সিরাজগঞ্জ এবং সুনামগঞ্জে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় রোববার ১৫ জন নিহত হয়েছে। সিরাজগঞ্জ: বগুড়া-নগরবাড়ী মহাসড়কের সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় যাত্রীবাহী বাস ও লেগুনার মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৯ জনে দাঁড়িয়েছে। আহত হয়েছেন আরও ২ যাত্রী। রোববার দুপুর পৌনে ১টার দিকে উপজেলার বোয়ালিয়া ব্রিজ এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। বর্তমানে ওই সড়কের উভয়পাশে যানচলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।

নিহতরা হলেন, উল্লাপাড়া উপজেলার কয়ড়াকৃষ্ণ গ্রামের রেজাউল করিমের ছেলে নুর ইসলাম (৪৫), একই গ্রামের জব্বারের ছেলে মোহাম্মদ (৩৫), সবুজ (২৫), জয়নাল সরকারের ছেলে জয়েন উদ্দীন (৫০), বেদকান্দি গ্রামের গফুর ফকিরের ছেলে মান্না (৪৫), পাগলা বোয়ালিয়া গ্রামের ইউনুছ আলীর ছেলে রেজাউল (৩৫), বড়হর গ্রামের ইনসাফ আলীর ছেলে আক্তার (৪২), হাফিজ ও সদর উপজেলার কোনাগাঁতী গ্রামের আব্দুল করিমের ছেলে হাফিজ উদ্দিন (৩২)।

হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ঢাকা থেকে যাত্রীবাহী পাবনা এক্সপ্রেস বাসটি (ঢাকা মেট্রো-১৪-৭৮৩৭) পাবনায় যাচ্ছিল। বগুড়া নগরবাড়ী মহাসড়কের বোয়ালিয়া ব্রিজ এলাকায় পৌঁছালে উল্লাপাড়া বাজার থেকে হাটিকুমরুলগামী একটি লেগুনার সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই লেগুনার চালকসহ আটজনের মৃত্যু হয়। পরে আহতদের উদ্ধার করে সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে হাফিজ নামে আরও এক যাত্রীর মৃত্যু হয় বলেও জানান ওসি।

সিরাজগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস ডিফেন্সের উপ-সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল হামিদ জানান, পাবনা এক্সপ্রেসের সঙ্গে লেগুনার মুখোমুখি সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই আট লেগুনা যাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় ওই সড়কের উভয়পাশে প্রায় এক ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ ছিল। বর্তমানে যানচলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।

সুনামগঞ্জ: সুনামগঞ্জের দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলায় বাস ও লেগুনার মধ্যে সংঘর্ষে ছয়জন নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন আরো সাতজন। তাদের মধ্যে গুরুতর আহত পাঁচজনকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুন অর রশিদ বলেন, আজ রোববার সকাল ৭টার দিকে উপজেলার পাথারিয়া বাজারে গনিগঞ্জ এলাকায় বাস ও লেগুনার মধ্যে সংঘর্ষে এ হতাহতের ঘটনা ঘটে।নিহতদের মধ্যে পাঁচজনের নাম জানা গেছে। এরা হলেন লেগুনাচালক দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার গাগলি গ্রামের মো. নোমান (২৪), একই উপজেলার দুর্বাকান্দা গ্রামের সাগর মিয়া (১৫), আফজাল মিয়া (১৬), মিলন মিয়া (১৮) ও শাল্লা উপজেলার মিকেশ চন্দ্র দাস (২২)।

স্থানীয়দের বরাত দিয়ে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রফিকুল ইসলাম বলেন, লিমন পরিবহনের বাসটি গতকাল রাতে ঢাকা থেকে ঈদের যাত্রী নিয়ে আজ ভোরে দিরাই আসে। যাত্রীদের নামিয়ে দিয়ে খালি বাসটি সকাল ৭টার দিকে আবার ঢাকার দিকে যাত্রা করে। অপরদিকে লেগুনাটি দিরাই-সুনামগঞ্জ সড়কের মদনপুর স্ট্যান্ড থেকে যাত্রী নিয়ে যাচ্ছিল।

পথে উপজেলার পাথারিয়া বাজারের গনিগঞ্জ এলাকায় বাস ও লেগুনার মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে লেগুনা ও বাসটি উল্টে রাস্তার দুই পাশে ছিটকে পড়ে। এতে ঘটনাস্থলেই ছয়জন মারা যান। আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়, যোগ করেন এসআই।দুর্ঘটনার খবর পেয়ে সুনামগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা এসে হতাহতদের উদ্ধার করেন বলে জানান জেলা স্টেশন অফিসার মিল্টন দাশ। তিনি আরো বলেন, ঘটনাস্থলে এসে লেগুনা থেকে ছয়টি লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে সেগুলো পুলিশে হস্তান্তর করা হয়। লাশগুলো ময়নাতদন্তের জন্য সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।দুর্ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী গনিগঞ্জ গ্রামের মো. আজাদ মিয়া (৫৫) গণমাধ্যমকে বলেন, দুর্ঘটনার পর বাসটি ছিটকে রাস্তার ডান পাশে এবং লেগুনাটি রাস্তার বামপাশে উল্টে পড়ে। লেগুনায় মোট ১৪ জন যাত্রী ছিলেন। তাদের বের করা হয়। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেওয়া হয়। স্থানীয়রাও হতাহতদের উদ্ধারে সহযোগিতা করেন।