রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রচণ্ড কালবৈশাখী ঝড়ের মধ্যে অন্তত আট জনের মৃত্যু হয়েছে। ছাউনি, দেয়াল ও গাছের নিচে চাপা এবং বজ্রপাতে নিহতের এ ঘটনা ঘটে। গতকাল শুক্রবার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে ঝড়ে আহতও হয়েছেন অনেক। ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ঘরবাড়ি ও ফসলের, নিহতদের মধ্যে ঢাকায় ৪ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরে ২ জন, নওগাঁর পোরশায় ২ জন ও বগুড়া সদরে একজনের নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

আমাদের প্রতিনিধিদের পাটানো প্রতিবেদনে জানা গেছে; শুক্রবার সন্ধ্যায় ঝড়ের মধ্যে রাজধানীর উত্তর বাড্ডায় একটি ভবনের দেওয়াল ধসে দুই জন মোরা গেছেন। এ ছাড়া জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে অস্থায়ী প্যান্ডেল ভেঙে একজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ১৪ জন। এর মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছে পুলিশ।

ঢামেক পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এসআই বাচ্চু মিয়া বলেন, নিহতের নাম শফিকুল ইসলাম (৩৬)। এ ঘটনায় আহত অন্তত ১৪ জনকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে আনা হয়েছে।

বাড্ডা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) গোলাম মোস্তফা জানান, উত্তর বাড্ডার প্রাণ আরএফএল সেন্টারের পাশে অস্থায়ী পার্কিংয়ের দেওয়াল ধসে বুলবুল বিশ্বাস (২৮) ও তপন (২৭) নামে দুজনের মৃত্যু হয়। আশঙ্কজনক অবস্থায় একজনকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ: সদর উপজেলায় বালিয়াডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান তরিকুল ইসলাম জানান, শুক্রবার বিকেল সোয়া ৪টার দিকে তার ইউনিয়নের শ্রীরামপুর এলাকায় ঝড়ের মধ্যে বজ্রপাতে দুই জন নিহত হয়েছেন; এ ঘটনায় আরও একজন আহত হয়েছেন।

নিহতরা হলেন- সদর উপজেলার শ্রীরামপুর গ্রামের হজরত আলীর ছেলে রেজাউল হোসেন (৪০) ও মোতালেব হোসেনের ছেলে মো. মুসা (৩৫)। আহত হজরত আলীকে (৬০) চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

চেয়ারম্যান তরিকুল বলেন, বিকেলে কৃষি শ্রমিকরা ধানের জমিতে কাজ করছিলেন। হঠাৎ ঝড় শুরু হলে বজ্রপাতে রেজাউল ও মুসা ঘটনাস্থলেই মারা যান।

নওগাঁ: নওগাঁর জেলা প্রশাসক মিজানুর রহমান জানান, শুক্রবার বিকেলে নওগাঁর পোরশা উপজেলায় ঝড়বৃষ্টির সময় বজ্রপাতে দুইজন নিহত হয়েছেন; আহত হয়েছেন আরও একজন। নিহতরা হলেন- উপজেলার গানইর গ্রামের আহাদ আলীর ছেলে শফিনুর ইসলাম (৩২) ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার পাঠালিপাড়া গ্রামের মতিউর রহমানের ছেলে হাসান আলী (৩৫)।

জেলা প্রশাসক বলেন, বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে আধা ঘণ্টা ধরে পোরশা, সাপাহার, মান্দা, রাণীনগর, আত্রাই, বদলগাছী ও সদর উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবলবেগে ঝড় বয়ে যায়। বজ্রপাত হলে মাঠে থাকা ধান কাটা শ্রমিক শফিনুর ও হাসান নিহত হন। এছাড়া বজ্রপাতে গানোইর গ্রামের আব্দুল্লার ছেলে বুলবুল (৩২) আহত হয়েছেন বলে তিনি জানান।

বগুড়া: বগুড়া ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার বজলুর রশিদ জানান, শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে শহরতলীর রাজাপুরের শ্যামবাড়িয়ায় ধানবোঝাই একটি ট্রাক ঝড়ের কবলে পড়ে। একটি গাছ ভেঙে ট্রাকের ওপর পড়লে ঘটনাস্থলেই একজনের মৃত্যু হয়। নিহত শহীদুল শহরের বাসিন্দা। তিনি পেশায় ট্রাকের হেলপার। তাৎক্ষণিকভাবে তার বাবার নাম জানা যায়নি।