লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির সভাপতি কর্ণেল (অব.) অলি আহমদ বলেছেন, ‘কিছু কিছু বিএনপি নেতা খালেদা জিয়া মুক্তি পাক তা চান না। ওই সব নেতারা মনে করেন বেগম জিয়া মুক্তি পেলে তাদের গুরুত্ব কমে যাবে।’ আজ শুক্রবার রাজধানীর লেডিস ক্লাবে এলডিপির উদ্যোগে এক ইফতার মাহফিল পূর্ব সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

উদাহরণ তুলে ধরে অলি বলেন, ‘ অনেক সময় দেখা যায়, দেওয়াল নিচু হলে ছাগল লাফ দিয়ে পার হয়ে যায়। পাশে মালিক দাঁড়ায় থাকে। অনেক সময় মালিকের চাইতে ছাগলের উচ্চতা বেশি হয়। ছাগল হয়তো মনে করে, আমি মালিকের চাইতে বেশি উচু। রাজনীতিতেও এই ধরণের অনেক ছাগল আছে। তারা মনে করে খালেদা জিয়ার চাইতেও তারা বড় নেতা। তিনি যদি জেল থেকে বের হয়, তাদের অসুবিধা হতে পারে।’

অলি আহমদ বলেন, গত বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবে বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে বলেছিলাম, ‘খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হয় আপনারা নেতৃত্ব গ্রহণ করুন অথবা নেতৃত্ব দেন। এটা কথার কথা নয়। সত্যিকার অর্থেই আমরা বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই।’

তিনি আরও বলেন, ‘তারা আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে সারাদেশ ঘুরে ঘুরে জনমত সৃষ্টি করবো। এটি এলডিপির ব্যানারে হতে হবে-এমনটা নয়। যে কোনো ব্যানারে বেগম জিয়ার মুক্তি চাওয়া যেতে পারে। ২০ দলীয় জোট ভাঙ্গার ষড়যন্ত্র হচ্ছে-এ প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। নির্বাচনের আগেও একই ষড়যন্ত্র হয়েছিল।’

অলি আরও বলেন, ‘আমাদের কর্মসূচি হবে শান্তিপূর্ণ। তবে সরকারের বিরুদ্ধে নয়। আমরা বেগম জিয়ার মুক্তি নিশ্চিত করতে চাই। কেউ যদি মনে করে আমরা কারও দাস হিসেবে কাজ করব, তাহলে ভুল করবে। ২০০৫ সালে আমরা মনে করেছিলাম, রাজনীতিতে ভুল হচ্ছে। সে জন্য উপমহাদেশে একটা নজিরবিহীন ঘটনা হয়েছিল। তিনজন মন্ত্রীসহ ৩২ জন সংসদ সদস্য নিয়ে আমরা এলডিপি গঠন করি। এটা বিএনপির বিরুদ্ধে নয়, সে সময়ে সামগ্রিক ব্যবস্থার বিরুদ্ধে আমাদের বিদ্রোহ ছিল।’

অলি আহমদ বলেন, ‘আজকের ব্যবস্থা আরও শতগুণ অবনতি হয়েছে। এখন আমরা কী ঘরে বসে থাকব? ২০-দলীয় জোটে একে অপরের বিরুদ্ধে কথা বলব? বেগম জিয়া এখনো কারাবন্দী। শুধু তা-ই নয়, লক্ষাধিক নেতা-কর্মী কারাগারে, আমরা তাদের সম্পর্কে চিন্তাও করছি না। সমগ্র দেশ আজ জেলখানায় পরিণত হয়েছে। আমরা এর জন্য সংগ্রাম করব, বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে জনমত গঠন করব।’

ইফতার মাহফিলে এলডিপির মহাসচিব ড. রেদোয়ার আহমেদের সভাপতিত্বে ও সিনিয়র যুগ্মমহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিমের পরিচালনায় আরও অংশ নেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, কল্যাণ পার্টি চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, ডি এল’র সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন মনি, ন্যাপ ভাসানীর চেয়ারম্যান আজহারুল ইসলাম, জাগপা মহাসচিব খন্দকার লুৎফর রহমান, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মহিউদ্দিন ইকরাম প্রমুখ।