রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতারক চক্রের মূলহোতা বারেক হাজীসহ ৫ প্রতারককে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব-২। এর আগে গত ২ মার্চ এই চক্রের ২২ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। আজ রোববার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান র‍্যাব-৪ এর অধিনায়ক (সিও) অতিরিক্ত ডিআইজি চৌধুরী মঞ্জুরুল কবির।

তিনি জানান, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২ মার্চ র‍্যাবের অভিযানে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতারকচক্রের ২২ জনকে গ্রেপ্তার করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, বারেক সরকার ওরফে বারেক হাজী তাদের প্রতারকচক্রের গুরু এবং মূলহোতা। তারা দীর্ঘদিন ধরে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অফিস ভাড়া করে প্রতারণার কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল।এরই ধারাবাহিকতায় র‍্যাব বারেক হাজীকে গ্রেপ্তার করার জন্য মাঠে নামে। অবশেষে গতকাল ২৫ মে গভীর রাতে রাজধানীর দারুসসালাম থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে প্রতারকচক্রের মূলহোতা মো. বারেক সরকার ওরফে বারেক হাজীকে তার ৪ সহযোগীসহ গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার অন্যরা হলেন,মো. হাবিবুর রহমান(২৪), মো. জাকির হোসেন (৫৮), মো. আক্তারুজ্জামান (২৮) ও মো. শাহরিয়ার তাসিম (১৯)।

তিনি আরও জানান, এ সময় বারেক হাজীর কাছ থেকে ১টি বিদেশি পিস্তল, ১টি ম্যাগজিন ও ২ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় এক বা একাধিক প্রতারণার মামলা রয়েছে।

কে এই বারেক হাজী?

র‍্যাব সূত্রে জানা যায়, রাজধানীর প্রতারক চক্রটির মূলহোতা বারেক সরকার ওরফে বারেক হাজী। তিনি ১৯৫৬ সালে কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি থানার বাহের চর গ্রামে জন্মগ্রহণ করে। শিক্ষা জীবনে প্রাথমিকের গন্ডি পার হতে পারেনি। তার বাবা-মা ১৮ বছর বয়সে তাকে সৌদি আরব পাঠিয়ে দেয়। কিন্তু সেখানে গিয়েও সে তার জীবনে প্রতিষ্ঠা লাভ করতে পারেনি। বরং প্রতারণার নতুন নতুন কৌশল আয়ত্ত্ব করে মাত্র দুই বছর প্রবাস জীবন শেষ করে বাংলাদেশে ফিরে আসে। বাংলাদেশে এসে সে সুনির্দিষ্ট কোনো পেশায় আত্মনিয়োগ না করে প্রতারণা করে অর্থ আত্মসাতের বিভিন্ন কলাকৌশল শুরু করে।

প্রতারণার কাজে তার তীক্ষ দক্ষতা, সুচিন্তিত কর্ম কৌশল ও কর্ম পরিকল্পনা অল্প দিনের মধ্যে তাকে বিরাট সাফল্য এনে দেয়। দিনে দিনে সে তার প্রতারণা রাজ্যের পরিধি ও প্রতারণার কৌশল বাড়াতে থাকে। এক পর্যায়ে সে প্রতারণার একটি সংগঠন তৈরি করে। যার মূল উদ্দেশ্য ছিল, সাধারণ মানুষকে ঠকিয়ে অর্থ আত্মসাৎ করা। তার গ্রুপের প্রতিটি সদস্য অত্যন্ত সু-কৌশলে মানুষের সঙ্গে প্রতারণার কার্যটি ভালভাবে রপ্ত করে তারা ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন গ্রুপ তৈরি করে অফিস ভাড়া নিয়ে বিভিন্ন কৌশলে মানুষের কাছ থেকে প্রতারণা করে অর্থ আত্মসাৎ করে আসছিল।