রাজধানীর মালিবাগ মোড়ে পুলিশের গাড়িতে বিস্ফোরিত ককটেলটি আগে থেকেই পাতা ছিল বলে জানিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া।

সোমবার (২৭ মে)সকালে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বিস্ফোরণে আহত রিকশাচালক লাল মিয়াকে দেখতে গিয়ে তিনি এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, মালিবাগ মোড়ে বিস্ফোরিত ককটেলটি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি শক্তিশালী ছিল। এটি একটি ইম্প্রোভাইজড ককটেল। আগে থেকেই তা গাড়িতে পেতে রাখা হয়েছিল।

এসময় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন তিনি। ডিএমপি কমিশনার বলেন, একটি মহল জনমনে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য এ ধরনের অপতৎপরতা চালাচ্ছে। তারা পুলিশের মনোবল নষ্ট করার চেষ্টা করছে।

তিনি আরও বলেন, ‘ঘটনার পর আমাদের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট ও বোম্ব ডিসপোজাল টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তারা আলামত সংগ্রহ করেছে। প্রাথমিকভাবে আমাদের কাছে মনে হয়েছে, আগে থেকেই গাড়িতে ককটেল পেতে রাখা হয়েছিল।

রোববার (২৬ মে) রাত ৮টা ৫৩ মিনিটে মালিবাগ মোড়ে পুলিশের একটি পিকআপ ভ্যানে বিস্ফোরণ হয়ে আগুন লেগে যায়। এতে পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) রাশেদা আক্তার, রিকশাচালক লাল মিয়া ও একজন পথচারী আহত হন। এ ঘটনায় আহতদের চিকিৎসা ব্যয় রাষ্ট্র বহন করবে বলে জানিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার। রাজধানীর মালিবাগে রোববার (২৬ মে) রাতে ককটেল বোমা বিস্ফোরণে এক পুলিশ সদস্যসহ দুইজনের আহত হওয়ার ঘটনার দায় স্বীকার করেছে জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস)।

জঙ্গিদের তৎপরতার খবর জানানো অনলাইন পোর্টাল সাইট ইন্টেলিজেন্স এ তথ্য জানিয়েছে। পোর্টালটি বলছে, ঢাকায় বাংলাদেশি পুলিশের গাড়িতে বোমা হামলার দায় আইএস স্বীকার করেছে।

এ নিয়ে ঢাকায় তিনটি হামলার দায় স্বীকার করল মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি গোষ্ঠী আইএস। আর গত একমাসের মধ্যেই এটি আইএসের দ্বিতীয়বারের মতো ঢাকায় হামলার দায় স্বীকারের ঘটনা।

সর্বশেষ গত ২৯ এপ্রিল রাত পৌনে ৮টার দিকে গুলিস্তানের ডন প্লাজার সামনে পুলিশ সদস্যদের লক্ষ্য করে ককটেল বোমা ছোঁড়া হয়। এতে ট্রাফিক কনস্টেবল নজরুল ইসলাম (৩৭), লিটন (৪২) ও কমিউনিটি পুলিশ মো. আশিক (২৮) আহত হন। ওই রাতেই আইএস এই হামলার দায় স্বীকার করে বলে জানিয়েছিল সাইট ইন্টেলিজেন্স।

আর ঢাকার গুলশানে হলি আর্টিজান হোটেলে জঙ্গি হামলা ছিল আইএসের দায় স্বীকারের প্রথম ঘটনা। ২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে পাঁচ জঙ্গি হামলা চালিয়েছিল হলি আর্টিজান হোটেলে। এতে ইতালির ৯ জন, জাপানের সাত জন, ভারতের একজন ও দুইজন বাংলাদেশি নাগরিক নিহত হন। জিম্মি ছিলেন বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিকরা। পরদিন ভোরে বিশেষ কমান্ডো বাহিনীর অভিযানে প্রাণ হারান পাঁচ জঙ্গি, উদ্ধার করা হয় জিম্মিদের।