হাতিরঝিলে গড়ে তোলা বিজিএমইএ ভবন ভাঙতে ফের সময় চেয়ে আবেদন করা হলে তাতে আদালত নমনীয় হবেন না বলে মনে করেন রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) সুপ্রিম কোর্টের নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।বিজিএমই ভবন ভাঙতে ফের সময় চেয়ে আবেদন করা হলে আদালত অবমাননা হবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, এ ধরনের কোনো আবেদন করা হলে তা আদালতে যাবে এবং সে বিষয়ে আদালতই সিদ্ধান্ত নেবেন।

এদিকে, আদালতের বেঁধে দেওয়া সময়সীমা শেষ হওয়ার পরও বিজিএমইএ ভবন ভাঙার কাজ শুরু করতে পারেনি রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। ভবনটি থেকে মালামাল সরিয়ে নেওয়ার সুযোগ রেখে ভবন ভাঙার জন্য দরপত্র আহ্বান করেছে সংস্থাটি।

এর মধ্যেই ভবনটি ভাঙতে ফের সময় চেয়ে গত ১১ এপ্রিল আপিল বিভাগে আবেদন করে বিজিএমইএ। যদিও আবেদনটি আদালতে উত্থাপন করা হয়নি। পরে বিজিএমইএর এ আবেদন প্রত্যাহার চেয়ে গতকাল মঙ্গলবার (১৭ এপ্রিল) বিজিএমইএ সভাপতিতে আইনি নোটিশ পাঠান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ওই আবেদন প্রত্যাহার না করা হলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে মামলা দায়ের করবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।

হাতিরঝিলে গড়ে তোলা বহুতল বিজিএমইএ ভবনকে হাতিরঝিলের ক্যান্সার উল্লেখ করে ভবনটি অপসারণের নির্দেশ দিয়ে রায় দেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত। এরপর একাধিকবার আবেদন করে ভবনটি অপসারণে কয়েক দফা সময় নেয় বিজিএমইএ। সর্বশেষ গত বছর আদালত বিজিএমইএকে বলেন, ভবিষ্যতে আর সময় চাওয়া হবে না মর্মে মুচলেকা দিলে তবেই আদালত ভবন ভাঙতে সময় বাড়িয়ে দেবেন।

আদালতের নির্দেশনা মেনে বিজিএমইএ মুচলেকা দিলে ২ এপ্রিল ভবন ভাঙতে এক বছর ১০ দিন সময় দেন আপিল বিভাগ। এ বছরের ১২ এপ্রিল ছিল ওই সময়ের শেষ দিন। তবে ওই দিন ভবনটি ভাঙতে পারেনি রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। বাংলা নববর্ষ ও সাপ্তাহিক ছুটি শেষে ভবন ভাঙার আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়ার শুরু হয় মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল)। ওই দিন সকাল থেকে ভবনের প্রতিষ্ঠানগুলোকে মালপত্র সরিয়ে নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়। সন্ধ্যা ৭টার পর ভবনের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান সিলগালা করে দেওয়া হয়। সাড়ে ৭টার দিকে ভবনের মূল ফটকটিও করে দেওয়া হয় সিলগালা।

রাজউক জানায়, ডিনামাইট ব্যবহার করে ভেঙে ফেলা হবে বিজিএমইএ ভবনটি, যার নজির বাংলাদেশে আর নেই। তবে এর জন্য কোনো প্রতিষ্ঠানকে আগে থেকে নির্বাচিত করেনি রাজউক। পরে বুধবার (১৭ এপ্রিল) এ বিষয়ে একটি দরপত্রআহ্বান করে সংস্থাটি। ২৪ এপ্রিল পর্যন্ত দরপত্র জমা দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। ২৫ এপ্রিল বাছাই করা হবে, কোন প্রতিষ্ঠানকে ভবন ভাঙার কাজটি দেওয়া হবে। তবে দরপত্রে বিজিএমইএ ভবন ভাঙার জন্য উপযুক্ত কোনো প্রতিষ্ঠান না পাওয়া গেলে রাজউক বিদেশি পরামর্শক ভাড়া করে ভবনটি নিজেই ভাঙতে পারে বলে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।