দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ থাকা জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ এবার নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। তাকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের (সিএমএইচ) ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

জাতীয় পার্টির একাধিক নেতা জানিয়েছেন,এরশাদ এমনিতেই শারীরিকভাবে অসুস্থ।এর মধ্যে কয়েকদিন ধরে তার জ্বর ছিল। তা নিউমোনিয়ায় রূপ নেওয়ায় বুধবার (২৬ জুন) সকাল ৮টার দিকে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এরশাদের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানিয়েছে, নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভীষণ দুর্বল বোধ করছিলেন এরশাদ। তার শরীর কাঁপছিল। সে কারণেই তিনি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাকে হাসপাতালের সিসিইউতে রাখা হয়েছে।

দলীয় নেতাকর্মীদের ভাষ্য, রক্তে হিমোগ্লোবিন ও লিভারের সমস্যায় দীর্ঘদিন ধরেই চিকিৎসা নিচ্ছেন এরশাদ। প্রতিদিনই তিনি সিএমএইচে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান। কোনো কোনো দিন একাধিকবারও গিয়ে থাকেন। স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়ে বাসায় চলে আসেন তিনি। তবে বুধবার তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটায় সকালে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে। এখনো সেখানেই আছেন তিনি।

এদিকে, বুধবার মতিঝিলের এজিবি কলোনির মিলনায়তনে জাতীয় পার্টির সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের বিভাগীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।ওই অনুষ্ঠানে এরশাদের ছোট ভাই ও দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জি এম)কাদের দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন,সকালে এরশাদকে সিএমএইচের ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে নেওয়া হয়েছে। তার শারীরিক অবস্থা ভালো না। তিনি এরশাদের জন্য সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন।

গত বছরের শেষের দিকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন এরশাদ। অসুস্থতার কারণে জাতীয় নির্বাচনের প্রচারণাতেও অংশ নিতে পারেননি তিনি। ওই অবস্থাতেই ১২ ডিসেম্বর উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে যান এরশাদ। পরে নির্বাচনে জয়লাভের পর দেশে ফিরে শপথ নেন তিনি। পরে ২০ জানুয়ারি ফের চিকিৎসা নিতে সিঙ্গাপুর যান। দেশে ফেরেন ৪ ফেব্রুয়ারি। এরপর থেকে সিএমএইচেই চিকিৎসা নিচ্ছেন এরশাদ।

এদিকে, এরশাদ পুরোপুরি সুস্থ না হলেও বেশকিছু সিদ্ধান্ত নিয়ে সাড়া ফেলেছেন। অসুস্থ অবস্থাতেই নিজের স্থাবর-অস্থাবর সব সম্পত্তি ট্রাস্টে দান করেন তিনি।

এদিকে, গত মার্চে ছোট ভাই জি এম কাদেরকে জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান পদ এবং দলের সাংগঠনিক দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেন এরশাদ। পরে সংসদে বিরোধী দলীয় উপনেতার পদ থেকেও তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয় তাকে। সপ্তাহ দুয়েক পরেই অবশ্য জি এম কাদেরকে কো-চেয়ারম্যান পদে পুনর্বহাল করেন এরশাদ।

সর্বশেষ গত ৪ মে নিজ বাসভবন প্রেসিডেন্ট পার্কে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এরশাদ ঘোষণা দেন, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত জি এম কাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।