সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখমুজিবুর রহমান ১৯৭০ সালের ১২ ই নভেম্বর মহাপ্রলয়নকারী বন্যার আঘাতে লন্ডভন্ড হয়ে যাওয়া ভোলার বিচ্ছিন্ন উপজেলা মনপুরায় গরীব অসহায় সাধারণ মানুষের পাশে ত্রাণ নিয়ে বন্যার পরবর্তী সময় এসেছিলেন। তিনি নিজ হাতে ত্রাণ ও বিতরণ করেন।

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের নীলাভূমি রূপালী দ্বীপের সহজ সরল মানুষের ভালবাসায় মুগ্ধ হয়ে তিনি মনপুরাকে ভালবেসে ফেলেছেন। চর্তুদিকে মেঘনা নদী বেষ্ঠিত সারি সারি কেওরাবাগান পাখির কলকাকলিতে মুখরিত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অভিরাম দৃশ্য দেখে তিনি মুগ্ধ হয়েছেন। সৌন্দর্যের এই আভাস ভূমিকে নিজের মনের মত গড়তে চেয়েছেন। তাই তিনি চিওবিনোদনের জন্য শান্তির নগড় হিসেবে মনপুরাতে চিন্তানিবাস করার জন্য পরিকল্পনা করেছিলেন। একটি চিন্তানিবাস তৈয়রির জন্য ইট, বালু, সিমেন্ট, রড পাঠিয়ে ছিলেন। কাজের টেন্ডার হয়েছিল। চিন্তানিবাস তৈয়রির জন্য ১নং মনপুরা ইউনিয়নের আন্দিড়পাড় মৌজা বসরতউল্যাহ চৌধুরী ৫ একর জমি দিয়েছিলেন। রামনেওয়াজ বাজার সংলগ্ন বড় দীঘির পাশে ইট বালু স্তুপ করে রাখা হয়েছিল। সেই ইট দিয়ে একটি বিল্ডিং নির্মাণ করে দীর্ঘদিন পর্যন্ত কালের সাক্ষি হয়ে দাড়িয়েছিল। গত ২০০৮-২০০৯ সালে মেঘনার তীব্র ভাঙনে সেই নিদর্শন টি নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। আজও তা বাস্তবায়িত হয়নি বঙ্গবন্ধুর চিন্তনিবাস।

সারা বছর কর্মব্যস্ততম সময় কাটার পর একটু সময় মুক্ত বাতাস ও কিছুটা সময় বিশ্রামে থাকার জন্য বঙ্গবন্ধু চিন্তানিবাস গড়তে চেয়েছিলেন। কিন্তু জাতির জনকের সেই স্বপ্ন আজও বাস্তবায়িত হয়নি। পর্যটনের অপার সম্ববনা লুকিয়ে আছে পুরানো এ মনপুরা দ্বীপে।

মনপুরা উপজেলা সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আ. লতিফ ভূইয়া বলেন, বন্যা পরবর্তী সময় ১৯৭২ সালে মনপুরাতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এসেছিলেন। তখন তিনি ছাত্র নেতা ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর সফর সঙ্গী ছিলেন তৎকালীন বঙ্গবন্ধুর রাঝনৈতিক সচিব সাবেক বাণিজ্য মন্ত্রী তোফায়েল আহম্মদ, ভোলা জেলা আ’লীগ সভাপতি মোশারফ হোসেন মজনু মোল্লা, দৌলতখানের সাবেক এমপি মোঃ নজরুল ইসলাম, বোরহানউদ্দিন সাবেক এমপি চুন্নু মিয়া ও বসরতউল্যাহ চৌধুরী।

আওয়ামীলীগ সরকার ১৯৯৬, ২০০৮ ও ২০১৪, ২০১৮ সালে ক্ষমতায় আসার পর মনপুরার সাধারণ মানুষ মনে করেছিল এবার হয়ত জাতির জনকে সেই স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে। কিন্তু সেই স্বপ্ন স্বপ্নই রয়েগেল।বর্তমান আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায়। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর শেখমুজিবুর রহমানের কণ্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জনত্রেী শেখ হাসিনা তার পিতার সেই সোনার স্বপ্ন মনপুরাতে বঙ্গবন্ধুর চিন্তানিবাস গড়ার যে সপ্ন দেখেছিলেন তা দ্রুত বাস্তবায়ন করবেন এমনটাই প্রত্যাশা করছেন মনপুরারবাসী। বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজড়িত মনপুরা যেন জাতির জনকের স্বপ্ন পুরণ হয়। বঙ্গকণ্যা শেখ হাসিনার দিকে তাকিয়ে আছেন মনপুরার মানুষ।

মনপুরা-চরফ্যশন আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির সভাপতি আবদুল্যাহ আলইসলাম জ্যাকব এমপি জাতির জনকের স্বপ্ন বস্তবায়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি মনপুরাকে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করার জন্য কাজ করছেন। পর্যটন মন্ত্রণালয় থেকে একটি বিশেষ টিম মনপুরা এসে ঘুরে গেছেন। এখনও তা আলোর মুখ দেখেনি।

মনপুরা উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান শেলিনা আকতার চৌধুরী বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর শেখমুজিবুর রহমান এর সপ্ন চিন্তানিবাস গড়ার তা আমরা উদ্যোগ নিয়েছি।

মনপুরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বশির আহমেদ বলেন, এ দ্বীপটি ভোলা জেলার মূল ভূখন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হলেও নানা উপকরণ ছড়িয়ে আছে এ দ্বীপে। মনপুরার অবকাঠামোগত সুযোগ সুবিধা, ভাল মানের হোটেল, যোগাযোগ ব্যাবস্থার উন্নতিসহ বিভিন্ন সুবিধা বাড়াতে পারলে পর্যটকদের আকৃষ্ট করার মত সৌন্দর্যলুকিয়ে আছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরুপ নীলাভূমি রূপালী দ্বীপ মনপুরায়। আর বঙ্গবন্ধুর চিন্তানিবাস বাস্তবয়ন হলেই মনপুরা হবে পর্যটকদের আকর্ষণীয় ও দর্শনীয় জায়গা ।