তৈরি পোশাক কারখানা মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ ভবন সিলগালা করেছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)।মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল)সন্ধ্যা ৭টায় ভবনটি সিলগালা করা হয়।

বিজিএমইএ ভবন সিলগালা করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাতিরঝিল প্রকল্পের পরিচালক রায়হানুল ফেরদৌস।উচ্চ আদালতের নির্দেশনা থাকায় বিজিএমএইএ ভবন ১২ এপ্রিলের মধ্যে ভেঙে ফেলার বাধ্যবাধকতা তৈরি হয়। বাংলা নববর্ষ ও সাপ্তাহিক ছুটি শেষে মঙ্গলবার ভবনটি ভাঙার কার্যক্রম শুরু করে রাজউক।এদিন ওই ভবনে থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোর আসবাবপত্র সরিয়ে নিতে দুই ঘণ্টা সময় দেওয়া হয়। এছাড়া ওই ভবনের ইউটিলিটি সংযোগও বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। সন্ধ্যা ৭টার দিকে বিজিএমইএ ভবন থেকে আসবাপত্র সরিয়ে নেওয়া সম্পন্ন হয়। এরপর রাজউক ভবনটি সিলগালা করে।

এদিকে, কন্ট্রোলড ডিমোলিশন বা নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণ পদ্ধতি ব্যবহার করে বিজিএমইএ ভবন ভাঙা হবে বলে জানিয়েছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)।

মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে বিজিএমইএ ভবন অপসারণ করতে এসে রাজউকের হাতিরঝিল প্রকল্পের পরিচালক রায়হানুল ফেরদৌস এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ভবন অপসারণের অংশ হিসেবে আজ আমরা প্রথমে ইউটিলিটি সার্ভিসের কাজ বন্ধ রেখেছি। ভবনে যারা আছেন তাদের মালামাল সরিয়ে নেওয়ার জন্য রাজউক কর্তৃপক্ষ আজ বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত তাদের সময় দিয়েছেন। এরমধ্যে তাদের মালামাল সরিয়ে নিতে হবে।তিনি আরও বলেন, এরইমধ্যে আমরা ভবনটি চীনা বিশেষজ্ঞদের দেখিয়েছি। তারা সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন। মূলত ভবনটি কন্ট্রোল ডিমোলেশনের মাধ্যমে অপসারণ করা হবে। ইতিপূর্বে র‌্যাংগস ভবন অপসারণ করতে গিয়ে বেশকিছু সমস্যা হয়েছে। আমরা চাই সেরকম ঘটনা যাতে আর না ঘটে। এজন্য যতো ধরনের সতর্কতা আছে তা অনুসরণ করা হবে।

রায়হানুল ফেরদৌস বলেন, ভবনটি ভাঙার অংশ হিসেবে আমরা এখানকার সেবা সার্ভিসগুলো বিচ্ছিন্ন করছি। যারা ভাড়াটিয়া আছেন তাদেরকে মালামাল সরিয়ে নেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছি।

এসময় তার সঙ্গে ছিলেন রাজউকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও পরিচালক (প্রশাসন) খন্দকার অলিউর রহমান। তিনি বলেন, বিকাল পাঁচটার পর আমরা ভবনটি সিলগালা করে দেবো এবং আইনগত ব্যবস্থা নেবো।

প্রসঙ্গত, হাতিরঝিলে রাজউকের অনুমোদন ছাড়া গড়ে বিজিএমইএ ভবন। অবৈধভাবে গড়ে ওঠায় ভবনটি ভাঙা নিয়ে আলোচনা ওঠে প্রায় ৯ বছর আগে। ২০১০ সালে একটি জাতীয় দৈনিকে ভবনটি নির্মাণে রাজউকের অনুমোদন না থাকার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়। পত্রিকাটির প্রতিবেদনটি হাইকোর্টে নজরে এলে ভবনটি কেন ভাঙা হবে না, তা জানতে চেয়ে স্বপ্রণোদিত হয়ে রুল জারি করেন আদালত। পরে ২০১১ সালের ৩ এপ্রিল বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ বিজিএমইএ ভবন ভেঙে ফেলার রায় দেন।

এরপর আপিল ও রিভিউ খারিজে ভবনটি ভাঙার সিদ্ধান্ত বহাল থাকলে দফায় দফায় সময় প্রার্থনা করে বিজিএমইএ। গত বছরের ৩ এপ্রিল বিজিএমইএ’কে এক বছরের সময় দেন সর্বোচ্চ আদালত। আদালতের বেঁধে দেওয়া সময় শেষ হয় এ বছরের ১২ এপ্রিল। নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ায় বিজিএমইএ ভবন ভাঙার প্রক্রিয়া শুরু হলো।এরইমধ্যে উত্তরায় নিজেদের নতুন কমপ্লেক্স তৈরি করেছে বিজিএমইএ। ১৩ তলা ভবনটির ষষ্ঠতলার নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। গত ৩ এপ্রিল ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিজিএমইএ কমপ্লেক্সের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানেই নিজেদের কার্যক্রম স্থানান্তর করেছে বিজিএমইএ ।