শ্রীলঙ্কায় বোমা হামলায় নিহত প্রিয় জায়ান চৌধুরীকে শেষবারের মতো দেখলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার দুপুর ২টা ৩৫ মিনিটে বনানীতে জায়ানের নানা ফুপাত ভাই শেখ ফজলুল করিম সেলিমের বাসায় যান শেখ হাসিনা। এক সময় যে জায়ানের পদচারনায় বনানীর ২/এ সড়কের ৯ নম্বর বাড়িটি মুখরিত থাকত সেখানে এখন বিরাজ করছে শোকের ছায়া। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাসায় প্রবেশের পর সেখানে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়।শেখ সেলিমসহ আত্মীয়-স্বজনরা এ সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিহত জায়ানের রুহের মাগফেরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারকে সান্ত¡না দেন।

পরে বিকাল ৩টা ৫০ মিনিটে সেখান থেকে বের হন প্রধানমন্ত্রী।আসরের পর জানাজা শেষে বনানী কবরস্থানে জায়ানকে দাফন করার কথা রয়েছে।শিশু জায়ান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছেও ছিল অনেক প্রিয়।

তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক ফেইসবুকে লিখেছেন, জায়ান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনারও বেশ প্রিয় ছিল। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা হলেই দাদু বলে জড়িয়ে ধরত।শান্তশিষ্ট জায়ান উত্তরার সান-বীম স্কুলের দ্বিতীয় গ্রেডে পড়ত। সে ছিল ক্রিকেট পাগল আর সাকিব আল হাসানের ভক্ত।

এর আগে দুপুর পৌনে ১টায় শ্রীলঙ্কান এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে জায়ানের মরদেহ শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আনা হয়। দুপুর দেড়টার জায়ানের মরদেহ আনা হয় শেখ সেলিমের বাসায়।

আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য সাংসদ শেখ সেলিমের মেয়ে শেখ আমেনা সুলতানা সোনিয়া তার স্বামী মশিউল হক প্রিন্স ও দুই ছেলেকে নিয়ে শ্রীলঙ্কায় গিয়েছিলেন বেড়াতে।ইস্টার সানডের প্রার্থনার মধ্যে রোববার গির্জা ও হোটেল মিলিয়ে আটটি স্থানে বোমা হামলায় রক্তাক্ত হয় শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বো। এর মধ্যে একটি হোটেলে উঠেছিল ওই পরিবার।হামলার সময় হোটেলের নিচতলার রেস্তোরাঁয় সকালের নাস্তা করতে গিয়েছিলেন প্রিন্স ও তার বড় ছেলে জায়ান। ছোট ছেলে জোহানকে নিয়ে শেখ সোনিয়া ওই সময় হোটেলের কক্ষে ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোববার সন্ধ্যায় ব্রুনেইয়ে প্রবাসীদের দেওয়া এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে নিজের স্বজনদের বোমা হামলার শিকার হওয়ার কথা জানান। প্রিন্স হাসপাতালে আর জায়ান নিখোঁজ জানিয়ে সবার দোয়া চান তিনি।পরে রাতে জায়ানের মৃত্যুর করেন ওই পরিবারের ঘনিষ্ঠ একজন।হামলায় জায়ানের বাবা প্রিন্সও গুরুতর আহত হয়েছেন। কলম্বোর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকায় তাকে এখনই দেশে সম্ভব হচ্ছে না। কয়েক দফা অস্ত্রোপচারের পর প্রিন্সকে আইসিইউতে রাখা হয়েছে। তার অবস্থা শঙ্কামুক্ত নয় বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।