ফেনীর সোনাগাজীর মাদরাসা শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় মোট ১৬ জনের জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। তাদের সবাই গ্রেফতার আছেন। আগামী মে মাসেই মামলার চার্জশিট দেওয়া হবে।

রোববার (২৮ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে পিবিআই সদর দফতরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন পিবিআই প্রধান ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার।

পিবিআই প্রধান বলেন, নুসরাত হত্যা ঘটনায় অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাসহ ১৬ জনের জড়িত থাকার প্রমাণ মিলেছে। একে একে সবাইকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদের মধ্যে ৯ জনই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, আসামিদের মধ্যে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা ও শাহাদাত হোসেন শামীমকে নতুন করে রিমান্ডে আনা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ১৬৪ ধারায় আদালতে অধ্যক্ষের জবানবন্দি নেওয়া হবে। আগামী মে মাসেই এই হত্যা মামলার চার্জশিট আদালতে জমা দেওয়া হবে।

বনজ কুমার বলেন, এর আগে অনেক মামলার ক্ষেত্রে দেখা গেছে, কেউ বিদেশে রয়েছে, কেউ পলাতক রয়েছে, আবার কাউকে খুঁজে পাওয়া যায় না। ফলে আদালতে বিচার বিলম্বিত হয়। নুসরাত হত্যা মামলার ক্ষেত্রে সব আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের সবাই এখন কারাগারে রয়েছেন। তাই এই মামলার বিচার প্রক্রিয়ায় কোনো সমস্যা হবে বলে আশা করছি।

সোনাগাজীর ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার আলিম পরীক্ষার্থী ছিলেন নুসরাত জাহান রাফি। গত ৬ এপ্রিল পরীক্ষা দিতে গেলে তাকে কৌশলে মাদরাসার ছাদে ডেকে নিয়ে যান অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার অনুসারী শামীম, জাবেদ, জোবায়ের, পপি ও মনি। তারা নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। শরীরের প্রায় ৮০ শতাংশ দগ্ধ নুসরাতকে সংকটাপন্ন অবস্থায় ওই দিনই ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে ভর্তি করা হয়। চার দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে ১০ এপ্রিল রাত সাড়ে ৯টার দিকে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন নুসরাত।

এর আগে, নুসরাতকে নিজ কক্ষে ডেকে নিয়ে যৌন হয়রানির অভিযোগে গত ২৭ মার্চ অধ্যক্ষ সিরাজকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নুসরাতের মা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে। অধ্যক্ষ সিরাজ কারাগারে থেকেই সহযোগীদের মাধ্যমে মামলা তুলে নিতে চাপ ও হুমকি দেন নুসরাতের পরিবারকে। নুসরাতের পরিবার মামলা তুলে নিতে রাজি না হলে নুসরাতকে গায়ে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেন সিরাজ।