সংবাদপত্র ও বার্তা সংস্থার কর্মীদের নতুন বেতন কাঠানোর ঘোষণা জুনের মধ্যে ঘোষণার প্রতিশ্র“তি ছিল এই সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির প্রধান ওবায়দুল কাদেরের। জুনের মাঝামাঝি এসে তিনি সুনির্দিষ্ট দিন-তারিখ না জানিয়ে বলেছেন, আর ঝুলিয়ে না রেখে অচিরেই নবম ওয়েজ বোর্ড ঘোষণা করা হবে। রোববার সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ে সংবাদপত্রের মালিক ও শ্রমিক সংগঠন, সাংবাদিক সংগঠন ছাড়াও সংশ্লিষ্টদের নিয়ে মন্ত্রিসভা কমিটির আড়াই ঘণ্টার বৈঠক করেন সড়ক পরিবহনমন্ত্রী কাদের।

এরপর তিনি সাংবাদিকদের বলেন, খোলামেলাভাবে সব স্টেকহোল্ডার কথা বলেছেন, সবার বক্তব্য আমরা শুনেছি। প্রত্যেকে নিজ নিজ অবস্থান দ্বিধাহীনভাবে তুলে ধরেছেন।সবার বক্তব্য শেষবারের মতো শুনেছি। বার বার এ ধরনের বৈঠক ডেকে সময়ক্ষেপণের প্রয়োজন নেই। বিষয়টি আর ঝুলিয়ে রাখাও বাস্তবসম্মত নয়, যুক্তিসংগত নয়।

এরপর আমরা নিজেরা, মন্ত্রিসভা কমিটি বসব। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করব, তার পরামর্শ নেব এবং এ ব্যাপারে একটা সিদ্ধান্তে আমরা পৌঁছাব এবং অচিরেই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করব।২০১৫ সালে সরকারি কর্মচারীদের নতুন বেতন কাঠামো ঘোষণার পর থেকেই নতুন বেতন কাঠামোর দাবি জানিয়ে আসছিল সাংবাদিকদের সংগঠনগুলো। এ দাবিতে তারা বিভিন্ন কর্মসূচিও পালন করেছেন।

দীর্ঘদিন ঝুলে থাকার পর আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মো. নিজামুল হককে প্রধান করে গত বছরের ২৯ জানুয়ারি ১৩ সদস্যের নবম ওয়েজবোর্ড গঠন করা হয়।এরপর গত ১১ সেপ্টেম্বর সংবাদপত্র ও বার্তা সংস্থার কর্মীদের জন্য মূল বেতনের ৪৫ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা ঘোষণা করে সরকার, যা ২০১৮ সালের ১ মার্চ থেকে কার্যকর করার কথা বলা হয়।

বিচারপতি নিজামুল হক গত ৪ নভেম্বর সচিবালয়ে তখনকার তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর কাছে প্রতিবেদন জমা দেন। তারপর থেকে তা পর্যালোচনা করছে মন্ত্রিসভা কমিটি।কাদের বলেন, বিষয়টি (নবম ওয়েজবোর্ড) অনেক দিন আলাপ-আলোচনার পর্যায়ে ছিল এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে গেছি। আশা করি, খুব বেশি সময় লাগবে না, আমরা খুব দ্রুত এর সমাধান দিতে পারব এবং সিদ্ধান্ত ঘোষণা করতে পারব।

নবম ওয়েজ বোর্ডে ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যমকে রাখা হয়নি বলেও জানান তিনি।তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ জানান, গণমাধ্যমকর্মী আইন ভেটিং পর্যায়ে আছে, এই আইন হলে সেটার আলোকে ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার জন্য আলাদা ব্যবস্থা করা হবে।স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ হুমায়ুন, সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, তথ্য প্রতিমন্ত্রী মো. মুরাদ হাসান সভায় উপস্থিত ছিলেন।

নিউজপেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (নোয়াব) এর সভাপতি, প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান, সংগঠনটির সহসভাপতি ও সমকালের প্রকাশক এ কে আজাদ সভায় অংশ নেন।

নোয়াব সম্প্রতি এক বিবৃতিতে দাবি করে, নবম ওয়েজ বোর্ড যে বেতন কাঠামোর সুপারিশ করেছে, তা অবাস্তব। তা প্রত্যাখ্যান করে পাল্টা বিবৃতিও দিয়েছে সাংবাদিকদের সংগঠনগুলো।বৈঠকে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মোল্লা জালাল ও মহাসচিব শাবান মাহমুদ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আবু জাফর সূর্য ও সাধারণ সম্পাদক সোহেল হায়দার চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও বাংলাদেশ সংবাদপত্র পরিষদের সভাপতি, বাংলাদেশ সংবাদপত্র কর্মচারী ফেডারেশনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং বাংলাদেশ ফেডারেল ইউনিয়ন অব নিউজপেপার্স প্রেস ওয়ার্কার্সের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বৈঠকে অংশ নেন।তথ্য সচিব আবদুল মালেক ছাড়াও তথ্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।