কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে কোস্টগার্ডের অভিযানে মঙ্গলবার রাতে পাঁচ লাখ ইয়াবার চালান আটকের ঘটনায় মহিপুর থানায় সাতজনকে আসামি করে একটি মামলা হয়েছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই কামাল হোসেন জানান, বিজ্ঞ আদালত গ্রেফতারকৃত তিন জনের চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।

বাকি চারজনকে গ্রেফতারে সচেষ্ট রয়েছেন। পুলিশ তদন্তের স্বার্থে সকল আসামির নাম জানাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। বুধবার সকাল ১০টায় কোস্টগার্ডের স্টাফ অফিসার (অপারেশন্স) লেফটেন্যান্ট কমান্ডার এম নাজিউর রহমান নিজামপুর কোস্টগার্ড বিসিজি স্টেশনে আনুষ্ঠানিক ব্রিফিংকালে বলেছেন টেকনাফ-কক্সবাজার এলাকায় বিভিন্ন বাহিনীর টহল জোরদার থাকায় ইয়াবা কারবারিরা মহিপুর-আলীপুর-কলাপাড়ার গডফাদারদের মাধ্যমে এই রুটকে ব্যবহার করছে। ইতোপুর্বে র‌্যাবের আরেক সফল অভিযানে ছয় লাখ ৭৭ হাজার পিস ইয়াবা আটক হয় কলাপাড়ার শেখ কামাল সেতুর সলিমপুর অংশের সংযোগ সড়ক থেকে।

এছাড়া অতি সম্প্রতি ঢাকায় লঞ্চ ও বাস থেকে আটক হওয়া আট লাখ ইয়াবার চালানও এ উপকূল থেকে খালাশ করা হয় বলে গণমাধ্যমসুত্রে জানা গেছে। ইয়াবার এতো বড় চালান এরুটে খালাশের ঘটনা এবং প্রশাসনের সফল অভিযানে জনমনে স্বস্তির পাশাপাশি স্থানীয় গডফাদারদের আইনের আওতায় আনতে না পারায় উৎকন্ঠাও বেড়ে গেছে। ইয়াবাসহ মাদক নির্মূলে সরকারের জিরো টলারেন্স অবস্থানে ব্যাপক সফলতা আসছে।

পাশাপাশি টেকনাফ-কক্সবাজার এলাকার চোরাচালানিরা এখন কুয়াকাটা, মহিপুর, আলীপুর, কলাপাড়া এলাকায় সৃষ্টি করছে এ জগতের নতুন গডফাদার। আর ইলিশসহ গভীর সাগরে মাছ শিকারের এক শ্রেণির ট্রলার মাঝি, মালিকদের কিংবা জেলেদের একাজের কারবারি কিংবা ভাগিদার বানাচ্ছে গডফাদাররা। অল্প সময় বিত্ত-বৈভবের মালিক বনে যাওয়ার লোভে ইয়াবা কারবারির সংখ্যা বাড়ছে এ জনপদে। কুয়াকাটার আবাসিক হোটেল থেকে বিভিন্ন সময় ইয়াবার খুচরা বিক্রেতাসহ সেবনকারীদের পুলিশ আটক করে। কলাপাড়া ও মহিপুর থানায় গত ফেব্রুয়ারি মাসে মাদক সংক্রান্ত ১৭টি মামলা হয়েছে। কিন্তু স্থানীয় গডফাদাররা সবসময় থাকে ধরাছোঁয়ার বাইরে। তবে পাঁচ লাখ ইয়াবাসহ আটক হওয়া মোশাররফ সিকদারসহ তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদে স্থানীয় গডফাদারসহ অনেকের নাম বেরিয়ে আসবে বলে নিশ্চিত মতামত দিয়েছেন মহিপুরের সাধারণ জেলেসহ বোটমাঝিরা।

তবে এ মামলার অন্যতম আল-আমিনকে গ্রেফতার করলে অনেক তথ্য বেরিয়ে আসবে। বর্তমানে কলাপাড়ায় ইয়াবার এতো বড় চালান আটক হওয়ার খবরটি নিয়ে যেমন আলোচনা চলছে। তেমনি এর গডফাদারদের গ্রেফতার ও আইনের আওতায় আসবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অসংখ্য মতামত পোস্ট হচ্ছে।