বিদেশ সফরে থাকা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে বিমানের বোয়িং উড়োজাহাজ নিয়ে যাওয়ার সময় পাইলট ফজল মাহমুদ ভুল করেই পাসপোর্ট ঢাকার অফিসে রেখে গিয়েছিলেন বলে মনে করছে একটি তদন্ত কমিটি।

আলোচিত ওই ঘটনায় গঠিত মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের তদন্ত কমিটির এই পর্যবেক্ষণ রেখেই তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত সচিব মোসাম্মাৎ নাসিমা বেগম সোমবার বলেন, পাইলট ভুলে পাসপোর্ট রেখে গিয়েছিলেন। তিনি পাসপোর্ট রেডি করে ভুলে অফিসে রেখে গেছেন।

ওই ঘটনার জন্য পাইলট ফজলের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থার সুপারিশ করা হয়েছে কি না- সে বিষয়ে কিছু জানাননি নাসিমা।তবে তদন্ত প্রতিবেদনে কয়েকটি সুপারিশ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, রোববার তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেলেও এখনও পুরোটা পড়ে দেখেননি। তবে প্রতিবেদনে ৫-৭টি সুপারিশ আছে বলে তিনি দেখেছেন।কী ধরনের সুপারিশ করা হয়েছে জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, যাত্রী বা ক্রু ইমিগ্রেশন পার হওয়ার সময় অবশ্যই যেন নিয়ম মানে- এ ধরনের জেনেরিক কিছু সুপারিশ করা হয়েছে।

বিদেশ থেকে ফেরার পর গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, হয়ত পাসপোর্ট ভুলে (ফেলে) যেতে পারে। কিন্তু এখানে ইমিগ্রেশনের দায়িত্বে যারা ছিল, তাদের তো এই নজরটা থাকতে হবে। আমি সাথে সাথে বলে দিয়েছি, যারা ইমিগ্রেশনে ছিল, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে।ফিনল্যান্ড থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে গত ৬ জুন বিমানের একটি বোয়িং ৭৮৭ উড়োজাহাজ নিয়ে ঢাকা থেকে রওনা হন পাইলট ফজল মাহমুদ।ওই ফ্লাইটের যাত্রাবিরতি ছিল দোহার হাম্মাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। সঙ্গে পাসপোর্ট না থাকায় সেখানে পৌঁছে বিপাকে পড়েন তিনি।পরে প্রধানমন্ত্রীকে আনতে আরেকজন পাইলট রওনা হন। আর অন্য একটি ফ্লাইটে ফজল মাহমুদের পাসপোর্ট পাঠানো হয়।

ওই ঘটনায় কর্তব্যে অবহেলার জন্য ইমিগ্রেশনে কর্মরত পুলিশের এসআই কামরুজ্জামানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। ঘটনা তদন্তে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করে।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কমিটিতে প্রথমে চারজন সমস্য থাকলেও পরে তা বাড়িয়ে করা হয় ছয়জন। তাদেরকে তিন কার্যদিবসে প্রতিবেদন দিতে বলা হলেও পরে কমিটি সময় বাড়িয়ে নেয়।স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের চার সদস্যের তদন্ত কমিটিও তাদের সময় বাড়িয়ে নিয়েছে।অতিরিক্ত সচিব (নিরাপত্তা ও বহিরাগমন অনুবিভাগ) মোহাম্মদ আজহারুল হকের নেতৃত্বে ওই কমিটি তাদের প্রতিবেদন চূড়ান্ত করতে কাজ করার কথা জানিয়েছে।