কৃষি যন্ত্রপাতি কিনতে সরকার কৃষকদের তিন হাজার কোটি টাকা প্রণোদনা দেবে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক।

বৃহস্পতিবার (৩০ মে) দুপুরে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ধানের বাজার মূল্য কার্যক্রম নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।কৃষিমন্ত্রী বলেন, কৃষিক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সমাধান কৃষিকে যান্ত্রিকীকরণ করা। এ দায়িত্ব সরকারের। যন্ত্র কিনতে ৫০ ভাগ ভর্তুকি দিচ্ছে সরকার, আর ৫০ ভাগ দেয় চাষিরা। হাওর ও উপকূলীয় এলাকায় সরকার দেয় ৭০ ভাগ আর চাষি দেয় ৩০ ভাগ।

সরকারের সীমাবদ্ধতার কথা উল্লেখ করে কৃষিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যেহেতু দেশ উন্নত হচ্ছে তাই যান্ত্রিকীকরণে আমাদের যেতেই হবে। এ কারণে বরাদ্দ বাড়ানো হবে। ৯ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব থেকে কৃষিতে ভর্তুকি দেওয়ার জন্য ইতোমধ্যে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেখান থেকে ৬ থেকে ৭ হাজার কোটি টাকা খরচ হয়। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তিন হাজার কোটি টাকা কৃষি যন্ত্রপাতি কিনতে প্রণোদনা দেবেন।

মন্ত্রী জানান, ধানসহ কৃষকের উৎপাদিত ফসলের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতের লক্ষ্যে চাষিদের সঠিক তালিকা প্রণয়ন করে ফসলের ক্রয়মূল্য অগ্রিম নির্ধারণ করে মৌসুমের শুরুতেই সরাসরি কৃষক পর্যায় থেকে ধান সংগ্রহসহ এমন বেশকিছু দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। এছাড়া ১০-১৫ লাখ মেট্রিকটন চাল রফতানি করার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে। ধানের ন্যায্যমূল্য দিতে দ্রুত পদক্ষেপ হিসাবে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ধান ক্রয় এবং চালের আমদানি শুল্ক ২৮ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫৫ শতাংশ করা হয়েছে বলে জানান কৃষিমন্ত্রী।

ড. রাজ্জাক বলেন, ধানসহ কৃষকের উৎপাদিত ফসলের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতের লক্ষ্যে সরকার কতিপয় দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ধানের ক্রয়মূল্য অগ্রিম নির্ধারণ করে মৌসুমের শুরুতেই সরাসরি কৃষক পর্যায় থেকে এ ফসল সংগ্রহ শুরু, চাষিদের সঠিক তালিকা প্রণয়ন করে সে মোতাবেক ক্রয় কার্যক্রম সম্পন্ন করা, সরকারি গুদামের ধারণ ক্ষমতা পর্যায়ক্রমে বৃদ্ধি, সরকারের ধান সংগ্রহের পরিমাণ পর্যায়ক্রমে বৃদ্ধি করে ৫০ লাখ মেট্রিকটনে উন্নীত এবং চাল আমদানি নিরুৎসাহিত করে রপ্তানিকে উৎসাহিত করা।এছাড়া কৃষক পর্যায়ে উৎপাদন ব্যয় কমানোর মাধ্যমে কৃষিকে লাভজনক করতে কৃষি মন্ত্রণালয় বেশ কিছু পদক্ষেপ নেবে বলেও জানান কৃষিমন্ত্রী।

এরমধ্যে নন-ইউরিয়া সারসহ অন্যান্য উপকরণে প্রণোদনা বৃদ্ধি, সেচের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিসহ ব্যয় কমানোর উদ্যোগ গ্রহণ এবং এক্ষেত্রে প্রয়োজনে প্রণোদনা আরও বৃদ্ধি করা হবে বলে জানান ড. রাজ্জাক।শ্রমিক সংকট নিরসনে যান্ত্রিকীকরণের বরাদ্দ বাড়ানো হবে জানিয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অনুকূলে বিগত অর্থবছরের রাজস্ব বাজেট বাবদ বরাদ্দকৃত ভর্তুকি খাতের তিন হাজার কোটি টাকা যান্ত্রিকীকরণ খাতে ব্যয় করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং সে মোতাবেক খসড়া প্রকল্পও প্রণয়ন করা হয়েছে।

উৎপাদন বৃদ্ধি, শ্রমিকের অভাব এবং ২০১৭ সালে হাওরে বন্যায় ধানের ক্ষতির পর আমদানি করার কারণে এবার ধানের মূল্য কমে গেছে জানিয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, এজন্যই সরকার কৃষি যান্ত্রিকীকরণের উদ্যোগ নিয়েছে।