প্রিপেইড মিটার স্থাপন বন্ধের দাবীতে গাজীপুরের শ্রীপুরে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহকেরা। বুধবার শ্রীপুর উপজেলার মাওনা চৌরাস্তায় ময়মনসিংহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর মাওনা জোনাল অফিসের সামনে এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।

বুধবার বেলা ১১টার দিকে ময়মনসিংহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর মাওনা জোনাল অফিসের সামনে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। পরে তারা একটি প্রতিবাদ মিছিল নিয়ে মহাসড়ক প্রদক্ষিণ করে। এসময় জামাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, শ্রীপুর পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম মন্ডল বুলবুল, জেলা পরিষদ সদস্য নুরুল ইসলাম শিমুল, মাওনা চৌরাস্তা ব্যবসায়ী মালিক কল্যাণ সমিতির সভাপতি মোশারফ সরকার, জেলা মহিলা লীগ নেত্রী আঞ্জুমান আরা শিউলী, তেলিহাটি ইউনিয়নের যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক রানা, বাংলাদেশ মানবাধিকার কাউন্সিলের শ্রীপুর উপজেলার সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার পারভেজ রোমান, শেখ জসিম উদ্দিন ও লিটন ফকির প্রমুখ।

গত কয়েকমাস ধরে মাওনা জোনাল অফিসের আওতাধীন এলাকায় গ্রাহকদের বিদ্যুতের পুরাতন মিটার পরিবর্তন করে প্রিপেইড মিটার স্থাপনের কাজ শুরু করেছে ময়মনসিংহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২। নতুন স্থাপিত পি-পেইড মিটার গুলোতে নানা সমস্যা দেখা দিলে গ্রাহকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। ক্ষুব্ধ গ্রাহকরা বুধবার বেলা ১১টার দিকে মাওনা চৌরাস্তা এলাকাস্থিত ময়মনসিংহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর মাওনা জোনাল অফিসের সামনে উপস্থিত হয়ে এ কর্মসূচি পালন করে ক্ষুব্ধ গাহক ও স্থানীয়রা।

মাওনা চৌরাস্তা ব্যবসায়ী মালিক কল্যাণ সমিতির সভাপতি মোশারফ সরকার বলেন, আমাদের মধ্যে এখনও অনেক লোক গরীব ও অসহায়। হাজার হাজার গ্রাহক আছেন যারা কারখানা শ্রমিক। তারা এক মাস কাজ করে পরের মাসের ১০তারিখের পর বেতন পান। আগে মাসের বেতন পেয়ে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করা হতো। প্রিপেইড মিটার স্থাপনের পর এখন অগ্রীম টাকা জমা দিলেই বিদ্যুৎ মিলছে। ক্ষুদ্র ও মাঝারী গ্রাহকদের অগ্রিম টাকা জমা দিয়ে অনেকের পক্ষে বিদ্যুৎ ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছে না।

গাজীপুর জেলা পরিষদের সদস্য নুরুল ইসলাম শিমুল অভিযোগ করেন, বর্তমান সরকারের কল্যাণেই সবার ঘর বিদ্যুতের আলোয় এখন আলোকিত। কিন্তু গ্রাহকদের মধ্যে সচেতনতা তৈরী না করেই গ্রাহকদের প্রিপ্রেইড মিটার দেয়া হচ্ছে, কিন্তু প্রিপেইড মিটারের কোন ধরনের সুফল এখনও আমরা খুঁজে পাইনি। নতুন এই ঝামেলা থেকে আমরা মুক্তি চাই, দ্রুত প্রিপেইড মিটার প্রতিস্থাপন বন্ধ করতে হবে না হলে আমরা কঠোর কর্মসূচীতে নামব।

শ্রীপুর টেপিরবাড়ী গ্রামের শাহনাজ পারভীন অভিযোগ করেন, কিছুদিন আগে আমার বাড়িতে প্রিপেইড মিটার প্রতিস্থাপন করে দেয় পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ। আমাদের এলাকায় অধিকাংশ লোকজনেই বাড়ি ভাড়ার উপর নির্ভরশীল, ভাড়া পাওয়া যায় মাসের নির্দ্দিষ্ট সময়ে। কিন্তু প্রিপেইড মিটার স্থাপনের পর নতুন সমস্যায় পড়েছি। এখন যে কোন সময়ই মিটারের টাকা শেষ হয়ে যায়, রিচার্জের তেমন কোন ব্যবস্থা নেই। এছাড়াও কোন খাতে কত টাকা কেটে নেয়া হচ্ছে তা জানারও ব্যবস্থা নেই।

ময়মনসিংহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ মাওনা জোনাল অফিসের উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) কামাল পাশা জানান, প্রিপেইড মিটার স্থাপন সরকারের সিদ্ধান্ত। আমরা এমন সিদ্ধান্তের আলোকেই গ্রাহকদের পুরাতন মিটারের স্থলে প্রিপেইড মিটার প্রতিস্থাপন করছি। এ নিয়ে কোন ধরনের বিভ্রান্তির অবকাশ নেই।