প্রি পেইড মিটার নামক যন্ত্রদানব খুলনার গ্রাহকদের ওপর চাপিয়ে দিয়ে বিপুল অংকের অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে ওয়েষ্ট জোন পাওয়ার ডিষ্ট্রিবিউশন কোম্পানীর বিরুদ্ধে (ওজোপাডিকো)।

সোমবার (১৭ জুন) দুপুরে মহানগরীর পিকচার প্যালেস মোড়ে আয়োজিত এক মানববন্ধনে এ অভিযোগ তোলেন বক্তারা। প্রি পেইড মিটারে বিদ্যমান দুর্নীতি প্রতিরোধে সংগ্রাম কমিটি এ মানববন্ধনের আয়োজন করে।

বক্তার বলেন,প্রি পেইড মিটারে কি পরিমাণ জালিয়াতি হচ্ছে তার প্রমাণ মিলবে শুধুমাত্র মিটার ভাড়া আদায় সংক্রান্ত বিষয়টিকে ঘিরেই। কেননা কতদিন পর্যন্ত মিটার ভাড়া নেয়া হবে তা নির্দিষ্ট করে কোথাও বলা নেই। তাছাড়া পত্র-পত্রিকায় লেখালেখির পর গত ৩০ এপ্রিল থেকে ১% রিবেট দেয়া হলেও আগের দুইবছরের আদায়কৃত দুশো কোটি টাকা বিদ্যুৎ বিলের দুইকোটি টাকার রিবেটের কি হবে সেটিও স্পষ্ট করে বলা হচ্ছে না। এতে খুলনার প্রি পেইড মিটার গ্রাহকরা শংকিত।

তারা আরও বলেন, পুরনো মিটারটি খুলে যখন নতুন প্রি- পেইড মিটার লাগানো হয়েছিল তখন বলেছিল মিটারের জন্য কোন মূল্য নেয়া হবে না।এখন দেখছি ফ্রি-মিটার ক্রয় বাবত প্রতি মাসে টাকা কেটে নিচ্ছে। প্রি পেইড মিটার ক্রয়ের সাথেও যেমন রয়েছে দুর্নীতি তেমনি খুলনায় স্থাপিত প্রি পেইড মিটার কোম্পানীর বিরুদ্ধেও রয়েছে নানা অনিয়মের অভিযোগ। পদ্মার এপারের একুশ জেলায় বিদ্যুৎ বিতরণের সাথে জড়িত সরকারি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান ওজোপাডিকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মো: শফিক উদ্দিনকে একজন দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা।এ পর্যন্ত সংঘটিত ওজোপাডিকোর সকল প্রকার দুর্নীতি-অনিয়মের তদন্ত ও দায়ীদের শাস্তির দাবি করেছেন বক্তারা।

মানববন্ধনে আসা গ্রাহকরা ক্ষোভের সাথে বলেন, ডিজিটাল এ মিটারে ব্যাংকে গিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে রিচার্জ করতে হচ্ছে। ১ হাজার টাকা রিচার্জ করলে ৮৫২.৩৮ টাকার বিদ্যুৎ পাওয়া যায়। বাকি টাকা থেকে মিটার ভাড়া হিসেবে ৪০ টাকা, ডিমান্ড চার্জ ৬০ টাকাসহ ৫ শতাংশ ভ্যাট হিসেবে ৪৭.৬২ টাকা কেটে নেওয়া হয়। ডিজিটাল মিটারে অতিরিক্ত বিল এলে বিদ্যুৎ অফিসে গিয়ে সমাধান পাওয়া যেত। কিন্তু এখন সমস্যা আরও জটিল। আতঙ্কে থাকতে হয়। আগে প্রতি মাসে ৭শত টাকা বিল দিতে হত। এখন প্রি পেমেন্ট পদ্ধতিতে একই পরিমাণ বিদ্যুৎ খরচ করে মাসে ১ হাজার ২শত টাকা থেকে ১ হাজার ৩শত টাকা বিল দিতে হচ্ছে।

সংগ্রাম কমিটির আহবায়ক ও খুলনা বিএমএর সভাপতি ডা: শেখ বাহারুল আলমের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব মহেন্দ্রনাথ সেনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন, যুগ্ম আহবায়ক মুক্তিযোদ্ধা মোড়ল নূর মোহাম্মদ ও শরীফ শফিকুল হামিদ চন্দন, যুগ্ম সদস্য সচিব শাহ মামুনুর রহমান তুহিন, সাংস্কৃতিক কর্মী শাহীন জামাল পন, খুলনা প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মামুন রেজা, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মালিক সরোয়ার হোসেন, বাসদ নেতা জনার্দ্দন দত্ত নান্টু, নারীনেত্রী শামীমা সুলতানা শীলু, মানবাধিকার কর্মী অ্যাডভোকেট মোমিনুল ইসলাম, সিরাজুদ্দিন সেন্টু প্রমুখ।