বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এবং সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া দুর্নীতি মামলা আগামী ছয় মাসের মধ্যে বিচারিক আদালতকে নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে মামলাটি বাতিলের আবেদন (ফৌজদারি রিভিশন) খারিজ করে দিয়েছেন আদালত।

সোমবার (১৩ মে) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।এর পাশাপাশি মামলাটির ওপর থেকে স্থগিতাদেশও প্রত্যাহার করেছেন আদালত। বর্তমানে মামলাটি ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪-এ সাক্ষীর পর্যায়ে রয়েছে।
আদালতে দুদকের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল হেলেনা বেগম চায়না। জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন ছিলেন আসামিপক্ষে।

ঘটনার বিবরণে দেখা যায়, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন সমবায় সমিতি লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে বাজারমূল্যের চেয়ে কম মূল্যে প্লট বরাদ্দ দেওয়ার অভিযোগে বিএনপি নেতা এবং সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী আলমগীর কবিরসহ চারজনের বিরুদ্ধে রাজধানীর শাহবাগ থানায় মামলা দায়ের করা হয়। দুদকের উপ-পরিচালক যতন কুমার রায় বাদী হয়ে ২০১৪ সালের ৬ মার্চ মামলাটি দায়ের করেন।আলমগীর কবির ছাড়াও মামলার অপর তিন আসামি হলেন জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের সদস্য (ভূমি ও সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা) মো. আজহারুল হক, মুনসুর আলম ও মতিয়ার রহমান।

পরে মির্জা আব্বাসসহ অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের ১১ ফেব্র“য়ারি আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।অভিযোগে বলা হয়, গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী থাকার সময় ২০০৬ সালে মির্জা আব্বাস ও একই মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী আলমগীর কবিরের হস্তক্ষেপে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের (এনএইচএ) কর্মকর্তারা ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতির মাধ্যমে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন সমবায় সমিতি লিমিটেডকে বাজারমূল্যের চেয়ে কম মূল্যে প্লট বরাদ্দ দেন। তারা পরস্পর যোগসাজশে নিজেরা আর্থিকভাবে লাভবান হয়ে গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের ১৮ কোটি ৯১ লাখ ৩০ হাজার ৯০০ টাকা মূল্যের ৭ একর জমি মাত্র ৩ কোটি ৩৮ লাখ ৮০ হাজার টাকায় বরাদ্দ দেওয়ার মাধ্যমে আসামিরা প্রায় ১৫ কোটি ৫২ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে দুদকের প্রাথমিক অনুসন্ধানে প্রমাণিত হয়েছে।

এরপর ২০১৬ সালের ৮ ডিসেম্বর মামলাটি বাতিলের জন্য মির্জা আব্বাস হাইকোর্টে ফৌজদারি রিভিশন দায়ের করেন। ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে একই বছরের ১৪ ডিসেম্বর মামলাটি কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল ও মামলার কার্যক্রমে স্থগিতাদেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।