ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র পরিষদের (ডাকসু) ভিপি নুরুল হক নুর বলেছেন, ছাত্রলীগের কার্যক্রম সম্প্রতি জঙ্গি হামলার সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ বলে মনে হচ্ছে। পবিত্র রমজানে ইফতারে হামলা করে তারা একটি সাম্প্রদায়িক শক্তিতে পরিণত হচ্ছে। কিছুদিন আগে আপনারা দেখেছেন পয়লা বৈশাখের কনসার্টে তারা আগুন লাগিয়ে দেয়। ছাত্রলীগের মতো একটি ঐতিহ্যবাহী সংগঠন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে সরে যাচ্ছে। তাদের তৎপরতা জঙ্গি কার্যক্রমের দিকে ধাবিত হচ্ছে।

বুধবার (২৯ মে) সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই কথা বলেন। বগুড়ায় তার ওপর হামলার প্রতিক্রিয়া জানাতে তিনি এই সংবাদ সম্মেলন ডাকেন।

ভিপি নুর বলেন, গত রবিবার পুলিশকে অবহিত করে আমি বগুড়ায় সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের ইফতার পার্টিতে যোগ দিতে যাই। পুলিশ আমাকে যাওয়ার অনুমতি দিলো। এরপর আমি সেখানে একটি লাইব্রেরির কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলতে যাই। এ সময় বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাইমুর রহমান এবং আজিজুল হক কলেজের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রউফসহ আমার সঙ্গে যারা ছিল প্রত্যেকের ওপর অতর্কিতে জঙ্গি হামলার মতো আক্রমণ করে। তখন আমি নিচে অচেতন হয়ে পড়ে যাই। আমরা একটা কথা বলতে চাই, যে ছাত্রলীগ বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া সংগঠন, মুসলমানদের পবিত্র রমজানে ইফতারে হামলা করে তারা একটি সাম্প্রদায়িক শক্তিতে পরিণত হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, এর আগের দিন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হামলার ঘটনা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সভাপতিকে জানালে তারা বিচার করবেন বলে আমাকে আশ্বাস দেন। কিন্তু তারা কোনও ব্যবস্থা নেননি।

বগুড়ায় হামলার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘তারা পরিকল্পিতভাবে হামলা করেছে। ডাকসুর ভিপি নির্বাচিত হওয়ার পর পরিকল্পিতভাবে আমাকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে ছাত্রলীগ দিয়ে হামলা করানো হচ্ছে। ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, ছাত্রলীগের কমিটিতে আমাকে ১নং সহ-সভাপতি অথবা ১নং যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক পদে রাখা হবে। আমাকে তিনি বলেছেন, আমি ছাত্রলীগের পদ গ্রহণ করলে আমার সুযোগ-সুবিধা দেখবেন। আমি যেন অন্য কোনও রাজনীতি না করি, বা অন্যদিকে না যাই। আমি তাদের কথার সঙ্গে একমত হতে পারিনি। তাই তারা আমার ওপর হামলা চালায়। আমি আমার নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমি নিরাপত্তা চাই এবং আমার ওপর যে হামলাগুলো হয়েছে সব হামলার বিচার দাবি করছি। ডাকসু নির্বাচনের পর প্রধানমন্ত্রী আমাদের গণভবনে ডেকেছেন, আমরা সেখানে গিয়েছি। আমরা কোনও রাজনৈতিক দলের নই। হামলার বিচার না করলে ছাত্রসমাজ এর জবাব দেবে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন, যুগ্ম-আহ্বায়ক ফারুক হোসেন, ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক আকতার হোসেন প্রমুখ।