পরিবেশ,বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেছেন, ‘শব্দদূষণের কারণে মানুষের মাথা ধরা, শ্রবণ শক্তি হ্রাস, মেজাজ খিটখিটে হওয়া, মনসংযোগ নষ্ট ও অনিদ্রাসহ নানা ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হয়। শব্দদূষণ সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত করে শিশু ও বয়স্কজনদের। বর্তমানে শব্দদূষণ সহনশীলতার মাত্রা অতিক্রম করছে।

বুধবার শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে আন্তর্জাতিক শব্দ সচেতনতা দিবস উপলক্ষে পরিবেশ অধিদপ্তর আয়োজিত সভায় এসব কথা বলেন শাহাব উদ্দিন।

মন্ত্রী আরো বলেন, নগরায়ন, শিল্পায়ন, মানুষের দৈনন্দিন কাজকর্ম, যানবাহন, যান্ত্রিক ও বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদির অপরিকল্পিত ব্যবহারের কারণে দূষণ সৃষ্টি হয়। আর অপরিকল্পিত ব্যবহার হয়ে থাকে অব্যবস্থপনা কিংবা আইনি দুর্বলতা কিংবা আইনের প্রয়োগহীনতার কারণে। শব্দদূষণ মানুষের স্বাস্থ্য ও পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। বিশেষ করে গর্ভবতী মা এবং হৃদরোগে আক্রান্ত মানুষের জন্য উচ্চ মাত্রার শব্দ খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। শব্দদূষণের ফলে মানুষের মানসিক ও শারীরিক সমস্যা তৈরি হয় এবং শিশুদের মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত করে। রাস্তাঘাটে অপ্রয়োজনীয় হর্ন বাজিয়ে যারা শব্দ দূষণ করে তাদেরকে সচেতন করে তোলার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন মন্ত্রী।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পরিবেশ উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার বলেন, আমাদের দেশে শব্দদূষণের মাত্রা এতটাই বেড়েছে যে বড় বড় শহরগুলোতে শব্দদূষণের কারণে মানুষের জীবনযাত্রা ব্যহত হচ্ছে প্রতিনিয়ত। মানুষ ক্রমাগতভাবে হয়ে উঠছে অসহিষ্ণু। প্রতিটি মানুষের আচরণ যেন মানবিকতার মাত্রা ছাড়িয়ে এক অভিনব নৈরাজ্যের দ্বারপ্রান্তে উপনীত হচ্ছে। মানুষের পারিবারিক জীবন ছাড়িয়ে এর বিরূপ প্রভাব পড়ছে সামাজিক এমন কী রাষ্ট্রীয় জীবনে। শব্দদূষণের কারণে মানুষের জীবনযাত্রা যতখানি বিঘ্নিত হচ্ছে তা আর কোনো ভাবে হচ্ছে না। অথচ স্বাভাবিকভাবে এটা বোঝার উপায় নেই।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পরিবেশ সচিব আবদুল্লাহ আল মোহসীন চৌধুরী বলেন, মানুষের অসচেতনতা এবং অবহেলা শব্দ দূষণের জন্য প্রধানত দায়ী। জনসচেতনতার অভাবে শব্দদূষণ আজ মাত্রাতিরিক্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণের জন্য আমাদের প্রয়োজনীয় আইন আছে। কখনো কখনো মানুষ আইন না জানার কারণে আইনের পরিপন্থী কাজ করা, আবার কারো কারো আইনের প্রতি শ্রদ্ধাহীনতা এসব কারণে আমরা অনেক ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়ছি। শব্দদূষণ এমন একটি ব্যাপার যা আমাদের দেশের বেশির ভাগ মানুষই এটা যে অপরাধ বা অনুচিত কাজ সেটাই মনে করে না। তাই বিদ্যমান আইনটি জনগণের মাঝে ব্যাপক প্রচার করে এ ব্যাপারে জনসচেতনতা তৈরি করা প্রয়োজন।

পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. সুলতান আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব যথাক্রমে ড. মো. বিল্লাল হোসেন, এ এম মনসুরুল আলম, মো. মোজাহেদ হোসেন,ড. নূরুল কাদির, মোহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী প্রমুখ।