কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দাঁতের চিকিৎসা শেষে তাকে ফের সাব জেল বা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালের কেবিন ব্লকের নির্ধারিত কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। দুপুরে তাকে চিকিৎসা দেওয়ার জন্য কেবিন ব্লক থেকে গাড়িতে করে ডেন্টাল অনুষদের কনজারভেটিভ ডেনটিস্ট্রি অ্যান্ড অ্যান্ডোডনটিকস বিভাগে নেওয়া হয়েছিল।

কড়া নিরাপত্তা বেষ্টনীতে খালেদার চিকিৎসার পর বুধবার (১২ জুন) দুপুরে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন বিএসএমএমইউ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. এ কে মাহবুবুল হক।

তিনি বলেন, তার (খালেদা জিয়া) একটি দাঁত ভেঙে ধারালো হয়ে গিয়েছিলো। এই ভাঙা দাঁতের জন্য আঘাত লেগে লেগে তার জিহ্বায় একটা ঘা এর মতো হয়েছিল। এসব কারণে কয়েকদিন ধরে তার মুখে ব্যথা অনুভব করছিলেন। সেটা ঠিক করতে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেন্টাল অনুষদের কনজারভেটিভ ডেনটিস্ট্রি অ্যান্ড অ্যান্ডোডনটিকস বিভাগে নেওয়া হয়। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে মেশিন দিয়ে দাঁতটি মসৃণ করে দেওয়া হয়েছে।

খালেদা জিয়া যেখানে ভর্তি আছেন সেই কেবিন ব্লকে দাঁত পরীক্ষার মেশিন আনা সম্ভব হয়নি বিধায় তাকে গাড়িতে করে ডেন্টাল অনুষদে নেওয়া হয় বলেও জানান পরিচালক ডা. এ কে মাহবুবুল হক।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বর্তমানে তার শারীরিক অবস্থা আগের তুলনায় অনেক ভালো। ডায়াবেটিস আগের চেয়ে নিয়ন্ত্রণে আছে, নিয়মিত ইনসুলিন দেওয়া হচ্ছে।

খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ, তার মুখে প্রচন্ড ব্যথা, হাত নাড়াতে পারেন না বলে তার ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের অভিযোগের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে বিএসএমএমইউ পরিচালক বলেন, তারা আমার সঙ্গে কোনোরূপ যোগযোগ না করে কিংবা বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষের কথা না বলেই এমন মনগড়া বক্তব্য দিচ্ছেন।সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বিএসএমএমইউ হাসপাতালের পরিচালক ব্রি. জে. ডা. এ কে মাহবুবুল হকএর আগে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে দুপুর ১টা ৫ মিনিটে খালেদা জিয়াকে কেবিন ব্লক থেকে গাড়িতে করে ডেন্টাল অনুষদের কনজারভেটিভ ডেনটিস্ট্রি অ্যান্ড অ্যান্ডোডনটিকস বিভাগে নেওয়া হয়। সেখানে তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও চিকিৎসা শেষে দুপুর ২টার দিকে একটি মাইক্রোবাসে করে পুনরায় কেবিনে নিয়ে যাওয়া হয়।

গত ২৫ মার্চ খালেদা জিয়াকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে চিকিৎসার জন্য বিএসএমএমইউতে ভর্তি করা হয়। তিনি আর্থ্রাইটিস ও ডায়াবেটিসের সমস্যাসহ বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন রোগে ভুগছেন। সেখানে ভর্তির পর গত ২৮ মার্চ খালেদা জিয়ার জন্য একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। ডা. জিলন মিঞার নেতৃত্বে বোর্ডে রয়েছেন ডা. সৈয়দ আতিকুল হক, ডা. তানজিমা পারভিন, ডা. বদরুন্নেসা আহমেদ ও ডা. চৌধুরী ইকবাল মাহামুদ। এছাড়া ডা. শামিম আহমেদ এবং ডা. মামুন মেডিকেল বোর্ডকে সহযোগিতা করছেন।

২০১৮ সালের ৮ ফেব্র“য়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদন্ড ও আর্থিক জরিমানা করা হয়। এ রায় ঘোষণার পরপরই খালেদা জিয়াকে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়। সেখানে থাকার সময় জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায়ও সাত বছরের কারাদন্ড দেওয়া হয় খালেদা জিয়াকে। বিএসএমএমইউতে স্থানান্তরের আগে বিএনপি চেয়ারপারসন কারাগারেই বন্দি ছিলেন।