ফেনীর সোনাগাজীতে আগুনে পুড়িয়ে মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে হত্যার মামলায় পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাকসুদুর রহমানসহ চার আসামিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। শনিবার রাতে ফেনীর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসাইন তাদের কারগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

মাকসুদুর রহমান ছাড়া বাকি তিন আসামি হলো- সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার ইংরেজির প্রভাষক আফসার উদ্দিন, মোহাম্মদ শামীম ও আরিফুল ইসলাম।পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক মো. শাহ আলম জানান, চার আসামিকে পাঁচ ও তিন দিনের রিমান্ড শেষে শনিবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। তিনি জানান, আসামিদের জবানবন্দি নেওয়ার কাজ শেষ পর্যায়ে। সহসায় ওই মামলার অভিযোগপত্র তৈরি করবে পিবিআই।

পরিদর্শক শাহ আলম বলেন, নুসরাত হত্যায় ২২ জনকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পিবিআই। প্রধান আসামি অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলাসহ এ পর্যন্ত ১২ জন দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে। এর মধ্যে সরাসরি হত্যাকান্ডে অংশ নেওয়া দুই তরুণীসহ পাঁচজন রয়েছে। নুসরাতের গায়ে আগুন লাগাতে বোরকা পরে আসে দুর্বৃত্তরা। তারা তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেয়। ইতোমধ্যে কেরোসিন ও বোরকা বিক্রেতা ও বোরকা দোকানের কর্মচারী, নুসরাতের দুই বান্ধবী, মাদ্রাসার একজন নৈশপ্রহরী ও একজন পিয়নের সাক্ষ্য নিয়েছেন আদালত। এই সাতজনই মামলার গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী।

উল্লেখ্য; গত ২৭ মার্চ মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা কর্তৃক নুসরাতের শ্লীলতাহানির চেষ্টার ঘটনায় তাঁর মা বাদি হয়ে সোনাগাজী থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা ওই দিনই গ্রেপ্তার হয়েছেন। ৬ এপ্রিল মামলা তুলে নিতে রাজী না হলে নুসরাতকে পুড়িয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে মাদ্রাসার সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে নুসরাতের হাত-পা বেঁধে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেওয়া হয়। ১০ এপ্রিল রাতে নুসরাত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে মারা যায়।

সোনাগাজীর চাঞ্চল্যকর নুসরাত হত্যা মামলায় এ পর্যন্ত ২১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ১৮ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ড মঞ্জুর হয়েছে। এ দুইজনসহ ১২জন আসামী নুসরাত হত্যাকান্ডে তাঁদের সরাসরি সম্পৃক্ততা ও দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।৬ এপ্রিল সকালে নুসরাত জাহান রাফিকে হাত-পা বেঁধে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেয়। ১০ এপ্রিল রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যান।