ঈদযাত্রায় ট্রেনের টিকিট পেতে রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজনকে তার মেয়ে একটি তালিকা দিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি তা গ্রহণ করেননি। আবার মন্ত্রীর একান্ত সচিবের (পিএস) স্ত্রীর মাধ্যমে অনুরোধ এসেছিল টিকিটের। পিএস সেটি প্রত্যাখ্যান করেছেন। এমনকি পিএস তার অফিস কক্ষের দরজায় লিখে রেখেছেন- ‘এখানে টিকিটের সুপারিশ করা হয় না।’ রেলপথমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন এবং তার একান্ত সচিব আতিকুর রহমান এই ঘটনায় দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন। যদিও দুজনই এখন টিকিটের চাপে রয়েছেন।

এ ব্যাপারে রেলমন্ত্রী বলেন, ‘মন্ত্রী হিসেবে চাপ আমার উপর বেশি। কিন্তু আমাকে তো একটা সিস্টেমের ভেতর দিয়ে যেতে হবে। অনিয়মটাকে তো আর নিয়মে পরিণত করতে পারি না। তাই মেয়ের আবেদনও প্রত্যাখ্যান করেছি।’ মন্ত্রী আরও জানান, তার মেয়ের কাছে টিকিটের জন্য অনেক অনুরোধ এসেছিল। সে অনুযায়ী মেয়ে তার কাছে অগ্রিম টিকিট চেয়ে একটি তালিকা দেয়।

মন্ত্রী বলেন, ‘আমি বলেছি এভাবে টিকিটের কোনো সুযোগ নেই। মোবাইল অ্যাপস ব্যবহার করলে এই অনুরোধের প্রয়োজন নেই।’ এদিকে মন্ত্রীর একান্ত সচিব আতিকুর রহমানের কাছে এক নিকটাত্মীয় সিলেট যাওয়ার টিকিট চান। তিনি তাকে সকালে স্টেশনে গিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কাটার পরামর্শ দেন। এরপর ওই আত্মীয় তার স্ত্রীকে ফোন করেন। স্ত্রীও টিকিটের জন্য অনুরোধ করেন আতিকুর রহমানকে। পরে বাসায় ফিরে সেই আত্মীয়কে তার বোঝাতে হয়েছে যে এভাবে ফোন করে টিকিট জোগাড় করা অনৈতিক কাজ। এটি তার পক্ষে সম্ভব নয়।

আতিকুর রহমান আরও বলেন, ‘প্রতিদিন এভাবে টিকিট দেওয়ার সুপারিশ প্রত্যাখান করতে করতে বহু বন্ধু-আত্মীয়-সহকর্মীর সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়ে গেছে।’ মন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, ‘টিকিট ব্লকিং আর চলবে না। রেলওয়েতে দীর্ঘদিন ধরে ভিআইপির নামে টিকিট ব্লক করে রাখা হতো। যা প্রভাবশালীরা অনুরোধপত্র দিয়ে নিতেন। এখন এটি পুরোপুরি বন্ধ করতে বলা হয়েছে। কেবলমাত্র মন্ত্রী, সচিব, বিচারপতি, আইজিপি পদমর্যাদার কেউ নিজে যদি ট্রেনে ভ্রমণ করেন তাহলে কেবল তারা টিকিট পাবেন, অন্যথায় নয়।’

আজ বুধবার (২২ মে) সকাল ৯টা থেকে শুরু হয়েছে ঈদযাত্রার ট্রেনের টিকিট বিক্রি কার্যক্রম। যাত্রীদের সুবিধা বিবেচনা করে এবার ঢাকার পাঁচটি আলাদা স্থান থেকে বিভিন্ন অঞ্চলের ট্রেনের টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে।