যেখানে সেখানে গণপরিবহন থামিয়ে যাত্রী ওঠা-নামা করা যাবে না বলে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ডোপ টেস্ট করে ড্রাইভারের মাদক নির্ণয় এবং অ্যাম্বুলেন্স ও ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ব্যতীত অন্য কোনও পরিবহন বা গণপরিবহন স্কুল-কলেজ ও হাসপাতালের সামনে হর্ন বাজাতে পারবে না বলেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সড়ক দুর্ঘটনায় তিতুমীর কলেজের ছাত্র রাজীবের হাত হারানো ও পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর ঘটনায় তার পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া রায় ঘোষণার সময় বৃহস্পতিবার (২০ জুন) বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এসব নির্দেশনা দেন।

সড়ক দুর্ঘটনা এড়াতে রুটভিত্তিক ভিন্ন ভিন্ন রঙের বাস চলাচল নিশ্চিতের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। রাজীবের পরিবারের পক্ষে আদালতে ছিলেন রিট আবেদনকারী আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস। বিআরটিসির পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ মুনিরুজ্জামান। রাষ্ট্রপক্ষে অংশ নেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু।

পরে রুহুল কুদ্দুস কাজল জানান, আদালত ক্ষতিপূরণের রায় দেওয়ার সময় চারটি নির্দেশনা দিয়েছেন। আগামী ছয় মাসের মধ্যে এসব নির্দেশনা কার্যকর করতে বলা হয়েছে। নির্দেশনা চারটি হলো এক. যারা ড্রাইভিং লাইসেন্স নিতে আসবেন, তারা ঠিকভাবে দেখেন কি-না ও গাড়ি চালাতে সক্ষম কি-না তা নিশ্চিত হতে তাদের ডোপ টেস্ট ছাড়াও চোখের পরীক্ষা করে দেখতে হবে। দুই. গুরুত্বপূর্ণ বড় বড় স্টপেজগুলোতে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা স্থাপন করতে হবে, যেন কেউ বেপরোয়া গাড়ি চালাতে না পারেন। তিন.বাস রুট ফ্রাঞ্চাইজ করতে হবে;এর ফলে ভিন্ন ভিন্ন রঙের মাধ্যমে ভিন্ন ভিন্ন রুটে বাস চলাচল নিশ্চিত করতে হবে। চার. ২০১৮ সালে সড়ক আইন নামে যে আইন হয়েছে, সেটি অবিলম্বে বাস্তাবায়ন ও এর অধীনে বিধি প্রণয়ন করতে হবে।

প্রসঙ্গত, সড়ক দুর্ঘটনায় রাজীবের হাত হারানো ও পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর ঘটনায় তার ছোট দুই ভাই মেহেদী হাসান হৃদয় ও আব্দুল্লাহ বাপ্পিকে ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে আজ বৃহস্পতিবার রায় ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। আগামী দুই মাসের মধ্যে অভিযুক্ত বিআরটিসি পরিবহন কর্তৃপক্ষ ও স্বজন পরিবহনকে ২৫ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিতে বলা হয়েছে।