বাংলাদেশি নাগরিক ও অভিনেতা ফেরদৌস আহমেদের বিরুদ্ধে নতুন অভিযোগ তুললো ভারতীয় ক্ষমতাসীন দল বিজেপি। ফেরদৌসের মাধ্যমে তৃণমূলের সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর সম্পৃক্ততার অভিযোগও তুলেছে দলটি।

ভারতীয় ভিসায় কালো তালিকাভুক্ত বাংলাদেশি চলচ্চিত্র অভিনেতা ফেরদৌসের প্রচারে জামায়াত-তৃণমূল যোগের অভিযোগ করে এনআইএ তদন্ত চেয়েছেন উত্তর কলকাতা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী রাহুল সিনহা।

পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষে নির্বাচনী প্রচার চালানোর দায়ে মঙ্গলবার ফেরদৌসের ভিসা বাতিল ও কালো তালিকাভুক্ত করেছে। পাশাপাশি তাকে দেশে ফেরত যাওয়ার নির্দেশ দেয় ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। মঙ্গলবার রাতেই দেশে ফিরে এসেছেন দুই বাংলায় জনপ্রিয় এই চলচ্চিত্র অভিনেতা।

বাংলাদেশি এই নায়ককে ঘিরে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে তুমুল বিতর্ক চলছে। এর মাঝেই পশ্চিমবঙ্গ শাখা বিজেপির নেতা রাহুল সিনহা অভিযোগ করে বলেছেন, জামায়াতে ইসলামির সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের যোগাযোগে ফিরদৌস আহমেদকে নির্বাচনী প্রচারে নামানো হয়েছে।

নির্বাচনী প্রচারে ফেরদৌসের অংশগ্রহণের ব্যাপারে উত্তর কলকাতার বিজেপির এই প্রার্থী বলেন, অন্য দেশের নাগরিক কীভাবে ভারতের গণতান্ত্রিক নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারে? এটা আসলে তৃণমূলের সঙ্গে জামায়াতে ইসলামির যোগের প্রচার করা হয়েছে।

তবে ফেরদৌস-কাণ্ডে বিজেপিকে কাঠগড়ায় তুলেছেন তৃণমূল নেতা ফরহাদ হাকিম। ফরহাদ হাকিম বলেন, অকারণে জলঘোলা করছে বিজেপি। কে কার হয়ে প্রচার করল, তা নিয়ে কারও কিছু যায় না। কিন্তু বিজেপির পায়ের তলার মাটি সরে গিয়েছে। তাই তারা জলঘোলা করছে।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি ফেরদৌসকে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জে তৃণমূল প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারে যোগ দিতে দেখা যায়। তিনি হেমতাবাদ, বাঙালবাড়ি, নওদা, বিষ্ণুপুর, মাড়াইকুড়া ও চইনগরের বিভিন্ন এলাকায় গাড়িতে করে তৃণমূল প্রার্থীর পক্ষে রোড শোতে অংশ নেন। এই কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী কানহাইয়ালাল আগরওয়াল। এরপর ফেরদৌস বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন। ওই দিন ফেরদৌসের সঙ্গে ছিলেন টালিউডের দুই তারকা অঙ্কুশ হাজরা ও পায়েল। এ ব্যাপারে রাজ্য নির্বাচন কর্মকর্তা আরিজ আফতাবের কাছে অভিযোগ জানায় বিজেপি।

জানা গেছে, রায়গঞ্জ লোকসভা আসনে রয়েছে প্রচুর সংখ্যালঘু মুসলিমের বাস। জনসংখ্যার হারে মুসলিমরা এখানে বেশি। এখানে বিজেপির প্রার্থী দেবশ্রী চৌধুরী, কংগ্রেসের প্রার্থী দীপা দাসমুন্সি এবং সিপিএম প্রার্থী বর্তমান বিদায়ী সাংসদ মোহাম্মদ সেলিম।

এই ঘটনার পর তীব্র প্রতিবাদ করেছে বিজেপি। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন, ‘তৃণমূল বিদেশি তারকা এনে নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ করেছে। এমন ঘটনা এর আগে দেখিনি। কাল হয়তো ইমরান খানকে প্রচারে ডাকবে তৃণমূল।’ তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, ‘এভাবে ভারতের একটি রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী প্রচারে বিদেশি তারকা আসতে পারেন? তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আইন মানেন না। ভোটার কম পড়লে রোহিঙ্গাদের ডেকে আনবেন। এই ঘটনার নিন্দা জানাই।’