লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলায় পূর্ব শত্রুতার জেরে লাভলু হোসেন (২৮) নামে একজনকে হাত-পা বেধে গলাকেটে হত্যার চেষ্টা করার অভিযোগ উঠেছে। ভাগিনাকে বাঁচাতে এগিয়ে এসে মামা বাদল শেখও তাদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর জখম হয়। এ ঘটনায় ৮ জনকে আসামী করে থানায় লিখিত অভিযোগ করেন লাভলুর পিতা।

রবিবার (২২ এপ্রিল) সকাল ৯টায় উপজেলার সিঙ্গিমারী ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের উচা পুল নামক এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে। আহত লাভলু ঐ এলাকার আব্দুল জলিলের ছেলে।

আসামীরা হলেন, উপজেলার সিঙ্গিমারী ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের আব্দুল সামাদের ছেলে আমিনুর রহমান(২৩), মেয়ে সালমা বেগম (২১), স্ত্রী মনোয়ারা বেগম (মনো) (৫০), মৃত্যু পাতারু শেখের ছেলে ছালামুদ্দিন (৫২), ছালামুদ্দিনের ছেলে শফিকুল ইসলাম (২৮), শফিকুলের স্ত্রী মনি খাতুন (২২), মৃত্যু জামাল উদ্দিনের স্ত্রী জোহরা বেগম (৫৫) এবং আমের আলীর ছেলে আলমগীর হোসেন (২৫)।

আহত লাভলুর বাবা আব্দুল জলিল জানান, গত ৫ বছর পুর্বে উপজেলার সিঙ্গিমারী ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের আব্দুল সামাদের মেয়ে সালমার সাথে বিয়ে হয় তার ছেলে লাভলুর। তাদের সংসারে একটি মেয়ে সন্তানও আছে। ঘরসংসার চলাকালীন সময়ে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের মাঝে মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয়। ফলে ৩ বছর পুর্বে তারা উভয় উভয়কে যৌথভাবে তালাক দেন। এরপরে লাভলু অন্যত্র বিয়ে করে সংসার চালাচ্ছেন। কিন্তু বিষয়টি ভালভাবে নেননি সালমাসহ তার পরিবার। তারা লাভলুর ক্ষতি করার জন্য সুযোগ খুজতে ছিলো।

এমতাবস্থায় আজ সোমবার সকাল ৯ টার সময় বাড়ি হতে হাতীবান্ধা আসার পথে সিঙ্গিমারী ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের পাকা রাস্তার উচা পুল এলাকায় লাভলুকে আসামীরা বাশের লাঠি, লোহার রড, ধারালো ছোড়া দিয়ে এলোপাতাড়িভাবে মারপিট করে। এতে তার শরীরের বিভিন্ন যায়গায় ফুলাজখম হয়। লাভলুর আত্মচিৎকারে তার ছোট মামা বাদল (১৫) এগিয়ে এলে তাকে ধারালো ছোড়া দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে আসামীরা।
এরপর আসামীরা তাদের পার্শ্ববর্তী বাড়িতে লাভলুকে তুলে নিয়ে তার হাত-পা বাধে। এসময় আসামী শফিকুল তার হাতের ধারালো ছোড়া দিয়ে লাভলুর পিঠের বিভিন্ন যায়গায় চোট মারে এবং আমিনুর রহমান তার হাতের ছোড়া দিয়ে হত্যার উদ্যেশ্যে লাভলুর গলা কাটার চেষ্টা করে।এদিকে খবর পেয়ে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় লাভলুকে উদ্ধার করে হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান পরিবারের লোকজন।

এখর পেয়ে থানা পুলিশ হাসপাতালে এসে গুরুতর আহত লাভলু ও বাদলকে দেখে যান।

হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আবাসিক ডাক্তার নাইম (আবাসিক) বলেন, লাভলুর পিঠ ও গলার বিভিন্ন যায়গায় ধারালো অস্ত্র দারা আঘাত করে গুরুতর জখম করা হয়েছে। শরীরের কাটা স্থান সেলাই করে তাকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। তবে লাভলু সম্পুর্ন আশংকামুক্ত নন বলে জানান ঐ ডাক্তার।

এবিষয়ে জানতে আসামিদের বাড়িতে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি।

হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত প্রাপ্ত ককর্মকর্তা (ওসি) উমর ফারুক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সাংবাদিকদের জানান, ঘটনাটি শোনার সাথেসাথেই পুলিশ মেডিকেলে গিয়ে রোগীর অবস্থা দেখে এসেছে। এবিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তপুর্ব অপরাধীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।