ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যাকান্ডের এজহারভুক্ত আসামী জোবায়ের আহাম্মদ ও জড়িত থাকার অভিযোগে আটক ইফতেখার হোসেন রানা ও এমরান হোসেন মামুনকে আজ রোববার আদালতে উপস্থাপন করছে পিবিআই।

এ ঘটনায় এ পর্যন্ত মামলার এজহারের ৮ জনসহ মোট ২০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে ৭ জন। ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ড দেয়া হয়।

আদালতে ইফতেখার ও এমরানের রিমান্ড চাওয়া হবে। এদিকে নুসরাত জাহান রাফি হত্যাকান্ডের এজহারভুক্ত আসামী জোবায়ের আহাম্মদ ৫ রিমান্ড শেষে জবানবন্দী দেয়ার জন্য আদালতে উপস্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছে পিবিআই।

অপরদিকে, রাফি হত্যার ঘটনায় দুই সন্দেহভাজনকে শনিবার পৃথক অভিযান চালিয়ে রাঙ্গামাটি ও কুমিল্লা থেকে আটক করা হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও ফেনী পিবিআইয়ের ওসি মো. শাহ আলম জানান, ওইদিন বিকালে রাঙ্গামাটি টিএন্ডটি এলাকা অভিযান চালায় পিবিআই। এসময় একটি বাড়ি থেকে ইফতেখার হোসেন রানাকে আটক করা হয়। আটক ইফতেখার সোনাগাজীর চর গণেশ এলাকায় বাসিন্দা। একইদিন কুমিল্লার পদুয়ার বাজার এলাকা থেকে এমরান হোসেন মামুনকে আটক করা হয়। আদালতে আজকে তাদের রিমান্ড শুনানী অনুষ্ঠিত হবে।

এদিকে, ফেনীতে স্কুলছাত্র আরাফাত হোসেন শুভ হত্যার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবীতে রোববার দুপুরে ফেনী জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে নিহতের পরিবার।

স্মারকলিপিতে শুভ হত্যার সঠিক তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেফতারের দাবি জানানো হয়। এসময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) পিকেএম এনামুল করিমের হাতে স্বারকলিপিটি তুলে দেন নিহতের জেঠা ইসমাইল, ইউসুপ, জাহাঙ্গীর, সাপ্তাহিক ফেনী সমাচারের নির্বাহী সম্পাদক মো. আমজাদুর রহমান রুবেল ও মানবাধিকার কর্মী এম. এ দেওয়ানী।

এনিয়ে শনিবার ফেনীর ট্রাংক রোডস্থ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে সর্বস্তরের ফেনীবাসী। মানববন্ধনে ও সমাবেশে বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও নানা শ্রেণী পেশার লোকজন একাত্মতা প্রকাশ করে অংশ নেন।

উল্লেখ্য, ৬এপ্রিল শনিবার সকালে আলিম পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসায় যায় নুসরাত জাহান রাফি। মাদরাসার এক ছাত্রী সহপাঠি নিশাতকে ছাদের উপর কেউ মারধর করেছে এমন সংবাদ দিলে সে ওই বিল্ডিংয়ের তিন তলায় যায়। সেখানে মুখোশপরা ৪/৫জন ছাত্রী তাকে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে মামলা ও অভিযোগ তুলে নিতে চাপ দেয়। সে অস্বীকৃতি জানালে তারা গায়ে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় সোমবার রাতে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা ও পৌর কাউন্সিলর মুকছুদ আলমসহ ৮ জনের নাম উল্লেখ করে সোনাগাজী মডেল থানায় মামালা দায়ের করেন অগ্নিদগ্ধ রাফির বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান।

এর আগে ২৭ এপ্রিল ওই ছাত্রীকে নিজ কক্ষে নিয়ে যৌন নীপিড়নের অভিযোগে মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে আটক করে পুলিশ। সে ঘটনার পর থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন। এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।