ধারাবাহিক কমিটির দাবিতে ছাত্রদলের আন্দোলন সামলানো ও নতুন কমিটি গঠন নিয়ে বিএনপি উভয় সংকটে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। বুধবার (১১ জুন) রাজধানীর নয়াপল্টনে অবস্থিত নিজ চেম্বারে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।

ছাত্রদলের চলমান আন্দোলন ও কমিটির বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, এটা নিয়ে আমরা উভয় সংকটে। ছাত্ররা দীর্ঘদিন জেল খাটলো, মামলা এবং পুলিশের হয়রানির স্বীকার হলো। তাদের অবদানের বিনিময়ে কী পাবে? কী মূল্যায়ন হবে? দোষটা কার? দোষ কারও নয়। কারণ, গণতান্ত্রিক পরিবেশ না থাকলে কোনও রাজনৈতিক দল তার কাজটি সঠিকভাবে করতে পারে না।
তিনি আরও বলেন, ছাত্রদল বড় একটি সংগঠন। এই সংগঠনের আন্দোলন-সংগ্রামের অনেক ঐতিহ্য আছে। তবে অতীতের মতো ওদের আন্দোলনের ধারাবাহিক ঐতিহ্যটা নাই। কিন্তু তারপরও তো তারা প্রচেষ্টা করে।

ছাত্ররা কোথায় থাকবে প্রশ্ন রেখে গয়েশ্বর বলেন, তাদের থাকার কথা কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে। কিন্তু দীর্ঘ ১২ বছর ধরে তারা ক্যাম্পাসে যেতে পারে না। তাই তাদের কর্মকান্ডটা ক্যাম্পাসভিত্তিক হচ্ছে না। ছাত্রদের নিয়ে কর্মকান্ডটা তারা করতে পারছে না।

ছাত্রদলের নিয়মিত কাউন্সিল হওয়া দরকার বলে মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই নেতা বলেন, কিন্তু দেশে কাউন্সিল হওয়ার মতো পরিস্থিতি নাই। যার কারণে কাউন্সিলগুলো হতে বিলম্ব হয় এবং অনেকের ছাত্রত্ব থাকে না। কাউন্সিল নিয়মিত হলে ছাত্ররা তাদের অবদান অনুযায়ী পুরস্কৃত হতো।গয়েশ্বর চন্দ্র বলেন, আমরা তাদের কথাগুলো শুনে তা সমাধান করা চেষ্টা করবো। আমি বিশ্বাস করি, ওরা এটা বুঝবে। সুতরাং ওদের সঙ্গে আলাপ করে এর সমাধান করা হবে।

বিএনপি একটি বিশৃঙ্খল রাজনৈতিক দল- আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এই বক্তব্য প্রসঙ্গে গয়েশ্বর বলেন, তাকে বলবো নিজের চরকায় তেল দেন, নিজের চেহারাটা আয়নায় দেখুন। কারণ, আমার সংগঠনকে তিরষ্কার করে তার সংগঠনের দুরাবস্থা থেকে তার পরিত্রাণ পাওয়ার কোনও কারণ নেই। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নিজের ঘর গোছানোর কাজটা আগে করুক।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট করে বিএনপির কী লাভ হলো জানতে চাইলে বিএনপির এই নেতা বলেন, এখন কোনও দলের লাভ-ক্ষতির হিসাব করার সময় না। আমি যদি দলীয় লাভের হিসেব করি তাহলো তো ঐক্য হবে না।

বিএনপি কবে থেকে আন্দোলনের জন্য মাঠে নামবে জানতে চাইলে গয়েশ্বর বলেন, আমরা তো মাঠে আছি। কিন্তু আমাদের মাঠে নামাটা নামার মতো করে কেউ দেখে নাই। সেই দেখানোর বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে। আর বিএনপির জন্ম বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রশ্নে। যদি ঐক্য নাও হয় তাহলেও বিএনপি ঘরে বসে থাকবে না।

আন্দোলনের জন্য বিএনপি কতটা সংগঠিত-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কোনও সময় কোনও দল শতভাগ প্রস্তুতি নিয়ে এবং শতভাগ দল গুছিয়ে কেউ আন্দোলন করে না। কারণ, আন্দোলনের মাধ্যমেই দলটা গুছিয়ে আসে।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে কোনও আন্তর্জাতিক চাপ নেই- ক্ষমতাসীন দলের এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে গয়েশ্বর বলেন, আমরা দেশে বাস করি। সুতরাং দেশের সমস্যা দেশেই সমাধান করতে হবে। খালেদা জিয়াকে কেরানীগঞ্জ কারাগারে নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সরকারের যখন ইচ্ছে তখন যে কোনও জেলখানাতে নিতে পারে। এটা সরকারের ইচ্ছা। এখানে কোনও প্রতিক্রিয়া নাই।