চীন সরকারের আমন্ত্রণে আগামী ১ থেকে ৫ জুলাই চীন সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই সফরে একাধিক উন্নয়ন প্রকল্প উন্নয়নে চীনের সঙ্গে আটটি বিষয়ে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি ও সমাঝোতা স্বারক সই হবে। এসব চুক্তি ও সমাঝোতা স্বারকের মধ্যে ঋণ চুক্তিও রয়েছে। তবে কত টাকার ঋণ চুক্তি হবে, তা এখনো ঠিক হয়নি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন শুক্রবার (২৮ জুন) এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান। প্রধানমন্ত্রীর চীন সফর উপলক্ষে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীন সরকারের আমন্ত্রণে আগামী ১ থেকে ৫ জুলাই চীন সফর করবেন। সফরে ১ থেকে ৩ জুলাই প্রধানমন্ত্রী চীনের লিয়াওনিং প্রদেশের দালিয়ানে অনুষ্ঠেয় বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের গ্রীষ্মকালীন সভায় অংশ নেবেন, তাতে বক্তব্যও দেবেন।

আগামী ৩ জুলাই প্রধানমন্ত্রী চীনের একটি বিশেষ বিমানে দালিয়ান থেকে বেইজিং যাবেন। ওইদিন প্রধানমন্ত্রী প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য আয়োজিত একটি মতবিনিময় সভায় অংশ নেবেন।

আগামী ৪ জুলাই প্রধানমন্ত্রীকে চীনের গ্রেট হলে অভ্যর্থনা দেওয়া হবে। ওইদিন চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিকোয়াংয়ের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন। যেখানে দ্বিপক্ষিক সম্পর্কের বিভিন্ন বিষয় আলোচনা করা হবে। পাশাপাশি দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে চীনের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ করবেন।পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আব্দুল মোমেন বলেন, দুই প্রধানমন্ত্রীর দ্বিপাক্ষিক বৈঠক শেষে বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে আটটি বিষয়ে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি ও সমাঝোতা স্বারক সই করা হবে। এগুলো হচ্ছে এক্সপানসন অ্যান্ড স্ট্রেনদিং অব পাওয়ার সিস্টেম নেটওয়ার্ক আন্ডার ডিপিডিসি এরিয়া প্রজেক্ট শীর্ষক প্রকল্পে সরকারি কনসেশনাল ঋণচুক্তি, এক্সপানসন অ্যান্ড স্ট্রেনদিং অব পাওয়ার সিস্টেম নেটওয়ার্ক আন্ডার ডিপিডিসি এরিয়া প্রজেক্ট শীর্ষক প্রকল্পে প্রিফারেনশিয়াল বায়ারস ক্রেডিট ঋণ চুক্তি, পাওয়ার গ্রিড নেটওয়ার্ক স্ট্রেনদেনিং প্রজেক্ট আন্ডার পিজিসিবি শীর্ষক প্রজেক্টে ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তি, দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক ও কারিগরি সহযোগিতা বিষয়ে চুক্তি, বিনিয়োগ সংক্রান্ত সহযোগিতামূলক ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠনে সমাঝোতা স্বারক সই, ইয়ালু ঝ্যাংবু-ব্রহ্মপুত্র নদীর জলবিষয়ক তথ্য বিনিময়ে সমাঝোতা স্বারক সই এবং সাংস্কৃতিক ও পর্যটন সংক্রান্ত বিষয়ে সমাঝোতা স্বারক স্বাক্ষর।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান,৪ জুলাই দ্বিপাক্ষিক বৈঠক শেষে চীনের প্রধানমন্ত্রীর আয়োজিত অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর চীনের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের সঙ্গে গোলটেবিল বৈঠবে অংশ নেবেন প্রধানমন্ত্রী।

আগামী ৫ জুলাই প্রধানমন্ত্রী চীনের রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেসের চেয়ারম্যান লি ঝ্যাংসুর সঙ্গে বৈঠক করবেন। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীনের রাষ্ট্রপতি জি জিনপিংয়ের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন। এরপর দুই দেশের পক্ষ থেকে একটি যৌথ ইশতেহার প্রকাশ করা হবে।