেঁচা কেনায় সমাজের বিভিন্ন অপরাধে যারা জড়িত তারা অংশিদারিত্ব কিনে নতুন নতুন ঘরবাড়ী তৈরি করছে। বনের ভিতর অপরাধীরা বসবাস করায় বনবিভাগে আতংক দেখা দিয়েছে। প্রতিদিন গাছ কেটে সাবাড় হচ্ছে এলাকার পর এলাকা। অপরাধীরা গাছ কেটে তার প্লটেই কাঠ পুড়িয়ে তৈরি করছে কয়লা। সম্প্রতি নাওগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নং শিবপুর গ্রামের মেম্বার মঞ্জুরুল হক মঞ্জু ৬২ দাগের তার কেনা প্লট থেকে গাছ কেটে ৫ ঘোড়ার গাড়ী করে অন্যত্র বিক্রির সময় বন বিভাগ ৩ ঘোড়ার গাড়ী ভর্তি কাঠ আটক করেছে। সরেজমিন মেম্বার মঞ্জুর কেনা প্লট পরিদর্শন করে দেখা গেছে বড় বড় গাছ গুলো কেটে গুঁড়ি উপড়ে ফেলা হচ্ছে। নতুন করে টিনসেটের বাড়ী তৈরি করে সেখানে তিনি আস্তানা করেছেন। তার আস্তানার পাশেই কয়লা পোড়ার জন্য তৈরি গর্তে পোড়ানো হচ্ছে কয়লা।

পাহাড়ীরা অভিযোগ করেছেন, পাহাড়ের বাইরে থেকে আসা নানা অপরাধে জড়িতরা অংশিদারিত্বের প্লট কিনে বনবিভাগকে ম্যানেজ করে নতুন নতুন ঘরবাড়ী তৈরি করে আস্তানা তৈরি করছে। পাহাড়ীদের মধ্যে নতুন করে বহিরাগতদের নিয়ে আতংক দেখা দিয়ে দিয়েছে। বহিরাগতরা গাছ কেটে গাছ কাটার দোষ পাহাড়ীদের উপর চাপিয়ে দায় মুক্তির চেষ্টা করছে। এতে করে বহিরাগত ও পাহাড়ীদের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটছে। বহিরাগতরা বনের ভিতরে জুয়ার আসর বসিয়ে ফায়দা লুটছে। নিঃস্ব হচ্ছে পাহাড়ীরা। ৬২ দাগে একাধিক জুয়ার আসর বসে বলে অভিযোগ রয়েছে। নাসিরের বাড়ীর উত্তর পাশে বসানো জুয়ার আসরটি বসে প্রতিদিন। এ জুয়ার আসরে হয় লাখ লাখ টাকা খেলা। মঞ্জু মেম্বার প্লটের পাশে বসানো জুয়ার আসর নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

বিষয়টি নিয়ে মঞ্জুরুল হক মঞ্জু মেম্বারের সাথে কথা বলে জানা গেছে, তিনি ৩ টি প্লট কিনে বাড়ী করেছেন। গাছ কাটার বিষয়ে তিনি বলেন, গাছ আমি কাটি নাই তবে আমার পল্ট থেকে গাছ কাটা হয়েছে। জনপ্রতিনিধি হিসাবে বনের জমিতে ঘরবাড়ী তৈরি করা ঠিক হয়েছে কিনা জানতে চাইলে কোন উত্তর না দিয়ে তিনি মোবাইেল কেটে দেনে। সন্তোষপুর বনবিট কর্মকর্তা আশরাফুল আলম খান জানান, মেম্বারের কেটে নেয়া গাছ উদ্ধার করা হয়েছে। ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।