বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী জোবাইদা রহমানের নামে ইংল্যান্ডে থাকা তিনটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দের আদালতের আদেশটি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল একথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আদালতের আদেশ পাওয়ার পর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) রাজধানীর কাওরান বাজারের আম্বর শাহ শাহী মসজিদে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এই কথা বলেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দের আদালত যে আদেশ দিয়েছেন তা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পাঠানো হবে। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সরাসরি কিছু করার সুযোগ নেই ইঙ্গিত দিয়ে তিনি বলেন, বিদেশে পুলিশের কোনও কর্মকান্ড থাকলে সেটি ইন্টারপোলের সহায়তায় করা হয়। তবে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দের বিষয়টি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে পাঠানো হবে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তার তিনদিনের চীন সফর সম্পর্কেও কথা বলেন। তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের যাতে মিয়ানমার ফেরত নেয়, সে বিষয়ে চীন বাংলাদেশকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছে। চীন যাতে রোহিঙ্গাদের ফেরতে ভূমিকা রাখে সে বিষয়ে তাদের অনুরোধ করা হয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) ও বেইজিং পুলিশের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। এছাড়াও মাদক নির্মূলে চীন তাদের সফলতা দেখিয়েছে। তারাও মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে। চীন বাংলাদেশকে মাদক নির্মূলে সহযোগিতা করবে। এছাড়াও পুলিশ, ফায়ার ফাইটারদের প্রশিক্ষণের বিষয়েও চীন সহযোগিতা করবে বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

প্রসঙ্গত, তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানের ব্রিটেনের একটি ব্যাংকের তিনটি হিসাব জব্দ (ফ্রিজ) করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) দুর্নীতি দমন কমিশনের এ বিষয়ে একটি পারমিশন মামলার শুনানি শেষে সন্ধ্যায় ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক কেএম ইমরুল কায়েস এ আদেশ দেন। জব্দের আদেশ হওয়া তিনটি ব্যাংক হিসাবই স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক ইউকের।স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক ইউকে লোগো আবেদনে বলা হয়, তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং এবং অর্থ পাচারপূর্বক বিদেশে বিনিয়োগ সংক্রান্ত অভিযোগের অনুসন্ধানকালে দুদক তদন্ত টিম গঠন করা হয়। ব্রিটেনের স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক ইউকে পরিচালিত হোয়াইট অ্যান্ড ব্লু কনসালট্যান্ট লিমিটেড শীর্ষক প্রতিষ্ঠানের হিসাব থেকে তারেক রহমান এবং জোবাইদা রহমানের তিনটি ব্যাংক হিসাবে ৫৯ হাজার ৩৪১ দশমিক ৯৩ ব্রিটিশ পাউন্ড স্থানান্তরের এফআইইউ, ইউকে-এর নির্দেশে আটক আছে।

উক্ত অর্থ তারা হস্তান্তর বা রূপান্তরের চেষ্টা করছেন। তাই উল্লেখিত অর্থের বিষয়ে এখনি কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হলে তা বেহাত হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের ১৭ ধারা মতে রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা সম্ভব হবে না, বিধায় রাষ্ট্র ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের ১৪ ধারা মতে ওই ব্যাংক অ্যাকাউন্টগুলো জব্দ করা একান্ত প্রয়োজন।

দুদকের সূত্র জানায়, আদেশটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ব্রিটেনের অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিসে পাঠানো হবে। সেখানে অ্যাটর্নি জেনারেল অফিস সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে পাঠিয়ে আদেশ কার্যকর করবেন।