ক্যাবল অপারেটরদের বলা হয়েছিলো দেশের চ্যানেল আগে থাকবে তারপর বিদেশি চ্যানেল কিন্তু অনেকক্ষেত্রে তারা তা পালন করছেন না জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সাংবাদিকেদের এ কথা জানান তিনি।

দেশে মোট ছয় হাজার ক্যাবল অপারেটর আছে দেশে ৩৩টি টিভি চ্যানেল অনইয়ারে আছে এবং অনুমোদনের অপেক্ষায় আরো এই উদ্যোগ জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয় ক্যাবল অপারেটররা জানান মন্ত্রী।তিনি বলেন, বাংলাদেশে বেসরকারি টিভি চ্যানেলের যাত্রা শুরু হয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে।

বিদেশি চ্যানেলে বিজ্ঞাপন দেখাতে পারে না আইনগতভাবে দুই প্রতিষ্ঠান যারা ডাউনলিংক করে, তাদের নোটিশ করা হয়েছে, তারা জবাব দিয়েছে, উদ্যোগও কিছু নেয়া হয়েছে। পনেরো দিন সময় দেয়া হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী।

আইনটি সব দেশে কার্যকর এখন এদেশেও তা কার্যকর করা হবে বলে জানান মন্ত্রী। দেশ ডিজিটাল হয়েছে এখন টিভিগুলোকেও ডিজিটাইলেজশন করতে হবে বলে জানান তিনি।গত ২ তারিখ-মঙ্গলবার সচিবালয়ে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, সরকার কোনো চ্যানেল বন্ধ করেনি। সরকার প্রচলিত আইন প্রয়োগ করেছে। বাংলাদেশের ক্যাবল টেলিভিশন নেটওয়ার্ক পরিচালনা আইন, ২০০৬’ এর উপধারা-১৯(১৩) এর বিধান মতে বাংলাদেশে বিদেশি টিভি চ্যানেলের মাধ্যমে কোনো ধরনের বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করা যায় না। শুধু দেশীয় বিজ্ঞাপন নয়, কোনো ধরনের বিজ্ঞাপন দেখানো যায় না।

ভারতীয় জনপ্রিয় জি নেটওয়ার্কের সব চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধ হলো বাংলাদেশে।ওইদিন মঙ্গলবার সচিবালয়ে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ জানান, বিদেশি চ্যানেলে দেশি বিজ্ঞাপন প্রচার হলেই ব্যবস্থা নেয়া হবে।

টেলিশিভন শিল্পকে বাঁচাতে আইনের প্রয়োগ করা হয়েছে তিন দফা নোটিশের পরেই জি নেটওয়ার্কের বিরুদ্ধে নেয়া হয়েছে এ ব্যবস্থা এ কথা উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী জানান, কয়েক বছরে হাজার কোটি টাকার বিজ্ঞাপন বিদেশে পাচার হয়েছে।সংবাদ ও অনুষ্ঠান মিলিয়ে বাংলাদেশে টেলিভিশন চ্যানেলের সংখ্যা এখন ত্রিশটির বেশি— সম্প্রচারে আসার অপেক্ষায় আরো বেশ কিছু। টেলিভিশনের সংখ্যা বাড়লেও বাড়েনি আয়ের উৎস। বরং দিন দিন দেশের বিজ্ঞাপনের বড় অংশই চলে যাচ্ছে বিদেশি টেলিভিশনে। এই অজুহাতে টেলিভিশন মালিকরা তাদের সম্প্রচারের ক্ষেত্রও ছোট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কেউ কেউ। ব্যয় কমাতে প্রায়শই চলে ছাঁটাই প্রক্রিয়া। এই পরিস্থিতিতে দেশের টেলিভিশন শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে বিদেশি চ্যানেলে দেশি বিজ্ঞাপন প্রচার বন্ধ করতে সংশ্লিষ্টদের কয়েক দফা নোটিশ দেয় সরকার।এই নোটিশের মধ্যেই সোমবার থেকে ভারতীয় জি নেটওয়ার্কের সকল চ্যানেলের বাংলাদেশে সম্প্রচার বন্ধ থাকে পরে তা আবার চালু করা হয়।

ওইদিন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ জানান, নোটিশের পরেও উদ্যোগ না নেয়ায় তাদের বিরুদ্ধে ক্যাবল নেটওয়ার্ক আইনে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।তথ্যমন্ত্রী জানান, দেশের টেলিভিশন শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে সরকারকে যা যা করণীয় তাই করবে।তিনি আরো বলেন, গত কয়েক বছরে হাজার কোটি টাকার বিজ্ঞাপন দেশের বাইরের চ্যানেলে চলে গেছে যা আইনগত ভাবে অপরাধ।

এর আগে, দেশের সিনেমা হল মালিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন তথ্যমন্ত্রী। সেখানেও তিনি বলেছেন, দেশের চলচ্চিত্র টিকিয়ে রাখতে হলে সিনেমা হলগুলোকে বাঁচাতে হবে। সেজন্য সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে উল্লেখ করেন মন্ত্রী।পরে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের সামনে বিস্তারিত তুলে ধরেন:

কেবল টেলিভিশন নেটওয়ার্ক পরিচালনা আইন, ২০০৬’ এর উপধারা-১৯(১৩) এর বিধান লঙ্ঘন করে বাংলাদেশে ডাউনলিংককৃত বিদেশি টিভি চ্যানেলের মাধ্যমে বিজ্ঞাপন প্রচারের কারণে গতকাল পরিবেশক সংস্থা ন্যাশনওয়াইড মিডিয়া লিমিটেড এবং জাদু ভিশন লিমিটেডকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় তথ্য মন্ত্রণালয়।

নোটিশ দেয়ার পর রাত থেকে ভারতের জি টেলিভিশন নেটওয়ার্ক বাংলাদেশে প্রদর্শিত হচ্ছে না বলে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, সরকারের পক্ষ থেখে কোনো চ্যানেল বন্ধ করা হয়নি।এ বিষয়ে মঙ্গলবার সচিবালয়ে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, সরকার কোনো চ্যানেল বন্ধ করেনি। সরকার প্রচলিত আইন প্রয়োগ করেছে। বাংলাদেশের কেবল টেলিভিশন নেটওয়ার্ক পরিচালনা আইন, ২০০৬ এর উপধারা-১৯(১৩) এর বিধান মতে বাংলাদেশে বিদেশি টিভি চ্যানেলের মাধ্যমে কোনো ধরনের বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করা যায় না। শুধু দেশীয় বিজ্ঞাপন নয়, কোনো ধরনের বিজ্ঞাপন দেখানো যায় না।

একই ধরনের আইন ভারত, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের অন্যান্য দেশে আছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, সে সব দেশে এ আইন মানা হয়।বাংলাদেশের যারা টেলিভিশন চ্যানেলের সাংবাদিক তারা জানেন, আপনাদের টেলিভিশন চ্যানেল যখন ইউকে প্রদর্শন করা হয় তখন এখানে যে বিজ্ঞাপনগুলো দেখান, সেগুলো সেখানে দেখানো যায় না। সেখানে সেই দেশের বিজ্ঞাপন দেখানো যায়। ভারতে এবং অন্যান্য দেশে যখন টেলিভিশন চ্যানেল যখন প্রদর্শিত হয় তখন সেখানে বিদেশের বিজ্ঞাপন প্রদর্শিত হয় না। কন্টিনেন্টাল ইউরোপেও একই রকম।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে এ আইনটি মানা হচ্ছিলো না। আইনটি প্রয়োগ করা হয়নি। সেটি না করার কারণে বাংলাদেশের টেলিভিশন চ্যানেলগুলো যে বিজ্ঞাপন পেতো সেগুলো চলে গেছে ভারতে। পরিসংখ্যান দিয়ে মন্ত্রী জানান, ইউনিলিভার বাংলাদেশে পাঁচ বছর আগে বিজ্ঞাপনখাতে বাংলাদেশে ১৫ কোটি টাকা খরচ করতো। যেটি পাঁচ বছর পরে ২০ কোটি হওয়ার কথা ছিল, সেটি কমে পাঁচ কোটিতে গেছে। বাকি বিজ্ঞাপন ভারতীয় চ্যানেলের মাধ্যমে বাংলাদেশে প্রদর্শন করা হচ্ছিল, যেটি আইন বর্হিভূত। এরকম আরো অনেক কোম্পানি বছরে ৫০০ থেকে এক হাজার কোটি টাকার বিজ্ঞাপন অন্য দেশে চলে গেছে। টাকাটাও চলে যাচ্ছে।বাংলাদেশের শিল্পকে সুরক্ষা দেয়ার জন্য আমরা আইনটি প্রয়োগ করার উদ্যোগ গ্রহণ করছি। আইন প্রয়োগ করার আগে দু’মাস ধরে প্রচারণা করেছি। টেলিভিশন চ্যানেলের পক্ষ থেকে দাবি উপস্থাপন করা হয়েছে। আমরা তিন দফা নোটিশ দিয়েছি।

এরপরও যখন দেখানো হচ্ছে, ১ তারিখে আমরা দেখতে পেলাম যে ডাউনলিংক করে বিদেশি চ্যানেল দেখায় সেখানে বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। তখন আমরা আইন মোতাবেক নোটিশ দিয়েছি। সাতদিনের মধ্যে তাদেরকে কারণ দর্শাতে বলেছি, তারা নোটিশের জবাব দিক। জবাব দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে সিদ্ধান্ত হবে। আমরা কোনো চ্যানেল বন্ধ করিনি।তথ্যমন্ত্রী সংস্থা দু’টিকে পরামর্শ দিয়ে বলেন, তারা সংশ্লিষ্ট চ্যানেলগুলোর কাছে ক্লিন ফিড চাইতে পারে অথবা তারা যন্ত্র স্থাপন করে ক্লিন করে প্রদর্শন করতে পারে।চ্যানেল দুটি (জি-বাংলা, জি-সিনেমা) দেখা যাচ্ছে না কেন- প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, সেটা তারাই বলতে পারবে। আমরা বলেছি বিজ্ঞাপন ছাড়া যেন দেখানো হয় এবং বিজ্ঞাপনসহ দেখানো হচ্ছে, আইন লঙ্ঘন হচ্ছে।

সরকার এ বিষয়ে কতোটা কঠোর থাকবে- প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, আপনারা সঙ্গে থাকলেৃ, আমি সহযোগিতা চাই। আমরা নতুন কোনো আইন প্রয়োগ করছি না। দেশের স্বার্থে, দেশের গণমাধ্যম এবং টেলিভিশনের স্বার্থে, এবং টেলিভিশনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সাংবাদিক-কলাকুশলীর স্বার্থে প্রচলিত আইন প্রয়োগ করা শুরু করেছি।আপনারাই বলেছেন, অনেক টেলিভিশন চ্যানেলে বেতন দেওয়া হচ্ছে না। তিন মাস ধরে বেতন দেওয়া হয়না। হঠাৎ করে ছাঁটাই করে দেওয়া হয়। তখন আমরা যখন টেলিভিশন মালিকদের সঙ্গে কথা বলেছি তারা বলেছে আমাদের পরিচালনা ব্যয় বেড়ে গেছে। বিজ্ঞাপন ছাড়া টেলিভিশনের কোনো আয় নেই।

বাংলাদেশে বিদেশি টিভি চ্যানেলের মাধ্যমে বিজ্ঞাপন প্রচারের কারণে দেশীয় টিভি চ্যানেলগুলো লোকসানে পড়ছে জানিয়ে ওইসব চ্যানেলে দেশি বিজ্ঞাপন বন্ধের দাবি করে আসছিল দেশের টিভি চ্যানেলের মালিকরা।