ফেনীর মাদরাসা ছাত্রী নুসরাত হত্যার ঘটনায় বিতর্কিত ও সদ্য প্রত্যাহার হওয়া পুলিশ সুপার এস.এম জাহাঙ্গীর আলম সরকারকে সংবর্ধনা দিয়েছে জেলা পুলিশ প্রশাসন। রবিবার রাতে জেলা পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে ও সোমবার বিকালে পুলিশ লাইনে পৃথক দুটি বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

পুলিশের একাধিক সূত্র জানায়, রবিবার সন্ধ্যায় ফেনীর পুলিশ সুপার এসএম জাঙ্গীর আলম সরকারকে ফেনী থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ সদর দপ্তরে সংযুক্ত করার পর রাতে তারাবিহর নামাযের পর জেলা পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়। পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবর্ধনায় সাবেক পুলিশ সুপার এসএম জাহাঙ্গীর আলম সরকার, বর্তমান পুলিশ সুপার কাজী মনিরুজ্জামানসহ পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, ফেনীর সকল থানার ওসিসহ জেলা হেডকোয়াটারে অবস্থানরত পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

একইভাবে সোমবার বিকালে জেলা পুলিশ লাইনে আরেকটি সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানেও সাবেক পুলিশ সুপার এসএম জাহাঙ্গীর আলম সরকার, বর্তমান পুলিশ সুপার কাজী মনিরুজ্জামান, ফেনীর সকল থানার ওসিসহ পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।এদিকে রবিবার রাতে জেলা পুলিশ প্রশাসন, ফেনী নামে ফেসবুক পাতায় পুলিশ সুপার এস.এম জাহাঙ্গীর আলম সরকারের বিদায় সংবর্ধনার ব্যানার প্রকাশ হলে সমালোচনার ঝড় ওঠে।এসপিকে শাস্তিমূলক প্রত্যাহারের পরও পুলিশের অতি উৎসাহি এমন আচরণে নেতিবাচক মন্তব্য করেন অনেকে।

এ বিষয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিক’র (সুজন) ফেনীর সাধারণ সম্পাদক মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, নুসরাত হত্যা মামলায় দায়িত্বে অবহেলায় পুলিশ সুপার এস.এম জাহাঙ্গীর আলম সরকারকে পুলিশ সদর দপ্তরে শাস্তিমূলক প্রত্যাহার করা হয়েছে। এরপরও তাকে সংবর্ধনা দেয়া পুলিশের লেজুড়বৃত্তিতা ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের বহি:প্রকাশ।এ বিষয়ে জানতে নব নিযুক্ত পুলিশ সুপার কাজী মনিরুজ্জামানের সাথে একাধিক বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায় নি।

গত ১২ মে মাদরাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যাকান্ডে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে পুলিশ সুপার এস.এম জাহাঙ্গীর আলম সরকারকে শাস্তিমূলক প্রত্যাহার করা হয়েছে। তাকে ফেনী থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ সদর দপ্তরে সংযুক্ত করা হয়েছে।এর আগে নুসরাত হত্যায় পুলিশের গাফিলতি তদন্তে ১৩ এপ্রিল পুলিশ সদর দপ্তরের উপ-মহাপরিদর্শক এসএম রুহুল আমিনকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। মহাপরিদর্শকের কাছে ৩০ এপ্রিল কমিটি তাদের প্রতিবেদন জমা দেয়। প্রতিবেদনে সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন ও এসআই ইকবালকে সাময়িক বরখাস্ত ও তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থার সুপারিশ করা হয়। এ ছাড়া এসপি জাহাঙ্গীর আলম সরকার ও এসআই আবু ইউসুফের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা ও তাদের নন-অপারেশনাল ইউনিটে বদলির সুপারিশ করা হয়।